মহারাষ্ট্রের ‘শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী’ প্রকল্প: প্রতি বছর ৫১ জন শিক্ষার্থী যাবে NASA-তে

মহারাষ্ট্রের ‘শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী’ প্রকল্প: প্রতি বছর ৫১ জন শিক্ষার্থী যাবে NASA-তে

महाराष्ट्र সরকার শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী প্রকল্প শুরু করেছে। প্রতি বছর ৫১ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে NASA-তে পাঠানো হবে। `তাহসিল`, জেলা এবং রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে। শিক্ষার্থীরা মহাকাশ বিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা লাভ করবে।

মুম্বাই: মহারাষ্ট্র সরকার বিজ্ঞান ও মহাকাশ গবেষণা (Space Research)-এ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে 'শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী' প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর রাজ্য স্তরের ৫১ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের NASA-তে পাঠানো হবে, যাতে তারা মহাকাশ এবং বিমান চালনা বিজ্ঞান (Aeronautic Science) ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ লাভ করতে পারে।

রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস জুন ২০২৫-এ এই প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিলেন, কিন্তু প্রকল্পটিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় তহবিল অনুমোদনের পরেই এটি কার্যকর করা হবে।

প্রতি বছর ৫১ জন শিক্ষার্থীকে NASA-তে পাঠানোর লক্ষ্য

স্কুল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ ভোয়ের এই প্রকল্পের তথ্য জানিয়ে বলেছেন যে, রাজ্য শিক্ষা বিভাগ প্রতি বছর ৫১ জন শিক্ষার্থীকে NASA-তে পাঠাবে। তিনি আরও বলেছেন যে, স্কুল স্তর থেকে শুরু করে জেলা এবং রাজ্য স্তর পর্যন্ত বিজ্ঞান প্রকল্প (Science Project) প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।

বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়, কিন্তু যে শিক্ষার্থীরা জিততে পারে না, তাদের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমকেও সম্মানিত করা হবে। এই কারণেই শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক স্তরে অভিজ্ঞতা অর্জনের এই সুযোগ দেওয়া হবে।

স্কুল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ ভোয়েরের বক্তব্য

পঙ্কজ ভোয়ের জানিয়েছেন যে, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানে আগ্রহ ধরে রাখা এবং তাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি আরও বলেছেন যে, শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান প্রকল্পের মাধ্যমে শিখবে, নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং ভবিষ্যতের জন্য বড় ধারণা নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেবল শিক্ষার্থীদের জ্ঞানই বাড়বে না, বরং তারা বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে বিজ্ঞান ও মহাকাশ প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও লাভ করবে।

প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন স্তরের ভ্রমণ

স্কুল শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, প্রকল্পটি তিনটি স্তরে বাস্তবায়িত হবে:

  • `তাহসিল` স্তরের প্রতিযোগিতা: `তাহসিল` স্তরে আয়োজিত বিজ্ঞান প্রকল্প প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ২১টি প্রকল্পধারী শিক্ষার্থীদের তাদের বিভাগের বিজ্ঞান কেন্দ্র পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হবে।
  • জেলা স্তরের প্রতিযোগিতা: জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ৫১টি প্রকল্পধারী শিক্ষার্থীদের বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত ISRO সদর দফতর পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হবে।
  • রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা: রাজ্য স্তরের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার ৫১ জন বিজয়ী শিক্ষার্থীকে 'মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী প্রকল্প'-এর আওতায় NASA-তে পাঠানো হবে।

এভাবে, শিক্ষার্থীরা ছোট স্তর থেকে শুরু করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তর পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবে।

খরচ এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা

'শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী প্রকল্প'-এর আওতায় NASA সফরের মোট ব্যয় প্রায় ৩ কোটি টাকা অনুমান করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল অনুমোদনের পরেই শিক্ষার্থীদের NASA সফর নিশ্চিত হবে।

জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিষদ (DPDC)-এর তহবিল `তাহসিল` এবং জেলা স্তরের ভ্রমণ আয়োজনের জন্য ব্যবহার করা হবে। রাজ্য স্তরের জন্য NASA সফরের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অনুমোদন প্রয়োজন।

প্রকল্প থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সুবিধা

  • শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক স্তরে NASA পরিদর্শন করার এবং বিজ্ঞান গবেষণায় অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবে।
  • বিজ্ঞান প্রকল্পের মাধ্যমে সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং পরীক্ষামূলক জ্ঞানের বিকাশ ঘটবে।
  • শিক্ষার্থীরা মহাকাশ এবং বিমান চালনা বিজ্ঞানে নতুন কর্মজীবনের সুযোগ পাবে।
  • রাজ্য স্তরের বিজয়ী শিক্ষার্থীরা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উচ্চ স্তরের এক্সপোজার পাবে।

শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ও নির্বাচন প্রক্রিয়া

'শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও আরী প্রকল্প'-এর অধীনে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিজ্ঞান প্রকল্প প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে করা হবে। শিক্ষার্থীদের `তাহসিল`, জেলা এবং রাজ্য স্তরে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

  • `তাহসিল` স্তর: প্রতিযোগিতায় সেরা ২১টি প্রকল্পের নির্বাচন।
  • জেলা স্তর: নির্বাচিত ৫১টি প্রকল্পের জন্য ISRO ভ্রমণ।
  • রাজ্য স্তর: শীর্ষ ৫১টি প্রকল্পধারী শিক্ষার্থীদের NASA-তে পাঠানো হবে।

এভাবে, নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে কর্মক্ষমতা ভিত্তিক হবে এবং শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম ও প্রতিভার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।

সরকারের প্রকল্প এবং দৃষ্টিভঙ্গি

মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস এবং স্কুল শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা চান যে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানে সর্বশেষ প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করুক। এই প্রকল্পটি যুবকদের বিজ্ঞানের প্রতি উৎসাহিত করতে এবং ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণা ও বিমান চালনা ক্ষেত্রে কর্মজীবন গড়তে অনুপ্রাণিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

রাজ্য সরকার বিশ্বাস করে যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকশিত হবে এবং মহারাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পাবে।

Leave a comment