বিজয়া সম্মিলনী কালীঘাটে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বিনিময়

বিজয়া সম্মিলনী কালীঘাটে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বিনিময়

কলকাতা: দুর্গাপুজোর রেশ মিটতে না মিটতেই কালীঘাটে তৃণমূলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো বিজয়া সম্মিলনী। দলের সকল জনপ্রতিনিধি, সাংগঠনিক পদাধিকারী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র উৎসবের আনন্দ উদযাপন নয়, বরং দলীয় ঐক্য ও ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ভাবনারও জায়গা সৃষ্টি করেছে।

মমতার বক্তব্য ও শুভেচ্ছা বিনিময়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে বলেন, “যদিও দুর্গাপুজো শেষ হয়েছে, কিন্তু এর আবেশ রয়ে গিয়েছে আমাদের এই মিলিত হওয়ার মধ্যে। এটাই আমাদের ঐক্য, বন্ধন এবং আনন্দকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস। আমরা এই সময় একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি, খোঁজখবর নিয়েছি। আপনাদের সমর্থন আমাদের চলার পথে পাথেয়। মা দুর্গার আশীর্বাদ আমাদের সকলের পথে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠুক।মুখ্যমন্ত্রী নিজের বাড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর একটি ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন, যেখানে উৎসবের আনন্দ ও দলের ঐক্যের বার্তা দৃশ্যমান। তিনি মিষ্টি বিতরণসহ উপস্থিত নেতা-কর্মীদের হাতে উপহার তুলে দেন।

অভিষেকের শুভেচ্ছা ও আড্ডা

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে নিজের অফিসে যোগ দিয়ে সাংসদ, বিধায়ক ও একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে আড্ডা ও গল্প করেন। তিনি পুজোর ভীড় থেকে মণ্ডপ পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং নিজের ঠাকুর দেখতে বের হওয়ার মুহূর্তগুলো উল্লেখ করেন। আগামী ১৩ অক্টোবর তিনি আমতলা পরিদর্শন করবেন এবং নিজের সংসদীয় কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিষেকের হাতে উপস্থিত নেতারা নানা উপহার তুলে দেন। কেউ দিলেন মিষ্টির হাঁড়ি, কেউবা অন্য কোনো স্মারক। সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে অভিষেক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি ডিভিসির জলছাড়া নিয়ে বিজেপির সমালোচনাও করেন।

রাজনৈতিক বার্তা ও বিজেপি সমালোচনা

উৎসবের আড্ডায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক তোপও দাগেন। তিনি বলেন, “২০২৪-এ কিছুটা পরাজিত হয়েছে, যেটুকু বাকি আছে, ২০২৬-এ তাও হবে। ওরা বাংলা থেকে ভোট পায় না বলে এসব ষড়যন্ত্র করে।” এই মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে রাজনৈতিক চাপে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।বিজয়া সম্মিলনী কেবল উৎসব নয়, দলের রাজনৈতিক কৌশল ও নেতাদের মনোযোগ সংহত করার মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হলো। মমতা ও অভিষেকের উপস্থিতি নেতাদের মধ্যে উদ্দীপনা তৈরি করেছে, যা দলীয় কার্যক্রমকে আরও সক্রিয় করবে।

দলের ঐক্য ও সাংগঠনিক গুরুত্ব

বিজয়া সম্মিলনী এক ধরণের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও বিবেচিত হয়েছে। দলের নেতারা একে অপরের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। মমতা ও অভিষেকের উপস্থিতি দলের ভেতরের ঐক্য দৃঢ় করার পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের উৎসাহ বৃদ্ধি করেছে।শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংগঠনিক আলোচনা, স্থানীয় কর্মীদের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং ভোটের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে মতামত বিনিময় করা হয়েছে। এ ধরনের আয়োজন দলের ভিতরকার সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীঘাটে তৃণমূলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় বিজয়া সম্মিলনী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলীয় সহকর্মী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থেকে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মিষ্টি ও নানা উপহার বিতরণের মধ্য দিয়ে উৎসবের আবহে দলের নেতারা একে অপরের সঙ্গে বন্ধন দৃঢ় করেন।

Leave a comment