২০২৫ বিহার নির্বাচন: কংগ্রেসের নতুন কৌশল, উচ্চবর্ণের বদলে অনগ্রসর ও দলিতের দিকে ঝোঁক

২০২৫ বিহার নির্বাচন: কংগ্রেসের নতুন কৌশল, উচ্চবর্ণের বদলে অনগ্রসর ও দলিতের দিকে ঝোঁক

২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে, কংগ্রেস তার জাতিগত সমীকরণে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে। দলের জাতীয় নেতৃত্ব, বিশেষ করে রাহুল গান্ধী, এই বার্তা দিতে চাইছেন যে কংগ্রেসের জন্য ঐতিহ্যবাহী উচ্চবর্ণের ভোটাররা আর ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

पटना: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে, কংগ্রেসের চালচলনে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এখন দলের অগ্রাধিকার পরিবর্তিত হয়েছে এবং তারা আগের মতো কেবল ঐতিহ্যবাহী ভোটব্যাঙ্কের উপর নির্ভর করতে চায় না। নব্বইয়ের দশকে কংগ্রেস দলিত, উচ্চবর্ণ এবং মুসলিম ভোট संभालত, কিন্তু এখন তারা নতুন সমীকরণের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

কংগ্রেস এখন কার সমর্থন করছে এবং কাকে ছাড়ছে, সেটাও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। দলটি কিছু পুরানো জোটের উপর তাদের বন্ধন আলগা করেছে, অন্যদিকে নতুন সামাজিক গোষ্ঠী এবং আঞ্চলিক শক্তির সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। সাধারণ ভোটার এবং নির্দিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে – উভয় ক্ষেত্রেই কংগ্রেস ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

কংগ্রেসে কৌশলগত পরিবর্তন

বিহারের রাজনীতিতে জাতিগত সমীকরণ সবসময় নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছে। ঐতিহ্যগতভাবে, উচ্চবর্ণ, দলিত এবং মুসলিম ভোটারদের কংগ্রেসের মেরুদণ্ড বলে মনে করা হত। কিন্তু ২০২৫ সালের নির্বাচনের জন্য, দলটি তাদের কৌশল পরিবর্তন করে উচ্চবর্ণকে দ্বিতীয় অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হল, বিহারে অনগ্রসর এবং অতি-অনগ্রসর শ্রেণী হল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার।

কংগ্রেস গত কয়েক মাসে ভোটার অধিকার যাত্রা, জনসভা এবং আঞ্চলিক সংলাপের মাধ্যমে তাদের নতুন কৌশলকে শক্তিশালী করেছে। এই যাত্রায় রাহুল গান্ধী বিশেষভাবে দলিত, অনগ্রসর এবং অতি-অনগ্রসর শ্রেণীর প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছেন।

রাহুল গান্ধীর নতুন সুর

দারভাঙ্গায় আয়োজিত এক জনসভায় রাহুল গান্ধী আম্বেদকর হোস্টেলের ছাত্রদের সাথে কথা বলেন এবং বলেন যে যদি তাদের দল ক্ষমতায় আসে, তাহলে তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি, অনগ্রসর এবং অতি-অনগ্রসর শ্রেণী তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে। জুন ২০২৫ সালে নালন্দা এবং গয়া সফরের সময় তিনি অতি-অনগ্রসর শ্রেণী, ছাত্র এবং মহিলাদের সাথেও কথা বলেছেন।

রাহুল গান্ধী স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে বিজেপি এবং তাদের সহযোগী দলগুলি তাদের অধিকারের উপর বিপদ সৃষ্টি করছে। এই পদক্ষেপগুলি থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, কংগ্রেসের মনোযোগ এখন ঐতিহ্যবাহী উচ্চবর্ণের ভোটারদের থেকে সরে এসে অনগ্রসর, অতি-অনগ্রসর, দলিত এবং মুসলিম শ্রেণীর উপর নিবদ্ধ হয়েছে। অনগ্রসর এবং অতি-অনগ্রসর শ্রেণীর পরে, কংগ্রেস মুসলিম এবং দলিত ভোটারদের অগ্রাধিকার দিয়েছে।

দলীয় জাতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, যিনি নিজে একজন দলিত নেতা, তাকে জাতীয় নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিহার প্রদেশ সভাপতি রজনীশ রামকে কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে। মুসলিম ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য বিরোধী দলনেতা শাকিল আহমেদ খানকে নিযুক্ত করা হয়েছে। রাহুল গান্ধী আমেরিকায় তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, "ভারতে মুসলমানদের অবস্থা দলিতদের চেয়েও খারাপ। এমন অনেক আইন তৈরি হচ্ছে যা তাদের নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করছে।"

কংগ্রেসে ঐতিহ্যবাহী উচ্চবর্ণের ভোটার যেমন ব্রাহ্মণ, ভূমিহার এবং রাজপুতরা এখন আর অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। তরুণ নেতা কানহাইয়া কুমার, যাকে পূর্বে বিহারে পরিবর্তনের মুখ হিসেবে মনে করা হত, বর্তমান কৌশলে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন না। কংগ্রেসের ভোটার অধিকার যাত্রায়ও উচ্চবর্ণের নেতাদের উপস্থিতি সীমিত ছিল।

Leave a comment