ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে ১ নভেম্বর রায়পুরে অনুষ্ঠিতব্য অমৃত রজত মহোৎসবে প্রধান অতিথি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই উপলক্ষে রাজ্যের উন্নয়ন পরিকল্পনাও শেয়ার করা হয়েছে।
Amrit Silver Festival: ১ আগস্ট ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর রায়পুরে আয়োজিত 'অমৃত রজত মহোৎসব'-এ প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। ছত্তিশগড় রাজ্য গঠনের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হবে।
মুখ্যমন্ত্রী সাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে বলেছেন, রাজ্য সরকার এই অনুষ্ঠানকে ছত্তিশগড়ের উন্নয়ন যাত্রার প্রতীক হিসেবে দেখছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি শুধু অনুষ্ঠানের মর্যাদা বাড়াবে না, রাজ্যের নাগরিকদের গর্ব ও অনুপ্রেরণা জোগাবে।
'অঞ্জোর ভিশন @২০৪৭': ছত্তিশগড়ের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন মডেল
মুখ্যমন্ত্রী এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদী নীতি "অঞ্জোর ভিশন @২০৪৭" সম্পর্কেও অবহিত করেন। এই নীতি ছত্তিশগড়ের উন্নয়নকে ভারত সরকারের জাতীয় মিশন "বিকশিত ভারত"-এর সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টা। এই ভিশন ডকুমেন্টে রাজ্যটির জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প, উদ্ভাবন এবং পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কারের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হল ছত্তিশগড়কে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী এবং স্বয়ংনির্ভর রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা, যা নীতি নির্ধারণ ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দেয়।
জন বিশ্বাস বিল ২০২৫: স্বচ্ছতার দিকে বড় পদক্ষেপ
মুখ্যমন্ত্রী সাই প্রধানমন্ত্রীকে আরও জানান যে ছত্তিশগড় সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের "জন বিশ্বাস আইন ২০২৩" থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজ্য স্তরে "জন বিশ্বাস বিল ২০২৫" পাশ করেছে। এই বিলের উদ্দেশ্য হল শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা, প্রশাসনিক জবাবদিহিতা জোরদার করা এবং নাগরিকদের দ্রুত ও সহজলভ্য বিচার প্রদান করা।
এই উদ্যোগ ছত্তিশগড় সরকারের সুশাসনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধতাকে दर्शाता এবং এটি ইঙ্গিত দেয় যে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করছে।
নয়া রায়পুরকে স্মার্ট ও হাইটেক শহর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে
মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে নয়া রায়পুরের উন্নয়ন সম্পর্কেও অবহিত করেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকার নয়া রায়পুরকে একটি আধুনিক শহুরে কেন্দ্র ও প্রশাসনিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলছে। এর জন্য রাজধানী অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে।
স্মার্ট সিটি প্রকল্পের অধীনে এই অঞ্চলে অবকাঠামো, ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল পরিষেবা এবং সবুজ অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হল এটিকে একটি মডেল শহর হিসেবে গড়ে তোলা, যা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে সুষম উন্নয়নের উদাহরণ তৈরি করবে।
বিনিয়োগ ও শিল্প বিকাশে নতুন গতি
মুখ্যমন্ত্রী সাই আরও জানান যে রাজ্য সরকার নভেম্বর ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত মোট ৬.৬৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে। এই প্রস্তাবগুলিতে ৮৪টি কোম্পানির অংশগ্রহণ রয়েছে।
তিনি বিশেষভাবে ভারতের প্রথম সেমিকন্ডাক্টর ইউনিট এবং নয়া রায়পুরে প্রস্তাবিত এআই ডেটা সেন্টারের কথা উল্লেখ করেন, যেগুলোকে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি এবং রোজগারের নতুন সুযোগের বাহক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি নতুন শিল্প নীতি ২০২৪-৩০-এর অধীনে রাজ্যে সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম চালু করা হয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে এবং উচ্চ-রোজগারযুক্ত শিল্পগুলোকে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।