কিষাণগঞ্জ স্টেশনে চাঞ্চল্য: শিশুকে ঘুমন্ত রেখে মায়ের উধাও, রেল সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন

কিষাণগঞ্জ স্টেশনে চাঞ্চল্য: শিশুকে ঘুমন্ত রেখে মায়ের উধাও, রেল সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন

কিষাণগঞ্জ রেল স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র মেলের S4 কোচে এক মহিলা তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে একজনকে আসনে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে, অন্যটিকে কোলে নিয়ে উধাও হয়ে যান। রেল সুরক্ষা ব্যবস্থার সংবেদনশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কিষাণগঞ্জ: উত্তর-পূর্ব বিহারের কিষাণগঞ্জ রেল স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র মেল (১৫৬৫৭) ট্রেনের S4 কোচে ভ্রমণকারী এক মহিলা তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে একজনকে আসনে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে, অন্যটিকে কোলে নিয়ে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যান। এই ঘটনা যাত্রীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং রেল সুরক্ষা ব্যবস্থার উপর গুরুতর প্রশ্ন তোলে। নিষ্পাপ শিশুটি একা এবং অসহায় অবস্থায় ট্রেনে রয়ে যায়।

যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাৎক্ষণিক সাহায্যের চেষ্টা করেন, কিন্তু মহিলাকে খুঁজে পেতে কেউ সফল হননি। ঘটনাটি স্পষ্ট করে দেয় যে রেল প্ল্যাটফর্ম এবং কোচে সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন।

সন্তানকে ট্রেনে রেখে মায়ের উধাও

সকালে ট্রেনটি কিষাণগঞ্জ স্টেশনে থামলে, মহিলা তাঁর এক সন্তানকে আসনে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে অন্যটিকে কোলে নিয়ে কোথাও চলে যান। এই দৃশ্য যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং হৃদয়বিদারক ছিল। অনেকে সেখানে দাঁড়িয়ে শিশুটির সুরক্ষার ব্যাপারে ভাবতে শুরু করেন।

যাত্রীরা তাৎক্ষণিক একে অপরের সাথে ঘটনাটি জানান এবং শিশুটির পাশে থাকার চেষ্টা করেন। নিষ্পাপ শিশুটির অসহায় অবস্থা ট্রেনে অন্য যাত্রীদেরও উদ্বিগ্ন করে তোলে এবং তাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের যত্ন

এই সময়ে, স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম লাল উপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবারও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। তারা কোচ এবং প্ল্যাটফর্মে মহিলাকে খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। যদিও তারা মাকে খুঁজে পেতে সফল হননি, তবে তাদের এই প্রচেষ্টা মানবিক সংবেদনশীলতার এক উদাহরণ হয়ে থাকে।

যাত্রীরাও শিশুটির দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। একজন মহিলা যাত্রী, যিনি প্রথম এই ঘটনাটি দেখেছিলেন, তিনি কাঁদতে থাকা শিশুটিকে সান্ত্বনা দিতে থাকেন এবং মায়ের ফেরার অপেক্ষা করতে থাকেন। এভাবেই, স্থানীয় এবং যাত্রীদের সংবেদনশীলতা শিশুটিকে অনিরাপদ থাকা থেকে বাঁচায়।

রেল সুরক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি

সচেতন নাগরিক বীরেন দুবে অবিলম্বে ট্রেন গার্ড এবং রেল সুরক্ষা বাহিনীকে (RPF) খবর দেন, কিন্তু RPF কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। সম্পূর্ণ দায়িত্ব সেই মহিলা যাত্রীর উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, যিনি নিজেই তখন বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিলেন।

ট্রেনটি প্রায় ১০ মিনিট স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল, গার্ড ক্রমাগত ওয়াকি-টকির মাধ্যমে সাহায্যের জন্য আবেদন করছিল, কিন্তু সুরক্ষা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি রেল সুরক্ষা ব্যবস্থার গুরুতর দুর্বলতা তুলে ধরে।

যাত্রী সুরক্ষা এবং শিশুদের অবহেলা

ট্রেন ছাড়ার পরেও নিষ্পাপ শিশুটি সেই সিটেই ঘুমিয়ে রইল। সে একা এবং অসহায় ছিল, যখন আশেপাশের যাত্রীরা তার সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টায় মগ্ন ছিলেন। এই দৃশ্য সকলের জন্য মানসিকভাবে কষ্টকর ছিল।

এই ঘটনা প্রশ্ন তুলেছে যে রেল এবং সুরক্ষা সংস্থাগুলো শিশু ও যাত্রীদের সুরক্ষার প্রতি কতটা গুরুতর। নিষ্পাপ শিশুটির অনিশ্চিত পরিস্থিতি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থায় উন্নতি আনা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a comment