নয়াদিল্লি: হিন্দু ধর্মে ব্রত-উপবাসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হল প্রদোষ ব্রত, যা প্রতি মাসে কৃষ্ণ পক্ষ এবং শুক্ল পক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে পালন করা হয়। প্রদোষ ব্রত ভগবান শিবকে উৎসর্গ করা হয় বলে মনে করা হয়। যখন এই ব্রত বুধবার দিন আসে, তখন একে বুধ প্রদোষ ব্রত বলা হয়। ২০২৫ সালে এই ব্রত ২০ আগস্ট, বুধবার পালিত হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিন সন্ধ্যায় ভগবান শিব ও গণেশের আরাধনা বিশেষভাবে ফলদায়ক হয় এবং সকল প্রকার দুঃখ-ত্রুটি দূর হয়।
বুধ প্রদোষ ব্রত ২০২৫-এর তারিখ ও তাৎপর্য
পঞ্জিকা অনুসারে, ২০২৫ সালের ২০ আগস্ট ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথি থাকবে। এই দিনেই বুধ প্রদোষ ব্রত পড়েছে। প্রদোষ ব্রতের সময় সন্ধ্যা বেলা অর্থাৎ সূর্যাস্তের ঠিক আগের মুহূর্তকে ধরা হয়। এই সময়ে পূজা-অর্চনা করলে ভগবান শিবের আশীর্বাদ লাভ করা যায়। প্রদোষ ব্রত কেবল শিবজির কৃপাই নয়, তাঁর পুত্র ভগবান গণেশের কৃপা পাওয়ারও সুযোগ করে দেয়। বুধবার গণেশজির বিশেষ দিন হিসেবে বিবেচিত হয়, তাই এই দিনে ব্রত ও পূজা করলে ব্যক্তি বুদ্ধি, জ্ঞান এবং সমৃদ্ধির বর লাভ করে।
বুধ প্রদোষ ব্রতের পূজা বিধি
এই দিন ব্রতকারীকে সকালে স্নান করে সংকল্প নিতে হয়। সারা দিন সংযম ও সাত্ত্বিকতা পালনের পর সন্ধ্যায় শিবালয়ে গিয়ে ভগবান শিব, মাতা পার্বতী ও গণেশের বিধিবদ্ধ পূজা করা উচিত।
- শিবলিঙ্গে জল, বেলপাতা, ধুতরা এবং দুধ অর্পণ করুন।
- ভগবান গণেশকে দূর্বা, মোদক ও লাড্ডু নিবেদন করুন।
- ধূপ-দীপের সঙ্গে প্রদোষ ব্রত কথা পাঠ করুন।
বিশ্বাস করা হয় যে সূর্যাস্তের সময়ে করা এই পূজা অত্যন্ত ফলদায়ক হয় এবং ভগবান শিবের বিশেষ কৃপা লাভ করা যায়।
বুধ প্রদোষ ব্রত রাখার উপকারিতা
ধর্মীয় গ্রন্থগুলিতে প্রদোষ ব্রতকে অত্যন্ত পবিত্র ও শক্তিশালী বলা হয়েছে। এটি পালন করলে জীবনে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
- সন্তানদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং তারা দীর্ঘায়ু লাভ করে।
- এই ব্রত বুদ্ধি ও জ্ঞান বৃদ্ধি করে, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।
- শিবপুরাণ অনুসারে, এই ব্রত রোগ ও ত্রুটি দূর করে এবং শরীর ও মন সুস্থ রাখে।
- উপবাস ও পূজার মাধ্যমে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পায় এবং ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি বিরাজ করে।
- স্কন্দপুরাণ অনুসারে, প্রদোষ ব্রত পালনকারী পাপ থেকে মুক্তি পায় এবং জীবনে শান্তি অনুভব করে।
কেন বিশেষ বুধ প্রদোষ ব্রত
বুধবারের প্রদোষ ব্রতকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়, কারণ এটি শিব ও গণেশ উভয়ের পূজার সুযোগ করে দেয়। পিতা-পুত্রের যৌথ আরাধনা ব্যক্তির জীবনের সকল প্রকার দোষ দূর করে এবং মনোবাসনা পূরণ করে। এই কারণে ভক্তরা এই ব্রতটি যথাযথ নিয়ম-নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার সংকল্প নেন।