সই মাঞ্জরেকারের ফিনল্যান্ড ভ্রমণ: বরফের ঠান্ডায় আত্ম-অনুসন্ধান ও মহেশ মাঞ্জরেকারের রসুন চাটনির রহস্য

সই মাঞ্জরেকারের ফিনল্যান্ড ভ্রমণ: বরফের ঠান্ডায় আত্ম-অনুসন্ধান ও মহেশ মাঞ্জরেকারের রসুন চাটনির রহস্য

‘দবং ৩’ অভিনেত্রী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ মাঞ্জরেকারের কন্যা সই মাঞ্জরেকার সম্প্রতি তাঁর ফিনল্যান্ড ভ্রমণের সুন্দর স্মৃতিগুলি ভাগ করে নিয়েছেন। অমর উজালা-র সঙ্গে কথোপকথনে সই জানিয়েছেন যে ফিনল্যান্ডের ঠান্ডা বাতাস, শান্ত পরিবেশ এবং বরফে ঢাকা উপত্যকা তাঁকে গভীরভাবে শান্তি দিয়েছে।

বিনোদন সংবাদ: ‘দবং ৩’ এর অভিনেত্রী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ মাঞ্জরেকারের কন্যা সই মাঞ্জরেকার সম্প্রতি তাঁর স্মরণীয় ফিনল্যান্ড যাত্রা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু আকর্ষণীয় বিষয় ভাগ করে নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সই জানিয়েছেন যে ফিনল্যান্ডের ঠান্ডা ও শান্ত পরিবেশ তাঁকে ভেতর থেকে শান্তি এনে দিয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি তাঁর বাবা মহেশ মাঞ্জরেকারের একটি অদ্ভুত ভ্রমণ অভ্যাসের কথা প্রকাশ করেছেন — তিনি যখনই বিদেশে যান, তাঁর পকেটে রসুন চাটনি রাখেন!

ফিনল্যান্ডের ঠান্ডায় মিলল শান্তি

সই মাঞ্জরেকার জানিয়েছেন যে ফিনল্যান্ড তাঁর জন্য কেবল একটি ভ্রমণ ছিল না, বরং আত্মচিন্তার একটি অভিজ্ঞতা ছিল। তিনি বলেছেন, “সেই সময়ে আমার জীবনে অনেক কিছু ঘটছিল। আমি চেয়েছিলাম কিছু মুহূর্ত নিজের সঙ্গে কাটাতে। ফিনল্যান্ডের ঠান্ডা, নীরবতা এবং সরল জীবন আমাকে ভেতর থেকে শান্তি দিয়েছে। সেখানকার মানুষজন অত্যন্ত সহায়ক ও বিনয়ী ছিলেন, এবং সেই ঠান্ডা আবহাওয়াতেও তাঁদের আপনজনতা হৃদয়কে উষ্ণতা দিয়েছে।”

অভিনেত্রী তাঁর স্মরণীয় মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিয়ে বলেছেন, “আমরা একটি কাঁচের ইগলুতে ছিলাম। আলো নিভিয়ে দিলাম এবং আকাশে নর্দার্ন লাইটস ছড়িয়ে পড়ল। ঠিক সেই মুহূর্তে একটি শুটিং স্টার চলে গেল, আমরা চোখ বন্ধ করে প্রার্থনা করলাম। ঘড়িতে তখন 11:11 বাজছিল। সেই কয়েক সেকেন্ড আমার জন্য চিরকালের জন্য জাদুকরী হয়ে রইল।”

প্রতিটি ভ্রমণ আমাকে আমার আরও ভালো সংস্করণের কাছাকাছি নিয়ে যায় - সই

সইয়ের জন্য ভ্রমণ কেবল ঘুরে বেড়ানো নয়, বরং নিজেকে বোঝার একটি মাধ্যম। তিনি বলেছেন, “যখন আমি ভ্রমণ করি, তখন আরাম বা বিলাসিতা আমার অগ্রাধিকার থাকে না। আমি প্রতিটি জায়গার প্রতিটি কোণ দেখতে চাই, প্রতিটি অনুভূতি অনুভব করতে চাই, তা যত কঠিনই হোক না কেন। ভ্রমণ আমার জন্য আত্ম-বিকাশের একটি উপায়; প্রতিটি ভ্রমণ আমাকে আমার আরও ভালো সংস্করণের কাছাকাছি নিয়ে আসে।”

তিনি এও বলেছেন যে ভ্রমণের সময় তাঁর মনে হয় যে মানুষের আসল শক্তি তার সরলতা এবং ধৈর্যের মধ্যে নিহিত। সই তাঁর শৈশবের পারিবারিক ছুটির কথা মনে করে বলেছেন, “আমরা প্রায়শই পারিবারিক ভ্রমণে যেতাম — মা, বাবা, বোন, ভাই, প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ ছিল। এই ভ্রমণগুলোই আমাদের ভালোবাসা, বোঝাপড়া এবং মানিয়ে নেওয়া শিখিয়েছে। আমার মনে হয়, পরিবারের সঙ্গে ভ্রমণ করলে সম্পর্ক আরও গভীর হয়।”

মহেশ মাঞ্জরেকারের অদ্ভুত ভ্রমণ অভ্যাস — পকেটে রসুন চাটনি

সই হেসে বলেছেন, “একটি জিনিস যা আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি, তা সব সময় মনে থাকে। বাবা যখনই বিদেশে যান, তাঁর পকেটে রসুন চাটনি রাখেন। তাঁর বিশ্বাস, বাইরের খাবার পানসে হয়। এখন আমিও তাঁর কাছ থেকে এই অভ্যাসটি নিয়েছি। আমি সব সময় আমার ব্যাগে কিছু ঝাল জিনিস রাখি — কখনও কাঁচা লঙ্কা, কখনও টাবাস্কো, কখনও চাটনি। হয়তো এটা শুধু স্বাদ নয়, আপনত্বের একটি ছোট্ট স্মৃতি, যা আমি সঙ্গে রাখি।” এই মজাদার প্রকাশ ভক্তদের বাবা-মেয়ের বন্ধনের এক ঝলক দেখিয়েছে, যেখানে ঐতিহ্য এবং ভালোবাসার স্বাদ একসঙ্গে অনুভব করা যায়।

সই মাঞ্জরেকার মনে করেন যে ভ্রমণ তাঁর অভিনয় এবং চিন্তাভাবনা উভয়কেই গভীরতা দেয়। তিনি বলেছেন, “যখন আমি নতুন জায়গায় যাই, নতুন মানুষের সাথে দেখা করি এবং নতুন সংস্কৃতি অনুভব করি, তখন আমার দৃষ্টিভঙ্গি আরও বিস্তৃত হয়। প্রতিদিনের তাড়াহুড়ো থেকে দূরে গিয়ে যখন মন শান্ত হয়, তখনই আসল সৃজনশীলতা আসে। তাই আমার জন্য ভ্রমণ কোনো বিরতি নয়, বরং একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।”

Leave a comment