ভাইফোঁটা ২০২৫: জেনে নিন শুভ মুহূর্ত, তিথি ও ফোঁটা দেওয়ার নিয়ম

ভাইফোঁটা ২০২৫: জেনে নিন শুভ মুহূর্ত, তিথি ও ফোঁটা দেওয়ার নিয়ম

এই বছর ভাইফোঁটা ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পালিত হবে। পঞ্জিকা অনুসারে, দ্বিতীয়া তিথি ২২ অক্টোবর রাত ৮:১৬ মিনিট থেকে শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবর রাত ১০:৪৬ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। তাই উদয়তিথি অনুযায়ী, উৎসবটি ২৩ অক্টোবর পালিত হবে। এই দিন দুপুর ১:১৩ থেকে ৩:২৮ পর্যন্ত ফোঁটার শুভ মুহূর্ত থাকবে।

ভাইফোঁটা 2025: ভাই-বোনের প্রেম ও স্নেহের প্রতীক এই উৎসবটি এবার ২৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পালিত হবে। পঞ্জিকা অনুসারে, কার্তিক শুক্লা দ্বিতীয়া তিথি ২২ অক্টোবরের রাত থেকে শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবরের রাত ১০:৪৬ মিনিট পর্যন্ত থাকবে, তাই উদয়তিথির ভিত্তিতে উৎসবটি ২৩ তারিখেই পালিত হবে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, এই দিনেই যমরাজ তাঁর বোন যমুনার বাড়িতে এসেছিলেন এবং ফোঁটা গ্রহণ করেছিলেন। এই কারণেই এটিকে যম দ্বিতীয়াও বলা হয়। শুভ মুহূর্ত দুপুর ১:১৩ থেকে ৩:২৮ পর্যন্ত থাকবে, যখন বোনেরা তাঁদের ভাইদের কপালে ফোঁটা পরিয়ে তাঁদের দীর্ঘায়ু ও সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করবেন।

ভাইফোঁটার তিথি ও সময়

পঞ্জিকা অনুসারে, এই বছর দ্বিতীয়া তিথি 2025 সালের ২২ অক্টোবর রাত ০৮টা ১৬ মিনিট থেকে শুরু হবে। এই তিথি 2025 সালের ২৩ অক্টোবর রাত ১০টা ৪৬ মিনিটে শেষ হবে। এই কারণেই ভাইফোঁটার উৎসব ২৩ অক্টোবর পালন করা শুভ বলে মনে করা হয়েছে।

এই দিন ফোঁটা দেওয়ার শুভ মুহূর্ত দুপুর ০১টা ১৩ মিনিট থেকে ০৩টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। এই সময়ে বোনেরা তাঁদের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা পরিয়ে তাঁদের দীর্ঘায়ু ও সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করতে পারবেন।

ভাইফোঁটার পৌরাণিক গুরুত্ব

ভাইফোঁটার পেছনে একটি পৌরাণিক কাহিনী জড়িত আছে। বলা হয় যে এই দিনে যমরাজ তাঁর বোন যমুনার বাড়িতে গিয়েছিলেন। দেবী যমুনা তাঁকে সশ্রদ্ধ স্বাগত জানিয়েছিলেন, তাঁকে সুস্বাদু খাবার খাইয়েছিলেন এবং তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন। যমরাজ প্রসন্ন হয়েছিলেন এবং বর দিয়েছিলেন যে যে ভাই এই দিনে তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে ফোঁটা নেবে, তাঁর অকাল মৃত্যুর ভয় থাকবে না এবং সে দীর্ঘায়ু লাভ করবে।

এই কারণে এই দিনে বোনেরা তাঁদের ভাইয়ের দীর্ঘায়ু ও সুখ-সমৃদ্ধির জন্য ব্রত পালন করেন। ভাইয়েরাও বোনকে উপহার দেন এবং তাঁদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। এই উৎসবটি কেবল পারিবারিক সম্পর্কের উদযাপন নয়, ভাই-বোনের প্রেম ও সুরক্ষার প্রতীকও বটে।

ভাইফোঁটায় ফোঁটা দেওয়ার নিয়ম

ভাইফোঁটায় ফোঁটা দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ এবং ঐতিহ্যবাহী। প্রথমে শুভ মুহূর্তে চালের আটা দিয়ে একটি চৌক তৈরি করুন। এই চৌকের উপর ভাইকে পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বসান।

ভাইয়ের কপালে সিঁদুর বা চন্দনের ফোঁটা দিন এবং অক্ষত অর্পণ করুন। এরপর ভাইয়ের হাতে কलावा বাঁধুন এবং তাঁকে মিষ্টি খাওয়ান। পূজার সময় ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালান এবং ভাইয়ের আরতি করুন। সবশেষে, ভাই বোনের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিন এবং বোনকে উপহার দিন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভাই-বোনের মধ্যে প্রেম ও সম্পর্ক দৃঢ় হয়।

ভাইফোঁটার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব

ভাইফোঁটা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়। এই পর্বটি ভাই-বোনের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান, প্রেম এবং সুরক্ষার প্রতীকও বটে। ভারতের বিভিন্ন অংশে ভাইফোঁটা বিভিন্ন রূপে পালিত হয়। কিছু অঞ্চলে এটিকে যম তিথি বা যম দ্বিতীয়া বলা হয়।

অনেক জায়গায় বোনেরা ভাইকে ফোঁটা দিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে এবং উপহার দিয়ে তাঁদের ভালোবাসার প্রকাশ করেন। ভাইয়েরাও তাঁদের জীবন ও সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি নিয়ে বোনের বাড়িতে আসেন। এই উৎসব পরিবার এবং সমাজে ভাই-বোনের সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

ভাইফোঁটার সাথে জড়িত অন্যান্য রীতিনীতি

ভাইফোঁটার দিনে বাড়ির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পূজার স্থান সাজানো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। বোনেরা আলপনা এবং প্রদীপ দিয়ে উঠোন সাজান। এই দিনে ভাই ও বোনের মধ্যে সম্মিলিত ভোজনও আয়োজন করা হয়। অনেক পরিবারে বোনেরা ভাইয়ের জন্য বিশেষ খাবার তৈরি করেন এবং ভাই তাঁদেরকে সসম্মানে খাইয়ে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এই দিনে ভাই-বোনের মধ্যে উপহার আদান-প্রদানও ঐতিহ্যের অংশ। উপহারের মধ্যে মিষ্টি, পোশাক, টাকা এবং গয়না অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই উৎসবটি কেবল বস্তুতান্ত্রিক উপহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আবেগ এবং সম্পর্কের এক উদযাপন।

ফোঁটার মুহূর্ত এবং পূজা পদ্ধতি 

এই বছর ভাইফোঁটায় দুপুর ০১টা ১৩ মিনিট থেকে ০৩টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত সময়টি সবচেয়ে শুভ বলে মনে করা হয়েছে। এই সময়ে ফোঁটা দিলে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু, সাফল্য এবং জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। বোনেরা এই সময়ে ফোঁটা এবং অক্ষত অর্পণ করে ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করেন।

ভাইফোঁটার এই উৎসবটি কেবল পারিবারিক সম্পর্ককেই মজবুত করে না, বরং সমাজে ভাই-বোনের সম্পর্ককেও একটি বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এই দিনে করা কাজ এবং পূজা জীবনে ইতিবাচক শক্তি নিয়ে আসে এবং পরিবারে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বৃদ্ধি ঘটায়।

Leave a comment