New Income Tax Bill 2025-এর পর্যালোচনামূলক রিপোর্ট সোমবার লোকসভায় পেশ করা হবে। এতে ২৮৫টি পরিবর্তন, কম ধারা এবং সহজ ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিলটি পুরনো ১৯৬১ সালের अधिनियमের স্থান নেবে।
New Income Tax Bill 2025: ভারতে ট্যাক্স ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। ছয় দশক পুরনো ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্ট ১৯৬১-এর জায়গায় এখন নতুন এবং সহজ 'New Income Tax Bill 2025' আনা হচ্ছে। সোমবার লোকসভায় এর সংসদীয় পর্যালোচনা রিপোর্ট পেশ করা হবে। এই নতুন বিলে ২৮৫টি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ভাষা আগের চেয়ে সহজ এবং স্পষ্ট হবে, যা থেকে করদাতারা স্বস্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কেন জরুরি এই নতুন ট্যাক্স বিল?
দেশে বিদ্যমান ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্ট ১৯৬১ গত ৬০ বছর ধরে লাগু আছে। সময়ের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো, ব্যবসার মডেল, ডিজিটাল লেনদেন এবং বিশ্বব্যাপী ট্যাক্স নিয়মে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পুরনো আইনে বারবার সংশোধন করার ফলে সেটি জটিল এবং ভারী হয়ে গেছে। সরকার এই পরিস্থিতি বদলানোর জন্য একটি নতুন বিল তৈরি করেছে যা কেবল সরলই হবে না, করদাতাদের জন্য আরও বেশি স্বচ্ছ এবং বোধগম্য হবে।
নতুন বিল আগে থেকে কতটা আলাদা?
ধারার সংখ্যায় হ্রাস: বর্তমান আয়কর আইনে যেখানে ৮১৯টি ধারা ছিল, সেখানে নতুন ট্যাক্স বিলে এখন কেবল ৫৩৬টি ধারা থাকবে। অর্থাৎ প্রায় ৩৫% কমানো হয়েছে। এতে ট্যাক্স নিয়ম সরল করার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
শব্দের সংখ্যা অর্ধেক: Income Tax Department কর্তৃক প্রকাশিত বিবরণ অনুযায়ী, পুরনো আইনে প্রায় ৫.১২ লক্ষ শব্দ ছিল, যেখানে নতুন বিলে কমিয়ে ২.৬ লক্ষ শব্দ করা হয়েছে। এতে ভাষায় স্পষ্টতা এবং সরলতা নিশ্চিত করা হবে।
অধ্যায়ের সংখ্যাও কমেছে: বর্তমান আইনে ৪৭টি অধ্যায় আছে, যেখানে নতুন বিলে এখন কেবল ২৩টি অধ্যায় থাকবে।
২৮৫টি পরিবর্তনের তাৎপর্য কী?
৩১ সদস্যের সংসদীয় কমিটি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পাণ্ডা, এই বিলের গভীর পর্যালোচনা করেছে। এই রিপোর্টে মোট ২৮৫টি প্রস্তাব এবং পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পরিবর্তনগুলি ট্যাক্স স্ট্রাকচারকে আরও বেশি কার্যকরী, সরল এবং মামলা-মোকদ্দমা মুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই কমিটি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা কর্তৃক ১৩ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয়েছিল, যখন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নতুন বিলটি সংসদে পেশ করেছিলেন। কমিটির রিপোর্ট এখন সংসদের বাদল অধিবেশনে সোমবার পেশ করা হবে।
ট্যাক্সপেয়ারদের জন্য কী বদলাবে?
ট্যাক্স ইয়ারের ধারণা: সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হল 'Assessment Year' এবং 'Previous Year'-এর জায়গায় 'Tax Year' চালু করা। এতদিন আগের অর্থবর্ষের আয়ের উপর পরবর্তী অর্থবর্ষে ট্যাক্স দিতে হত। নতুন নিয়মের অধীনে ট্যাক্স নির্ধারণ একই বছরে হবে, যা ট্যাক্স পদ্ধতি এবং পরিশোধ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনবে।
TDS/TCS এবং ট্যাক্স বেনিফিটস: নতুন বিলে TDS (Tax Deducted at Source) এবং TCS (Tax Collected at Source) স্পষ্ট করার জন্য ৫৭টি টেবিল যোগ করা হয়েছে। বর্তমান আইনে কেবল ১৮টি টেবিল ছিল। এতে করদাতারা সহজেই বুঝতে পারবেন যে কোন পরিস্থিতিতে ট্যাক্স কাটা হবে এবং কত হারে কাটা হবে।
আইনি ব্যাখ্যায় कटौती: নতুন বিলে ১,২০০টি বিধান এবং ৯০০টি স্পষ্টীকরণ সরানো হয়েছে। এতে আইনি জটিলতা কম হবে এবং মামলা-মোকদ্দমার সংখ্যাও কমবে বলে আশা করা যায়।
সংসদে রিপোর্ট পেশ হওয়ার পর কী হবে?
নতুন ট্যাক্স বিলের ওপর কমিটির রিপোর্ট ২১ জুলাই লোকসভায় পেশ করা হবে, যা সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন। এই অধিবেশন ২১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২১ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত চলবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে এখন সংসদে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যার মধ্যে আলোচনা, সংশোধন এবং তারপর বিলটি পাশ করানো অন্তর্ভুক্ত। যদি এই বিল উভয় কক্ষ থেকে পাশ হয়, তাহলে ২০২৬-২৭ সাল থেকে নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা লাগু হতে পারে।
ট্যাক্সপেয়ারদের কী লাভ হবে?
- কম ধারা এবং শব্দের সংখ্যার কারণে আইন বোঝা সহজ হবে।
- বিবাদের সংখ্যা কমবে এবং মামলা-মোকদ্দমায় স্বস্তি মিলবে।
- ট্যাক্স ইয়ারের ধারণার ফলে পেমেন্ট এবং ফাইলিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে।
- TDS এবং TCS-এর সঙ্গে জড়িত নিয়ম আরও স্বচ্ছ এবং স্পষ্ট হবে।