কৌশাম্বীতে নিজের ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, মা গ্রেপ্তার

কৌশাম্বীতে নিজের ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, মা গ্রেপ্তার
সর্বশেষ আপডেট: 9 ঘণ্টা আগে

কৌশাম্বীতে এক মহিলা তার নিজের ছেলেকে অপহরণ করে তার নানার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। পুলিশ সময় মতো ঘটনাটি উন্মোচন করে এবং শিশুটিকে নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়, যখন মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কৌশাম্বী: ইউপি-এর কৌশাম্বী জেলার মোহাব্বতপুর পইঁসা থানা এলাকায় একটি বিস্ময়কর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে এক মা তার নিজের ১০ বছরের ছেলেকে অপহরণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তার নানার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। পুলিশ তদন্তের পর শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে এবং মাকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনা স্থানীয় গ্রামবাসী ও কর্মকর্তাদের কাছেও চাঞ্চল্যকর ছিল।

এসপি কৌশাম্বী রাজেশ কুমার জানান যে শাহীন নামের এক মহিলা তার ছেলে আরশলালকে বাড়ির মধ্যে বন্ধ করে রাখে এবং নানা শামস উদ্দীনের কাছে একটি হুমকি চিঠি পাঠায়, যেখানে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরিবারে চিঠি পাওয়ার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং সাথে সাথে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

শিশুর নিখোঁজ হওয়ার রিপোর্ট 

মোহাব্বতপুর পইঁসা থানায় মহিলা শাহীন মঙ্গলবার রিপোর্ট দায়ের করেন যে তার ছেলে নিখোঁজ হয়েছে। তিনি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করেন। তবে, পরের দিন শিশুর নানা পুলিশকে সেই মুক্তিপণের চিঠিটি দেখান। এরপর পইঁসা কোতোয়ালীর ইন্সপেক্টর রোশন লাল পুরো এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেন।

পুলিশ আশেপাশের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পরীক্ষা শুরু করে এবং গ্রামবাসীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের সতর্ক প্রচেষ্টার কারণেই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পায় এবং এটি স্পষ্ট হয় যে এটি অপহরণের ঘটনা নয়, বরং মায়ের দ্বারা সাজানো একটি মিথ্যা নাটক ছিল।

শিশুকে বাড়ির ভেতরে নিরাপদে পাওয়া গেল

তল্লাশি অভিযানের সময় পুলিশ শিশুটির আওয়াজ সেই বাড়ির ভেতর থেকে শুনতে পায়। যখন দরজা ভাঙা হয়, তখন আরশলালকে সম্পূর্ণ নিরাপদে পাওয়া যায়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি স্পষ্টভাবে জানায় যে তার মা-ই তাকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছিল এবং বলেছিল যে নানার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে হবে। শিশুটি জানায় যে তাকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এই ঘটনার প্রকাশের পর মহিলা শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ শিশুটিকে অবিলম্বে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান যে মহিলার বিরুদ্ধে অপহরণ এবং মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মায়ের ষড়যন্ত্রে গ্রামবাসীদের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা সম্পর্কের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে এটি সমাজে একটি সতর্কতার সংকেত। পুলিশ কর্মকর্তারাও বলেছেন যে পরিবারের মধ্যে এমন ঘটনা প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

এসপি রাজেশ কুমার জানান যে মহিলা শাহীনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল টাকা আদায় করা এবং এখন তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনগণের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন যে তারা তাদের পরিবারের সুরক্ষার প্রতি সতর্ক থাকুন এবং এমন যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে অবিলম্বে পুলিশকে অবহিত করুন।

Leave a comment