ভারতের অনুরোধে চীন সার, বিরল মৃত্তিকা খনিজ এবং টানেল বোরিং মেশিনের সরবরাহের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেজিং সফরের পর উত্থাপিত উদ্বেগের প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জয়শঙ্করকে আশ্বাস দিয়েছেন যে চীন ভারতের এই চাহিদা পূরণ করবে।
নয়াদিল্লি: ভারতের অনুরোধে চীন সার, বিরল মৃত্তিকা খনিজ এবং টানেল বোরিং মেশিনের সরবরাহের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেজিং সফরের পর উত্থাপিত উদ্বেগের প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জয়শঙ্করকে আশ্বাস দিয়েছেন যে চীন ভারতের এই চাহিদা পূরণ করবে।
চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় একটি বড় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ওয়াং ই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে আশ্বাস দিয়েছেন যে চীন সার, বিরল খনিজ এবং সুড়ঙ্গ খননকারী মেশিনের সরবরাহ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের কৃষি, অটো এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এখন চীনের এই পদক্ষেপ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিসাধনে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিদেশমন্ত্রীদের আলোচনায় উত্থাপিত বিষয়
সূত্রের খবর, চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের উদ্বেগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ভারত পূর্বের বেজিং সফরেও এই বিষয়গুলো উত্থাপন করেছিল। দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় চীন আশ্বাস দিয়েছে যে ভারতের তিনটি প্রধান উদ্বেগের সমাধান করা হবে।
এই আলোচনার সময় ভারত সার এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ সরবরাহে বাধার কারণে কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যাগুলিও তুলে ধরে।
বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলির গুরুত্ব
বিশ্বে বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলির সরবরাহ সীমিত এবং এইগুলি উচ্চ প্রযুক্তি পণ্যগুলির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে বৈদ্যুতিক যানবাহন, ড্রোন এবং ব্যাটারি স্টোরেজের মতো সেক্টরের জন্য এই খনিজগুলির প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই খনিজগুলির সরবরাহে বাধা আসে তবে ইলেকট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
চীন বিশ্বব্যাপী এই খনিজগুলির সরবরাহে একটি বড় খেলোয়াড়। গত কয়েক মাসে নিরাপত্তা কারণ এবং দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার কারণে চীন এই পণ্যগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
কৃষি ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেক্টরের উপর প্রভাব
ভারত চীনের নিষেধাজ্ঞার কারণে রবি মরসুমে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট সারের উপলব্ধতা প্রভাবিত হওয়ার কথা উত্থাপন করেছিল। এর ফলে কৃষকদের ফসল এবং উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারত।
একইভাবে, ভারতে বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রকল্পের জন্য টানেল বোরিং মেশিনের চালান আটকে যাওয়ায় প্রকল্পগুলিতে বিলম্বের ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছিল। অটোমোবাইল এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্পও চীন কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নতি
বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন যে ভারত ও চীনের কঠিন সময়ের পর তাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি স্পষ্ট এবং গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত। তিনি মনে করেন যে সহযোগিতা এবং বিশ্বাস উভয় দেশের জন্য জরুরি।
চীনের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র ভারতের প্রয়োজনীয় সম্পদ সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, সেইসাথে বাণিজ্যিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলিকেও স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে।
কৃষি ক্ষেত্রে স্বস্তি
ভারতের শিল্পমহল চীনের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলে মনে করছে। ইলেকট্রনিক যান এবং ব্যাটারি উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে এখন তাদের সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিশীল হবে এবং উৎপাদনে কোনো বাধা আসবে না।
কৃষি ক্ষেত্রেও স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সারের সরবরাহ স্থিতিশীল হলে ফসল উৎপাদন এবং কৃষকদের খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় একটি বড় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ওয়াং ই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে আশ্বাস দিয়েছেন যে চীন সার, বিরল খনিজ এবং সুড়ঙ্গ খননকারী মেশিনের সরবরাহ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের কৃষি, অটো এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এখন চীনের এই পদক্ষেপ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিসাধনে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।