জল পান পরামর্শ: শরীরের প্রতিটি কোষের কার্যকারিতা, মস্তিষ্কের সঠিক কাজ, জয়েন্ট সুস্থতা এবং হজম ঠিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত জল অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, মহিলা সাধারণত দিনে প্রায় ২.৭ লিটার, আর পুরুষরা ৩.৭ লিটার জল খাওয়া উচিত। সাধারণ নিয়ম অনুসারে দিনে ৮ বার ৮ আউন্স বা এক গ্লাস করে পানি পান করলে মোটামুটি ২ লিটারের কাছাকাছি জল পাওয়া যায়। তবে শারীরিক কার্যক্রম, আবহাওয়া বা অসুস্থতার ক্ষেত্রে এর চাহিদা বেড়ে যেতে পারে।
দৈনন্দিন জল পান কতটা জরুরি?
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা মানে শুধু তৃষ্ণা মেটানো নয়। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হজম প্রক্রিয়া, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, জয়েন্ট স্বাস্থ্য এবং কোষগুলোর কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত জল প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা জানান, শুধু পানীয় জল নয়, দৈনন্দিন খাবারের মধ্যে থাকা ফল, সবজি ও স্যুপ থেকেও শরীর জল পায়।
স্বাভাবিক পরিমাণের পরামর্শ
স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, মহিলাদের জন্য দৈনিক ২.৭ লিটার এবং পুরুষদের জন্য ৩.৭ লিটার জল পান করা উচিত। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকে সমস্ত পানীয় এবং খাবার থেকে পাওয়া জল। সাধারণভাবে বলা হয়, দিনে ৮ বার ৮ আউন্স বা এক গ্লাস করে পানি খাওয়া স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
বিশেষ পরিস্থিতিতে বেশি জল খাওয়ার প্রয়োজন
শারীরিক কার্যকলাপ বেশি হলে, ঘাম বেশি হয়, বা গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া থাকলে শরীর আরও জল চায়। এমন সময় প্রতি ৩০–৬০ মিনিট অন্তর ৩৫০–৭০০ মিলি পানি খাওয়া উচিত। এছাড়া জ্বর, ডায়রিয়া, বমি বা গর্ভাবস্থা ও স্তন্যপানকালীন মহিলাদেরও অতিরিক্ত জল গ্রহণ করতে হয়।
জলশূন্যতার লক্ষণ ও সতর্কতা
শরীরে পর্যাপ্ত জল না থাকলে লক্ষণ দেখা দেয় – গাঢ় হলুদ প্রস্রাব, শুষ্ক মুখ ও ত্বক, ফাটা ঠোঁট, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, দ্রুত হৃদস্পন্দন। শিশুদের ক্ষেত্রে কম ভেজা ডায়াপার, অলসতা ও ঢুলু-ঢুলু চোখ লক্ষ্য করা যেতে পারে। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবিলম্বে জল পান বৃদ্ধি করা জরুরি।
সঠিকভাবে জল পান করার নিয়ম
সকাল: ঘুম থেকে ওঠার পর ১ গ্লাস (২০০–৩০০ মিলি)
দুপুর: খাবারের সাথে ১ গ্লাস + বোতল থেকে চুমুক (৩০০–৪০০ মিলি)
বিকেল: বোতল থেকে চুমুক (৩০০–৪০০ মিলি)
ব্যায়ামের আগে/সময়/পরবর্তীতে: ২০০–৫০০ মিলি, প্রয়োজনে বেশি
সন্ধ্যা: রাতের খাবারের সাথে ১ গ্লাস, ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি এড়িয়ে চলা
দৈনন্দিন জীবনে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, শুধু পানীয় জল নয়, খাদ্যতালিকায় থাকা ফল ও সবজির জলও শরীরের জলের পরিমাণে যুক্ত হয়। দিনে সঠিক পরিমাণে জল পান করলে হজম, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও জয়েন্ট স্বাস্থ্য বজায় থাকে।