মালদহে কৃষির নতুন দিশা: ফসলি জমি কেটে পুকুরে মাছ চাষে মোটা লাভের আশা

মালদহে কৃষির নতুন দিশা: ফসলি জমি কেটে পুকুরে মাছ চাষে মোটা লাভের আশা

মালদহ (Maldah) জেলার কালিয়াচক দুই ব্লকের একাধিক গ্রামে চাষিরা বদলে দিয়েছেন চাষাবাদের ধরন। আগে ধান, গম বা মৌসুমি ফসল চাষ হলেও বর্তমানে সেই ফসলি জমি কেটে পুকুর তৈরি হচ্ছে। তাতে চলছে মাছ চাষ (Fish Farming), যা থেকে সারা বছর আয়ের সুযোগ মিলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিকল্প এই পদ্ধতি স্থানীয় অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ফসল থেকে মাছ চাষে ঝোঁক

কালিয়াচক দুই ব্লকের রথবাড়ি থেকে গোসাইহাট পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা এখন আর ফসলি জমির জন্য নয়, বরং একের পর এক পুকুরের জন্য পরিচিত। প্রতিটি বাড়ির সামনের জমি কেটে তৈরি হয়েছে মাছ চাষের ক্ষেত্র। ধান বা গমের তুলনায় মাছ চাষে লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন এই নতুন পথে।

শতাধিক পুকুরে চলছে ব্যবসা

গ্রামের মূল রাস্তার ধারে প্রায় শতাধিক পুকুর তৈরি হয়েছে। রুই, কাতলা, মৃগেল—এই সব মাছের পোনা ছাড়ার পর তিন থেকে চার মাসেই বাজারে বিক্রির মতো বড় হয়ে ওঠে। মাছ চাষি মুজিবর রহমান জানান, তিনটি পুকুর লিজ নিয়ে তিনি এখন ভালো রোজগার করছেন। অন্যরাও নিজেদের জমি বা ভাড়াকরা জমিতে একই পথে হাঁটছেন।

আয়ের সারা বছরের সুযোগ

চাষিরা বলছেন, ধান বা গমের মতো ফসল মরশুমি হওয়ায় লাভ সীমিত। কিন্তু মাছ চাষে সারা বছরই আয় সম্ভব। ফলে পরিবারের খরচ মেটানোর পাশাপাশি বাড়তি রোজগারের পথও খুলছে। এক গ্রামবাসী বলেন, “আগে শুধু ধান চাষ হত। এখন গ্রামে যত জমি ছিল, প্রায় সবই পুকুরে পরিণত হয়েছে।

বিকল্প কৃষির নতুন দিশা

মালদহ জেলা আগে থেকেই আম আর রেশমের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এখন মাছ চাষও গ্রামের চাষিদের বিকল্প রোজগারের হাতিয়ার হয়ে উঠছে। কৃষিবিদরা মনে করছেন, এই পদ্ধতি চাষিদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করবে। বিশেষত যেসব পরিবার ঋণের দায়ে জর্জরিত, তাদের জন্য মাছ চাষ নতুন ভরসা হতে পারে।

চ্যালেঞ্জও আছে

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, অতিরিক্ত জমি পুকুরে রূপান্তরিত হলে ভবিষ্যতে খাদ্যশস্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি মাছ চাষে প্রয়োজনীয় খরচ, রোগব্যাধি ও বাজারদরের ওঠানামাও ঝুঁকি তৈরি করে। তাই পরিকল্পনা ছাড়া এই পথে নামলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে।

Profit Making Business: মালদহের বহু গ্রামে চাষিরা এখন ফসলের জমি কেটে তৈরি করছেন পুকুর। সেখানে রুই, কাতলা, মৃগেলের মতো মাছ চাষ করে বছরে সারা সময়ই আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। মৌসুমি কৃষির বদলে বিকল্প এই উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেখাচ্ছে।

Leave a comment