চালে পোকা আর নয়! ঘরোয়া টোটকায় সারা বছর নিরাপদ থাকুক আপনার ভাতের চাল

চালে পোকা আর নয়! ঘরোয়া টোটকায় সারা বছর নিরাপদ থাকুক আপনার ভাতের চাল

ভাত ছাড়া বাঙালির খাবার সম্পূর্ণ হয় না। অথচ সেই ভাতের চালেই যখন পোকা বাসা বাঁধে, তখন সমস্যার অন্ত থাকে না। বিশেষ করে বর্ষাকালে চালের হাঁড়িতে বা কৌটোতে পোকা জমা খুব সাধারণ ঘটনা। অনেকেই বাজারের কীটনাশক ব্যবহার করেন, কিন্তু এতে ক্ষতির সম্ভাবনাও থেকে যায়। খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদ, লবঙ্গ, দারচিনি, এলাচের মতো ঘরোয়া মশলাই চালকে পোকামুক্ত রাখতে সক্ষম।

সমস্যার শিকড়: কেন হয় চালের কৌটোতে পোকা?

বাংলার আবহাওয়া আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে। এর ফলে শস্যে দ্রুত আর্দ্রতা জমে। যদি কৌটো বা হাঁড়ি বায়ুরোধী না হয়, তবে খুব সহজেই পোকামাকড় জন্ম নিতে পারে।বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চালের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক তেলও অনেক সময় পোকা টানতে পারে। উপরন্তু যদি চাল সঠিকভাবে শুকনো অবস্থায় সংরক্ষণ না করা হয়, তবে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

রান্নাঘরের মশলাই আসল ভরসা

রাসায়নিক ছাড়াই রান্নাঘরের মশলাই চালকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।

হলুদ: অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণে হলুদ চালকে পোকামুক্ত রাখে। সামান্য গুঁড়ো ছিটিয়ে দিলেই কার্যকর ফল পাওয়া যায়।

লবঙ্গ: তীব্র গন্ধ পোকা দূরে রাখে। কয়েকটি লবঙ্গ চালের কৌটোতে ফেলে রাখলেই যথেষ্ট।

দারচিনি ও এলাচ: এগুলির সুবাস শুধু পোকা দূরে রাখে না, চালেও একপ্রকার সতেজতা বজায় রাখে।এই উপায়গুলি ব্যবহার করলে চালের মানও অটুট থাকে, আর ভাতের স্বাদও অক্ষুণ্ণ থাকে।

বিশেষজ্ঞদের টিপস: সঠিক সংরক্ষণই মূল চাবিকাঠি

খাদ্য সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞদের মতে, চাল দীর্ঘদিন ভালো রাখতে হলে প্রথমেই বায়ুরোধী কৌটো ব্যবহার করা জরুরি। প্লাস্টিকের কৌটোর বদলে স্টিল বা কাচের কৌটো ব্যবহার করলে ফল আরও ভালো হয়।তাঁরা আরও বলেন, চাল রাখার আগে সেটি রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এতে আর্দ্রতা দূর হয় এবং পোকা জন্মানোর সম্ভাবনা কমে যায়।

দীর্ঘমেয়াদি সমাধান: ঘরোয়া রক্ষণাবেক্ষণ

চালকে শুকনো, ঠান্ডা জায়গায় রাখা সর্বদা উপযুক্ত। সরাসরি রান্নাঘরের গ্যাস চুলোর পাশে চালের কৌটো রাখলে তাপে আর্দ্রতা তৈরি হতে পারে, যা বিপজ্জনক।অনেকেই ফ্রিজে চাল সংরক্ষণ করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অল্প পরিমাণ চাল ফ্রিজে রাখা সম্ভব হলেও, বেশি চাল সবসময় শুকনো ও ঠান্ডা ঘরে রাখাই শ্রেয়।

বাজারের রাসায়নিক কেন নয়?

বাজারে চালের পোকা মারার নানা গুঁড়ো বা রাসায়নিক পাওয়া যায়। কিন্তু এগুলি খাবারের সঙ্গে মিশে গেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট সতর্ক করেছেন—এসব রাসায়নিক থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

চালের কৌটোতে পোকা ভরার সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। বাজারের রাসায়নিক পাউডার ব্যবহার না করে, রান্নাঘরের মশলাই এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আর্দ্রতা এড়ানো ও ঘরোয়া উপায়ই চালকে দীর্ঘদিন সুরক্ষিত রাখার মূল মন্ত্র।

Leave a comment