Ghee Side Effect: চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, ঘি আমাদের শরীরের জন্য অনেকভাবে উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যা হজমে সহায়তা করে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। তবে দিনে দুই চামচের বেশি ঘি খাওয়া কার্ডিওভাসকুলার রোগ, স্থূলতা এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। ডা. আলাহিম শেখের পরামর্শ—ঘি খাওয়া পুরোপুরি বাদ নয়, বরং পরিমিতভাবে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
ঘি: উপকারিতার ভান্ডার
পরিমিত মাত্রায় ঘি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে, যা শরীরের হাড় মজবুত রাখে ও ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এছাড়া ঘির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কোষের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। অনেকেই খাবারে সামান্য ঘি ব্যবহার করে পেটের গণ্ডগোল কমাতে পারেন।
হৃদযন্ত্রের জন্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে অতিরিক্ত ঘি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘিতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। এই চর্বি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। চিকিৎসকরা তাই প্রতিদিন দুই চামচের বেশি ঘি না খাওয়ার পরামর্শ দেন। যাদের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি আরও বিপজ্জনক হতে পারে।
ওজন ও স্থূলতা—অতিরিক্ত ঘির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার ফলে ক্যালোরির পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমে স্থূলতা তৈরি হতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে ঘির ব্যবহার অবশ্যই সীমিত রাখতে হবে। ব্যায়ামহীন জীবনযাত্রার সঙ্গে অতিরিক্ত ঘি শরীরের বিপাকক্রিয়া (metabolism) ধীর করে দেয়, যা ওজন বাড়ানোর বড় কারণ।
লিভার ও হজমের ওপর প্রভাব
লিভারের রোগে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য ঘি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ এতে উচ্চমাত্রার ফ্যাট থাকে যা লিভারকে অতিরিক্ত চাপ দেয়। অন্যদিকে, যাদের হজমের সমস্যা নেই, তাঁরা পরিমিত ঘি খেলে পাচনতন্ত্রের উন্নতি পেতে পারেন। তবে বদহজমে ভোগা ব্যক্তিদের ঘি একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
কতটা ঘি খাওয়া উচিত—বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
ডা. আলাহিম শেখ জানিয়েছেন, “দিনে সর্বাধিক দুই চামচ ঘি খাওয়া নিরাপদ। এর বেশি পরিমাণে খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায় এবং শরীরের ফ্যাট জমা হয়।” তিনি আরও জানান, “পরিমিত ঘি খাওয়া শরীরের ভিটামিন শোষণে সাহায্য করে, তবে ভারসাম্য না থাকলে বিপদ ঘনিয়ে আসে।
ঘি শরীরের পক্ষে উপকারী হলেও অতিরিক্ত সেবনে বিপদ বাড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন দুই চামচের বেশি ঘি খাওয়া হৃদরোগ, স্থূলতা ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই ঘি খাওয়ার পরিমাণে সংযমই সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি।