রাজ্যের একমাত্র বিধানসভা আসন আন্টায় উপনির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। বুধবার থেকেই রাজনৈতিক দলগুলির জোরদার প্রচার শুরু হয়েছে। তাদের প্রার্থীদের সমর্থনে দলের তারকা প্রচারকরা ভোটারদের ভোট দিতে উৎসাহিত করার জন্য ছোট ছোট সভা এবং রোড শো আয়োজন করবেন।
বারাঁ: রাজস্থানের আলোচিত আন্টা বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের রাজনৈতিক উত্তাপ এখন দ্রুত বাড়ছে। যেমন যেমন ভোটগ্রহণের তারিখ (১১ নভেম্বর) কাছে আসছে, তেমনই কংগ্রেস, বিজেপি এবং অন্যান্য দলের তারকা প্রচারকদের জোরদার আগমনে নির্বাচনী যুদ্ধ আরও উত্তপ্ত হচ্ছে। একদিকে কংগ্রেসের তারকা প্রচারক সচিন পাইলট আজ থেকে প্রচারের দায়িত্ব নিচ্ছেন, অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে বৃহস্পতিবার রোড শো-এর মাধ্যমে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে মাঠে নামবেন। এর সাথে আরএলপি সুপ্রিমো হনুমান বেনিওয়ালের মাঠে নামার আলোচনাও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ত্রিমুখী করে তুলেছে।
কংগ্রেসের কৌশল: পাইলট, ডোটাসারা এবং রন্ধাওয়া মাঠে
কংগ্রেস আন্টা উপনির্বাচনে তাদের সম্পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেছে। দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট বুধবার এলাকায় তিনটি বড় রোড শো করবেন। কংগ্রেসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাইলটের রোড শো আন্টা এনটিপিসি তিঁরাহা থেকে শুরু হবে, যা শহরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে যাবে। এরপর তিনি সিসওয়ালি এবং মাংরোলেও রোড শো ও পথসভা করবেন।
পাইলটের সাথে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিং ডোটাসারা এবং প্রদেশ ইনচার্জ সুখবিন্দর সিং রন্ধাওয়াও উপস্থিত থাকবেন। এই দুই নেতা গত তিন দিন ধরে আন্টা বিধানসভা কেন্দ্রে ঘাঁটি গেড়ে আছেন। কংগ্রেস এই উপনির্বাচনের জন্য প্রায় ৫৬ জন নেতাকে বিভিন্ন এলাকার দায়িত্ব দিয়েছে, যাতে প্রচার অভিযানকে তৃণমূল স্তরে শক্তিশালী করা যায়। দলের প্রার্থী প্রমোদ জৈন ভায়ার সমর্থনে কংগ্রেসের এই 'অল-আউট ক্যাম্পেইন' এখন গতি পেয়েছে।

বিজেপির পাল্টা আঘাত: বসুন্ধরা-ভজনলাল করবেন যৌথ রোড শো
কংগ্রেসের আক্রমণাত্মক কৌশলের জবাবে ভারতীয় জনতা পার্টিও তাদের সবচেয়ে বড় মুখগুলোকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৬ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে আন্টা ও মাংরোলে যৌথ রোড শো করবেন। বসুন্ধরা রাজে গত তিন দিন ধরে এলাকায় ক্রমাগত ঘাঁটি গেড়ে আছেন এবং কর্মীদের সাথে দেখা করে কৌশল তৈরি করছেন। তার ছেলে এবং সাংসদ দুষ্মন্ত সিং এই উপনির্বাচনের দায়িত্বে আছেন, এবং তারই পছন্দের প্রার্থী মোরপাল সুমনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।
এই আসনে রাজের সম্মান ঝুঁকির মধ্যে, কারণ এই এলাকাটি তার রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, বিজেপি রাজ্য সভাপতি মদন রাঠোর, উপ-মুখ্যমন্ত্রী ড. প্রেমচাঁদ বেরওয়া এবং অনেক মন্ত্রী-বিধায়ক ইতিমধ্যেই আন্টা এলাকায় শিবির করছেন। দল প্রায় দুই ডজন প্রবীণ নেতাকে প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছে।
তৃতীয় জোটের প্রবেশ: হনুমান বেনিওয়াল পাল্টে দিতে পারেন সমীকরণ
এবার আন্টা উপনির্বাচন কেবল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে যে রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি (RLP)-এর সুপ্রিমো হনুমান বেনিওয়ালও ৭ নভেম্বর মাঠে নামতে পারেন। জানা যাচ্ছে যে বেনিওয়াল নির্দলীয় প্রার্থী নরেশ মীনার সমর্থনে প্রচার করবেন। মীনাকে আম আদমি পার্টি (AAP)ও সমর্থন দিয়েছে, এবং প্রাক্তন মন্ত্রী রাজেন্দ্র গুড়া তার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচার করছেন।
যদি হনুমান বেনিওয়াল সত্যিই প্রচারে নামেন, তাহলে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ত্রিমুখী (Triangular Contest) হতে পারে, যার ফলে কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়ের জন্যই সমীকরণ বদলে যেতে পারে। আন্টা উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ ১১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন অনুসারে, ৯ নভেম্বর প্রচার শেষ হবে, যখন ১০ নভেম্বর ভোটগ্রহণ দলগুলি রওনা হবে। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তাদের প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারের জন্য এখন মাত্র ৫ দিন সময় আছে।












