শনিবার সকালে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা নিমেষে স্তব্ধ করে দিল পশ্চিম মেদিনীপুরের রানিসরাই অঞ্চল। বেপরোয়া গতি এবং ডিভাইডার টপকানো গাড়ির ফলেই এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা বলে অনুমান।
১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে মৃত্যু-ফাঁদ, মুখোমুখি ধাক্কা ট্রাক-স্করপিওর
শনিবার সকালেই ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার রানিসরাই এলাকায় ঘটে যায় ভয়ানক দুর্ঘটনা। খড়্গপুর-বালেশ্বর সড়কে স্করপিও ও টমেটো বোঝাই একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্করপিও-তে থাকা চার যাত্রীর।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্য লেনে স্করপিও, শেষরক্ষা হয়নি চারজনের
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অতিরিক্ত গতিতে থাকা স্করপিওটি আচমকাই ডিভাইডার টপকে বিপরীত লেনে ঢুকে পড়ে। সেই সময়েই সামনে থেকে আসছিল ট্রাকটি। মুহূর্তে ঘটে যায় মুখোমুখি ধাক্কা। দুমড়ে-মুচড়ে যায় স্করপিও, ট্রাকের সামনের অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মৃতের তালিকায় আসানসোলের অতনু গুহ, বাকিদের পরিচয় মিলছে ধাপে ধাপে
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে একজনের নাম অতনু গুহ, যাঁর বাড়ি আসানসোলে। বাকি তিন যাত্রীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে, পরে জানা গেছে চার জনই পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বাসিন্দা।
ইলেকট্রিক কাটার-ক্রেন দিয়ে উদ্ধার অভিযান, শেষমেশ এল মৃত্যুসংবাদ
দুর্ঘটনার পরে স্করপিও থেকে আরোহীদের বের করতে গিয়ে বেগ পেতে হয় পুলিশ ও স্থানীয়দের। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ইলেকট্রিক কাটার এবং ক্রেন ব্যবহার করে উদ্ধার করা হয় যাত্রীদের। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা চার জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বেঁচে গেলেন ট্রাকচালক-খালাসি, ধৃত চালক, আটক ট্রাক
যদিও ট্রাকের চালক ও খালাসির কোনও বড় ক্ষতি হয়নি বলে জানায় পুলিশ। ইতিমধ্যেই পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করেছে এবং চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে চালকের লাইসেন্স ও ট্রাকের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাগজপত্র।
অতিরিক্ত গতি নয় কি মৃত্যুর কারণ? উঠছে প্রশ্ন, নড়েচড়ে বসল পুলিশ প্রশাসন
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত গতি এবং অসাবধানতার কারণেই এই দুর্ঘটনা। তবে, দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান খতিয়ে দেখে সম্পূর্ণ তদন্ত শুরু হয়েছে। জাতীয় সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
শোকস্তব্ধ আসানসোল, চার প্রাণের নিঃশব্দ বিদায়
এই দুর্ঘটনায় আসানসোলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একসঙ্গে চারজনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার ও এলাকাবাসী। শহরজুড়ে চলছে শোকপ্রকাশ ও প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের দাবি।