বিহারের নির্বাচনী ডামাডোল তুঙ্গে, আর এরই মধ্যে আরজেডির এমএলসি উর্মila ঠাকুর-এর একটি বিতর্কিত মন্তব্য রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে। মুজাফ্ফরপুরের गायঘাটে এক অনুষ্ঠানে তিনি আরজেডি সুপ্রিমো এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবকে "কলিযুগের জীবিত ভগবান" আখ্যা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি মঞ্চ থেকে লালু যাদবের তুলনা করেছেন ভগবান শিব, শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ এবং ভীষ্ম পিতামহের মতো মহাপুরুষদের সঙ্গে।
লালু যাদবের স্থান কেউ নিতে পারে না
বিআর আম্বেদকরের মূর্তি উন্মোচনের সময় উর্মila ঠাকুর বলেন, এক ভগবান শিব ছিলেন, আর দ্বিতীয়জন কলিযুগে জীবিত ভগবান বাবু লালু প্রসাদ যাদব। তিনি আরও বলেন, যেমন ভগবান রাম, কৃষ্ণ বা ভীষ্ম পিতার স্থান কেউ নিতে পারে না, তেমনই রাজনীতিতে লালু যাদবের স্থানও কেউ নিতে পারবে না।
এমএলসি ঠাকুর এখানেই থামেননি। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, অনেক পুরুষ জন্ম নিয়েছেন, কিন্তু মর্য্যাদাপুুরুষোত্তম রামের স্থান কেউ পাননি। অনেক এমএলএ, এমপি, মন্ত্রী, রাজ্যপাল এবং প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, কিন্তু বাবু লালু প্রসাদের মতো কেউ হননি এবং ভবিষ্যতেও হবেন না।
এই সময় তিনি কংগ্রেসের প্রতিও পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করে বলেন যে, ১৯৯০ সালের আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা আর পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।
বিরোধীপক্ষের নিশানায়
উর্মila ঠাকুরের এই মন্তব্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এবং এর উপর তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও আসছে। যেখানে আরজেডি সমর্থকরা এটিকে দলের নেতার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রতীক হিসেবে দেখছেন, সেখানে বিরোধী দলগুলি এটিকে 'চাটুকারিতার চরম রূপ' এবং গণতন্ত্রের মর্যাদার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।
বিজেপি এবং জেডিইউ এই মন্তব্য নিয়ে আরজেডি-কে তীব্রভাবে আক্রমণ করেছে। বিরোধীদের বক্তব্য, আরজেডি এখন তাদের নেতাদের ভগবান বানিয়ে নির্বাচন লড়তে চাইছে।
বিহার নির্বাচন ২০২৫-এর রাজনৈতিক চাল সাজানো শুরু
বিতর্কের মধ্যে বিহারে ২০২৫ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি জোর কদমে শুরু হয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দল ময়দানে নামতে প্রস্তুত এবং কৌশল তৈরিতে ব্যস্ত। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে সূত্র অনুসারে সম্ভবত ভোটগ্রহণ অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
গত বিধানসভা নির্বাচন ২০২০-তে এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং জেডিইউ নেতা নীতিশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী হন। এবারও রাজনৈতিক সমীকরণ বদলের সম্ভাবনা রয়েছে এবং সকল দল তাদের নিজস্ব স্তরে নির্বাচনী কৌশল তৈরি করতে লেগেছে।
নজর জনতার মনোভাব এবং লালু যাদবের ভূমিকার ওপর
নির্বাচনী পরিবেশে লালু যাদবের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, এমএলসি উর্মila ঠাকুরের এই মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক শ্রদ্ধা নয়, বরং নির্বাচনী কৌশলেরও একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, জনতা এই মন্তব্যকে কীভাবে দেখে এবং আরজেডি এতে লাভবান হয় নাকি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।