মানুসী ছিল্লরের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মালিক’ বক্স অফিসে ভালো শুরু করেছে। মাত্র ৬ দিনে ছবিটি ১৯ কোটি টাকার বেশি কালেকশন করেছে।
বিনোদন: মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭ এবং বর্তমানে অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মানুসী ছিল্লর তাঁর সাম্প্রতিক মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'মালিক' নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন। ছবির বর্তমান পারফরম্যান্স এবং দর্শকদের প্রতিক্রিয়ায় মানুসী খুবই উৎসাহিত। 'মালিক' এর মাধ্যমে মানুসী প্রমাণ করেছেন যে তিনি শুধু সৌন্দর্যের জন্য নন, তাঁর অভিনয় দক্ষতার জন্যও পরিচিত হবেন।
ছবিটি ৬ দিনে ১৯ কোটি টাকার বেশি বক্স অফিস কালেকশন করেছে। মানুসী ছিল্লর একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তাঁর ক্যারিয়ার, 'মালিক'-এর সাফল্য এবং ইন্ডাস্ট্রির পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
'মালিক' থেকে পাওয়া প্রশংসা আমার কাছে খুব বিশেষ
মানুসী বলেন, যখন 'মালিক' মুক্তি পায় এবং আমি সিনেমা হলে দর্শকদের আমার অভিনয়ে তালি দিতে দেখি, সেই মুহূর্ত আমার জন্য অবিস্মরণীয় ছিল। এটি আমার ক্যারিয়ারের প্রথম সুযোগ ছিল যখন প্রকাশ্যে আমার অভিনয় এত প্রশংসা পেয়েছিল। স্ক্রিনিংয়ের পরে ইন্ডাস্ট্রির অনেক লোক আমাকে ফোন করে বলেছে যে তারা আমার কাজ উপভোগ করেছে। এই জিনিসটা আমার জন্য খুব বিশেষ ছিল। আমার মনে হয়েছিল আমার পরিশ্রম এখন দৃশ্যমান হচ্ছে।
ছবিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মানুসী বলেন, প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। আমি আনন্দিত যে সিনেমা হলে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল। সমালোচকদের মতামতও জরুরি, তবে আমার জন্য সবচেয়ে বড় জয় তখনই হয় যখন সাধারণ দর্শক আমার চরিত্রটিকে অনুভব করতে পারে।
'পৃথ্বীরাজ' থেকে 'মালিক' পর্যন্ত ইন্ডাস্ট্রির পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি
মানুসী বিশ্বাস করেন যে ইন্ডাস্ট্রিতে এখন তাঁর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হয়েছে। যখন আমি 'পৃথ্বীরাজ' করেছিলাম, তখন লোকেরা বলেছিল যে এটি আমার প্রথম সিনেমার মতো লাগছে না। স্ক্রিন উপস্থিতি এবং আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা অবশ্যই হয়েছিল, তবে 'মালিক' এর পরে প্রথমবারের মতো অনুভব করলাম যে লোকেরা কেবল আমাকে দেখেনি, আমার কাজকেও অনুভব করেছে। এটি আমার জন্য একটি বড় পরিবর্তন।
মানুসী বলেন, আমি ইন্ডাস্ট্রিতে বহিরাগত, তাই কখনো আশা করিনি যে প্রথম ছবিতেই স্বপ্নের চরিত্র পাব। আমার জন্য 'মালিক' সেই সুযোগ ছিল, যেখানে আমি পারফরম্যান্সের স্তরে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। 'শালিনী'র চরিত্রটি শুধু একটি রোল নয়, বরং এমন একটি সুযোগ ছিল যেখানে আমি আমার দক্ষতা দেখাতে পেরেছি।
আইকনিক চরিত্র করার আকাঙ্ক্ষা
মানুসী জানান, সুযোগ পেলে তিনি 'দেবদাস' ছবির 'পারো'-র মতো চরিত্রে অভিনয় করতে চান। তাঁর মতে, "ঐ চরিত্রে আবেগ, মাধুর্য এবং মর্মান্তিক সৌন্দর্য সবকিছুই রয়েছে। একজন অভিনেতা হিসেবে ঐ রোল আমাকে খুব উৎসাহিত করে। বিখ্যাত হওয়ার পরে ব্যক্তিগত পরিবর্তন সম্পর্কে মানুসী বলেন, আমি এখনও সেই একই মানুষ, পার্থক্য শুধু এটাই যে এখন আমি ক্যামেরা এবং মানুষের মনোযোগের সাথে আরও স্বচ্ছন্দ বোধ করি। শুরুতে ছোট ছোট জিনিসও বড় মনে হতো, কিন্তু এখন সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে।"
মানুসীর বিশ্বাস, ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য নিজের লক্ষ্য পরিষ্কার রাখা সবচেয়ে জরুরি। "লোকেরা পরামর্শ দেবে, কিন্তু সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে। আমার মনোযোগ সবসময় নিজেকে আরও উন্নত করার দিকে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।"
ফিল্ম, ব্যবসা এবং সমাজসেবার মধ্যে ভারসাম্য কীভাবে বজায় রাখেন?
মানুসী বলেন, আমি সবসময় মাল্টিটাস্কার। মিস ইন্ডিয়ার প্রস্তুতির সময়ও পড়াশোনা করেছি, তাই ভারসাম্য বজায় রাখতে শিখেছি। শুটিংয়ের সময় পুরো মনোযোগ থাকে ফিল্মের উপর, তবে সময় পেলেই নিজের ওয়েলনেস প্রজেক্ট এবং ব্র্যান্ডগুলিকেও সময় দিই। মানুসী জানান, খুব কম লোকই জানে যে তিনি পেইন্টিংয়েও পারদর্শী। আমার পেইন্টিং মানুষের অনুভূতি এবং আবেগ প্রকাশ করে। রঙ এবং আকারের মাধ্যমে আমি তা বলার চেষ্টা করি যা শব্দে সম্ভব নয়।
মানুসী বলেন, এমন মুহূর্ত সবার জীবনে আসে, যখন মনে হয় সবকিছু ক্লান্তিকর। কিন্তু আমি এখনও আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে আছি, এই বয়সে হাল ছেড়ে দেওয়া ভুল। নিজেকে তুলে ধরে আবার এগিয়ে যাওয়াই আসল শক্তি। রেশেল গুপ্তার অভিযোগের বিষয়ে মানুসী বলেন, মিস ওয়ার্ল্ডে আমার অভিজ্ঞতা সবসময় সম্মানজনক ছিল। আজকের দিনে সমস্ত সংস্থার উচিত প্রতিযোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সম্মানের বিষয়ে সচেতন থাকা।
মানুসীর বক্তব্য, এই ক্ষেত্রটিকে শুধু গ্ল্যামারের জন্য নয়, পরিশ্রমের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখুন। "মিস ওয়ার্ল্ডের রাত সবাই দেখে, কিন্তু এর পেছনের পরিশ্রম কেউ জানে না। অভিনয়েও প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। যদি আপনার মনোযোগ খ্যাতি নয়, বরং আরও ভালো কাজ হয় তবে এই যাত্রা আপনার জন্য সুন্দর হতে পারে।"