নয়ডায় এক অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসারের বাড়িতে তাঁর নেপালী গৃহকর্মী একটি সংগঠিত চক্রের সাথে মিলে চুরি করেছে। লক্ষাধিক টাকার নগদ ও গহনা চুরি করা হয়েছে, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
নয়ডা: সেক্টর-39-এ বসবাসকারী অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসার দেবদত্ত শর্মার বাড়িতে বড় চুরির ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অফিসারের সম্প্রতি নিযুক্ত নেপালী গৃহকর্মী প্রকাশ বাহাদুর তার সহযোগীদের সাথে মিলে লক্ষাধিক টাকার গহনা, নগদ এবং মূল্যবান সামগ্রী চুরি করেছে। কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এটি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পরিকল্পনা ছিল, যারা গৃহকর্মীদের মাধ্যমে বাড়িতে ঢুকে চুরি করে।
অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসারের বাড়িতে চুরি
অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসার দেবদত্ত শর্মা এবং তাঁর স্ত্রী লখনউ গিয়েছিলেন। চুরির রাতে, আনুমানিক রাত 1টায়, গৃহকর্মী প্রকাশ বাহাদুর তার সহযোগীদের বাড়িতে ডাকে এবং মারুতি গাড়িতে করে এসে চুরি করে। চোরেরা লকার ও আলমারি ভেঙে লক্ষাধিক টাকার গহনা, নগদ এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছিল। বাড়ির ভেতরে থাকা সমস্ত ঘর এবং আলমারি পরীক্ষা করার পরেই চুরিটি করা হয়। এই ঘটনাটি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চুরিতে গৃহকর্মীদের নেটওয়ার্কের তদন্ত
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে যে এই ঘটনায় কেবল গৃহকর্মীই জড়িত ছিল না, বরং তার সহযোগীদেরও হাত রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে এটি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পরিকল্পনা হতে পারে। এই চক্রের সদস্যরা গৃহকর্মীদের মাধ্যমে বাড়িতে ঢুকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চুরি করে।
পুলিশ আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে এবং বাড়িতে উপস্থিত সকলের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে গৃহকর্মীদের নেটওয়ার্কের উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং অপরাধীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
লখনউতে IPS অফিসারের বাড়িতে চুরির ঘটনা
এই ঘটনা নয়ডা এবং আশেপাশের অঞ্চলে নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরে। সম্প্রতি লখনউতে 2012 ব্যাচের IPS অফিসার যমুনা প্রসাদের বাড়িতেও চুরি হয়েছিল। অফিসার এবং তাঁর পরিবার নয়ডায় ছিলেন, যখন বাড়ির দেখাশোনা আত্মীয়রা করছিলেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় যে পেছনের জানালার গ্রিল কাটা হয়েছে এবং ঘরের মধ্যে ভাঙচুর করা হয়েছে। চুরির সময় বেশ কয়েকটি দেয়াল ঘড়ি, হাতঘড়ি, রূপার মুদ্রা, বাসনপত্র এবং নগদ টাকা পাওয়া যায়নি। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে যে চোরেরা বাড়ির রেকি করে সতর্কতার সাথে চুরির পরিকল্পনা করেছিল।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন
সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলি গৃহকর্মীদের মাধ্যমে সংঘটিত চুরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বাড়ির নিরাপত্তা এবং নজরদারি ব্যবস্থা কঠোর করার প্রয়োজন রয়েছে। কেবল সিসিটিভি ক্যামেরা বা স্থানীয় প্রহরী যথেষ্ট নয়, বরং বাড়ির কর্মীদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেকও বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
পুলিশ এই ঘটনার পর এলাকায় সতর্কতা বাড়িয়েছে এবং সমস্ত গৃহকর্মীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন যে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।