ভারতের কোটি কোটি WhatsApp ব্যবহারকারী এখন সাইবার অপরাধীদের প্রধান লক্ষ্য। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপে প্রতারণার ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতারকরা প্রতিনিয়ত নতুন কৌশল ও পন্থা ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলছে।
সতর্কতাই সেরা প্রতিরক্ষা
যদিও ব্যবহারকারীরা সতর্ক থাকলেও স্ক্যামাররা তাদের নিজস্ব ‘স্মার্ট ট্রিক’ দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। তাই আমাদের জানা দরকার সেই সব কৌশল যা স্ক্যামাররা ব্যবহার করে। সচেতন হলে ব্যবহারকারী সহজেই ফাঁদ এড়াতে পারে এবং আর্থিক ক্ষতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।
স্ক্যামাররা কারা ও কীভাবে প্রতারণা করে?
স্ক্যামাররা WhatsApp-এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলে। তারা টাকা হাতিয়ে নেয় অথবা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে। ভুয়ো মেসেজ, কল বা লিঙ্ক পাঠিয়ে ব্যবহারকারীদের প্রতারণা করা হয়। মূলত ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া এবং টাকা আদায়ের মাধ্যমে তারা লাভ করে।
WhatsApp-এ স্ক্যামের সাধারণ ধরন
স্ক্যাম ক্রমবর্ধমান এবং প্রতিনিয়ত নতুন আকার নিচ্ছে। কিছু সাধারণ স্ক্যামের মধ্যে রয়েছে:
লটারি বা প্রাইজ স্ক্যাম – ব্যবহারকারীকে বলা হয় লটারি বা উপহার জিতেছেন। এরপর ব্যক্তিগত তথ্য ও টাকা চাওয়া হয়।
ভুয়ো চাকরির অফার – ভুয়ো সংস্থার নামে চাকরির প্রলোভন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন বা ট্রেনিং ফি দাবী করা হয়।
ওটিপি স্ক্যাম – ব্যবহারকারীর থেকে OTP চেয়ে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা।
ইমপার্সোনেশন স্ক্যাম – পরিচিত বন্ধু বা আত্মীয়ের নাম ও ছবি ব্যবহার করে অর্থ বা টাকা দাবি করার প্রতারণা।
ভুয়ো লিঙ্ক বা ফিশিং স্ক্যাম – ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করলেই তথ্য চুরি হয়।
ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল/রোম্যান্স স্ক্যাম – প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর আবেগের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতানো।
স্ক্যাম এড়াতে করণীয় পদক্ষেপ
সাইবার বিশেষজ্ঞরা কিছু সতর্কতা অনুসরণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন:
কারও সঙ্গে OTP কখনও শেয়ার করবেন না।
অজানা নম্বর থেকে আসা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না, হোক তা অফার বা উপহারের প্রলোভনই কেন।
WhatsApp-এ টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করুন।
কাউকে টাকা পাঠানোর আগে কল করে কনফার্ম করুন।
ভুয়ো চাকরি বা লটারির অফার এড়িয়ে চলুন।
অজানা গ্রুপে জয়েন করবেন না; WhatsApp সতর্কতা পাঠায়।
সন্দেহজনক মেসেজ পেলে রিপোর্ট ও ব্লক ফিচার ব্যবহার করুন।
স্ক্যাম হলে করণীয়
যদি ভুলবশত তথ্য বা টাকা শেয়ার হয়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তিকে ব্লক বা রিপোর্ট করুন। ফোনে OTP আসলে অ্যাকাউন্ট রিসেট করে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করুন। ভুলবশত টাকা পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্ক ও সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইনে অভিযোগ দায়ের করুন। এছাড়া ফোনে অ্যান্টিভাইরাস বা সিকিউরিটি অ্যাপ ইনস্টল রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
সংক্ষেপে সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন
WhatsApp ব্যবহারকারীরা সচেতন থাকলে সাইবার অপরাধীদের ফাঁদ এড়ানো সম্ভব। বন্ধুত্ব বা প্রেমের নামে স্ক্যামের ফাঁদে পড়ে অর্থ ও তথ্য হারানোর ঝুঁকি কমানো যায়। তাই সতর্কতা, সচেতন ব্যবহার ও নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণই এখন সবার জন্য অপরিহার্য।