বলিউডে নায়ক ও নায়িকার মধ্যে সমতার বিষয়টি সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে — সেটা পারিশ্রমিকের পার্থক্য হোক, স্ক্রিন স্পেসের বিষয় হোক, অথবা প্রচার ও অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রেই হোক। সময়ে সময়ে অনেক অভিনেত্রী এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিজেদের কণ্ঠ সোচ্চার করেছেন।
Nushrratt Bharuccha: বলিউড অভিনেত্রী নুসরত ভারুচা সম্প্রতি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নায়ক ও নায়িকার মধ্যেকার বৈষম্য নিয়ে বড় মন্তব্য করেছেন। নুসরত জানিয়েছেন, কীভাবে পুরুষ অভিনেতাদের মহিলা শিল্পীদের তুলনায় ফিল্ম সেটে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় — তা ভ্যানিটি ভ্যানের ক্ষেত্রেই হোক বা ক্যারিয়ারের সুযোগের ক্ষেত্রেই হোক। তাঁর এই বক্তব্য আবারও বলিউডে লিঙ্গ সমতার (Gender Equality in Bollywood) বিষয়টিকে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
দুই দশকের অভিজ্ঞতা, এবার মুখ খুললেন নুসরত
প্রায় দুই দশক ধরে হিন্দি সিনেমায় কাজ করা নুসরত ভারুচা 'প্যায়ার কা পঞ্চনামা', 'সোনু কে টিটু কি সুইটি' এবং 'ড্রিম গার্ল'-এর মতো হিট সিনেমাতে কাজ করে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ফিল্ম সেটে অভিনেত্রীদের সঙ্গে ব্যবহার এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি সমান নয়। নুসরত বলেছেন, অনেকবার এমন হয়েছে যে, আমি নিজের ভ্যানিটি ভ্যানে ওয়াশরুমের সুবিধা ভালো না লাগায় জিজ্ঞাসা করেছি – আমি কি নায়কের ভ্যানিটি ভ্যান ৫ মিনিটের জন্য ব্যবহার করতে পারি? কারণ তিনি সেই সময় সেটে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর ওয়াশরুম আমার থেকে ভালো ছিল।
যদিও তিনি এটাও যোগ করেছেন যে, সেই সময় তিনি এই নিয়ে কোনো বিতর্ক করেননি, কারণ তিনি নিজেকে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন — আমি নিজেকে সেই জায়গায় নিয়ে যাব, যেখানে এই জিনিসগুলো আমি নিজেই পাব।
হিট দেওয়া মাত্রই নায়কেরা পেয়ে যান প্রোজেক্ট, নায়িকাদের করতে হয় অপেক্ষা
নুসরত ইন্ডাস্ট্রিতে পুরুষ ও মহিলা শিল্পীদের মধ্যে সুযোগের ক্ষেত্রেও বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন: কোনো ছেলে হিট দেওয়া মাত্রই — সে ইনসাইডার হোক বা আউটসাইডার — তাকে সঙ্গে সঙ্গে ৪-৫টি নতুন প্রোজেক্টের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়েদের জন্য এটা এত সহজ হয় না। তাদের অনেক বেশি সংগ্রাম করতে হয়।
তাঁর বক্তব্য, একজন মহিলা শিল্পী হিট দেওয়া সত্ত্বেও ভবিষ্যতের জন্য সুযোগ পেতে সময় লাগে, যেখানে পুরুষ শিল্পীদের 'ফাস্ট-ট্র্যাক'-এ নিয়ে যাওয়া হয়।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পুরনো বিতর্ক, নতুন কণ্ঠ
নুসরতের এই বক্তব্য এমন সময় এসেছে, যখন ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক মহিলাই এর আগে জেন্ডার পে গ্যাপ ও বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। এর আগে দীপিকা পাডুকোন, কঙ্গনা রানৌত এবং তাপসী পান্নুর মতো অভিনেত্রীরাও এই বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। নুসরতের এই দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে যে, বলিউডে পরিবর্তনের প্রয়োজন — শুধু পর্দায় নয়, পর্দার পেছনের ব্যবহারেও।
তবে নুসরত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সময় অভিযোগের পরিবর্তে ইতিবাচক চিন্তাভাবনাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি নিজেকে শক্তিশালী করতে চান, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সুবিধার জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে না হয়। আমি যেন এই জিনিসগুলো নিজেই পাই, তার জন্য আমি পরিশ্রম করছি। আমি জানি, একদিন আমি সেই জায়গায় পৌঁছে যাব।