পাকিস্তানে জুনে আসা বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৪০ জন শিশু। ৭০০ জনের বেশি আহত এবং ১৬৭৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণকার্য চলছে এবং আবারও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
Pakistan Flood: পাকিস্তান বর্তমানে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয়ের শিকার। জুন ২০২৫-এর শেষ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আসা বন্যায় ২৯৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের মধ্যে ১৪০ জন শিশু রয়েছে। পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) এই তথ্য জানিয়েছে। এছাড়াও ৭০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার পরিবারের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।
বন্যায় ১৬৭৬টি বাড়ির ক্ষতি
NDMA-র মতে, দেশজুড়ে আসা বন্যায় এ পর্যন্ত ১৬৭৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬২টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে, যেখানে ১১৪টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা শুধু মানুষের জীবন এবং ঘরবাড়িকেই নয়, বরং জীবিকার উপায়কেও প্রভাবিত করেছে। ৪০০-র বেশি গবাদি পশু মারা গেছে, যা গ্রামীণ এলাকার অর্থনীতিকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
২২৩টি ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান
দুর্যোগের এই পরিস্থিতিতে NDMA এ পর্যন্ত ২২৩টি ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানগুলোর মাধ্যমে ২৮৮০ জনের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ত্রাণকার্যের অধীনে ১৩,৪০০-র বেশি জরুরি সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০০০টি তাঁবু, ৯৫৮টি কম্বল, ৫৬৯টি লেপ, ৬১৩টি গদি এবং ১১০০-র বেশি খাবারের প্যাকেট রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণকার্য চলছে
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সরকার এবং ত্রাণ সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ক্রমাগত ত্রাণকার্য চালানো হচ্ছে। মানুষদের অস্থায়ী শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং তাদের খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। NDMA-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজন পড়লে অতিরিক্ত সম্পদও ব্যবহার করা হবে।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা
পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর সতর্কতা জারি করে বলেছে যে ৪ অগাস্ট থেকে ৬ অগাস্টের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে আবারও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে বন্যার পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে। সরকার সমস্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সতর্ক থাকার এবং সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
বারবার বিপর্যয়ের শিকার পাকিস্তান
গত কয়েক বছরে পাকিস্তান ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সহ্য করছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের মতো বিপর্যয় এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা দরকার, যাতে এই ধরনের সংকটগুলোর সঙ্গে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করা যায়।
জনজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
বন্যায় শুধু জানমালের ক্ষতিই হয়নি, জনজীবনও সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হয়েছে। রাস্তাঘাট, সেতু এবং बुनियादी ढांचेের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্কুল, হাসপাতাল এবং বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।