রবিবার নিউ ইয়র্কে এক অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে কার্লোস আলকারাজ ইউএস ওপেন ২০২৫-এর খেতাব জিতে নিয়েছেন। স্প্যানিশ খেলোয়াড় আলকারাজ ফাইনালে ইতালির প্রতিভাবান টেনিস খেলোয়াড় জানিক সিনারকে সরাসরি সেটে পরাজিত করেন।
স্পোর্টস নিউজ: স্পেনের তরুণ টেনিস তারকা কার্লোস আলকারাজ রবিবার ইতিহাস সৃষ্টি করে ইউএস ওপেন ২০২৫-এর খেতাব নিজের নামে করে নিয়েছেন। তিনি ইতালির জানিক সিনারকে এক কড়া লড়াইয়ে ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ সেটে হারিয়ে তাঁর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করেন এবং আইটিএফ র্যাঙ্কিংয়ে আবার এক নম্বর স্থান ফিরে পান। এটি তাঁর ইউএস ওপেন জয়ের দ্বিতীয় ঘটনা এবং ২২ বছর বয়সে এই অর্জন তাঁকে টেনিস জগতের অন্যতম প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের মধ্যে স্থান করে দিয়েছে।
খিতাবি লড়াইয়ে আলকারাজের আধিপত্য
ম্যাচের শুরু থেকেই আলকারাজ এক অসাধারণ খেলা দেখিয়ে প্রথম সেট ৬-২ ব্যবধানে জিতে নেন। প্রথম গেমেই তিনি সিনারের সার্ভিস ভেঙে দেন এবং পুরো সেট জুড়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখেন। দ্বিতীয় সেটে সিনার ঘুরে দাঁড়ান এবং ৬-৩ ব্যবধানে জয় লাভ করেন, যা ম্যাচটিকে আরও রোমাঞ্চকর করে তোলে। কিন্তু তৃতীয় সেটে আলকারাজ তাঁর শক্তি ও কৌশলের এক অসাধারণ মেলবন্ধন ঘটিয়ে ৬-১ ব্যবধানে সেট নিজের করে নেন। চতুর্থ সেটেও তিনি অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন এবং ৬-৪ ব্যবধানে জয়ী হয়ে খেতাব নিজের নামে করে নেন।
এই জয়ের সাথে সাথে আলকারাজ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এর পর প্রথমবার বিশ্বের এক নম্বর র্যাঙ্কিং অর্জন করেন। বিগত দুই বছরে অনেক উত্থান-পতন সত্ত্বেও, তাঁর এই পারফরম্যান্স প্রমাণ করে যে তিনি কেবল প্রতিভাবান খেলোয়াড়ই নন, মানসিকভাবেও অত্যন্ত শক্তিশালী। কম বয়সে একাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী কিংবদন্তিদের তালিকায় এখন তাঁর নামও যুক্ত হয়েছে।
জানিক সিনারের হারের ধারা অব্যাহত
হার্ড কোর্টে জানিক সিনারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবার থেমে গেল। এই ম্যাচের আগে তিনি টানা ২৭টি ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়েছিলেন। সিনার এর আগেও জুন মাসে ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে আলকারাজের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। ম্যাচের পর সিনার বলেন, "আমি আমার সেরা খেলাটা খেলেছি। আজ আমি এর চেয়ে ভালো খেলতে পারতাম না।" তাঁর এই হার যদিও হতাশাজনক, তবে তাঁর খেলার ধরণ এবং লড়াই দর্শকদের মন জয় করেছে।
ইউএস ওপেনে টানা খেতাব জেতার রেকর্ড এখনও রজার ফেডেরারের নামেই রয়েছে, যিনি ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর পরে আর কোনো খেলোয়াড় এই কৃতিত্ব পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি। এবারও কোনো খেলোয়াড় তাঁর রেকর্ড ভাঙতে পারেনি, যা ইতিহাসে ফেডেরারের নামকে আরও শক্তিশালী করেছে।
ম্যাচের সময় আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর উপস্থিতি এক ভিন্নরকম উত্তেজনার সৃষ্টি করে। যখন ট্রাম্প জাতীয় সংগীতের আগে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন, তখন দর্শকরা তাঁকে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখায়—কেউ হাততালি দেয়, আবার কেউ বিরূপ শব্দ করে। নিরাপত্তার কারণে ম্যাচটি ৩০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়েছিল।