মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবার নাম শুনেই ভয় লাগে। কিন্তু তার থেকেও নিঃশব্দে ভয়ঙ্কর শত্রু হলো সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ২০২৪ সালে ‘Brain Rot’ শব্দটিকে বছরের সেরা শব্দ হিসেবে বেছে নিয়েছে। কারণ বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষ আজ এই ডিজিটাল ফাঁদের শিকার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস দেখা শেষে মাথায় শূন্যতা, কাজের প্রতি অনাগ্রহ আর স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া— এগুলোই ব্রেন রটের লক্ষণ।
ব্রেন রট আসলে কী?
ব্রেন রট কোনও রোগ নয়, বরং এক প্রকার মানসিক অবস্থা। অগভীর ও অর্থহীন কনটেন্ট নিয়মিত গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের ফোকাস ও স্মরণশক্তি নষ্ট হতে থাকে। দীর্ঘ লেখা পড়তে ইচ্ছে করে না, সিনেমা শেষ করতে ধৈর্য থাকে না— এগুলোই এর স্পষ্ট লক্ষণ।
কীভাবে চেনা যাবে ব্রেন রটের লক্ষণ?
কাজের প্রতি মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা
ছোটখাটো তথ্যও ভুলে যাওয়া
সবসময় ক্লান্ত বোধ করা
বাস্তব জগতের মানুষের সঙ্গে মেলামেশায় অনীহাএই পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে, মস্তিষ্ক নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কেন হয় ব্রেন রট?
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি এমনভাবে তৈরি যে প্রতিটি নোটিফিকেশন বা ভিডিও আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণ ঘটায়। এই সাময়িক আনন্দই আমাদের বারবার স্ক্রিনে টেনে আনে। মাল্টিটাস্কিং ও দীর্ঘ স্ক্রিনটাইমও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে দুর্বল করে।
মুক্তি কীভাবে মিলবে?
ফোনে স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন
প্রতিদিন কিছু সময় অফলাইনে কাটান
শিক্ষামূলক ও সৃজনশীল কনটেন্ট দেখুন
ঘুমানোর আগে অন্তত এক ঘণ্টা স্ক্রিন এড়িয়ে চলুন
বন্ধু, পরিবার ও বাস্তব জীবনের কার্যকলাপে সময় দিন
ব্রেন রট (Brain Rot) কোনও মেডিক্যাল টার্ম নয়, বরং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তৈরি একটি শব্দ। দীর্ঘ সময় ধরে নিম্নমানের ও একঘেয়ে কনটেন্ট দেখার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, রিলস, শর্টস ও মিমে ডুবে থাকা মানুষের মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি ও সৃজনশীলতা ক্রমেই কমিয়ে দিচ্ছে।