শীর্ষ আদালতের রায়, পার্থ পেলেন জামিন
পুজোর আগেই বড় স্বস্তি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে মিলল জামিন। ইডি মামলায় আগেই জামিন পেয়েছিলেন তিনি। এবার সিবিআইয়ের তদন্তাধীন মামলাতেও সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিন মেলে। সোমবার বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ ও বিচারপতি এনকে সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
ইডি মামলার পর এবার সিবিআই মামলা
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন ধরেই তদন্তের মুখে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রথমে ইডির হাতে গ্রেফতার, তারপর সিবিআইয়ের জেরা। ইডির মামলায় আগেই শর্তসাপেক্ষে জামিন পান প্রাক্তন মন্ত্রী। এবার সিবিআইয়ের মামলাতেও একই শর্তে জামিন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের মতে, তদন্তের স্বার্থে তিনি সহযোগিতা করবেন এবং কোনওভাবেই প্রভাব বিস্তার করবেন না।
সহ-অভিযুক্তদেরও মিলল মুক্তি
শুধু পার্থ নন, এই মামলায় অভিযুক্ত সুবীরেশ ভট্টাচার্য ও শান্তিপ্রসাদ সিনহারও জামিনের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। নীচুতলার বহু কর্মী ও আধিকারিক ইতিমধ্যেই জামিন পেয়েছেন। সেই নজির টেনেই পার্থের জামিনের আবেদনও গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছে বেঞ্চ।
আদালতের শর্তে কঠোর নজরদারি
জামিন পেলেও পার্থর মুক্তির পথে একাধিক শর্ত জুড়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে নিজের পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে। তাছাড়া অনুমতি ছাড়া কলকাতা ছেড়ে বাইরে যাওয়া চলবে না। আইন ভাঙলে জামিন খারিজ হতে পারে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে আদালত।
তবুও আপাতত জেলমুক্তি নয়
আইনি স্বস্তি পেলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনই মুক্ত হচ্ছেন না। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে প্রাথমিক স্তরের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত আরও কয়েকটি মামলা এখনও বিচারাধীন। সেসব মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জেলবন্দিই থাকতে হবে প্রাক্তন মন্ত্রীকে। ফলে আদালতের নির্দেশ শোনার পরও পরিবারের সদস্যরা কিছুটা আশাহত।
দীর্ঘদিনের বন্দি জীবন, এখনও শেষ নয় লড়াই
২০২২ সালে গ্রেফতারের পর থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় কারাগারেই রয়েছেন। দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তির পথ সুগম হয়নি। রাজনীতির মঞ্চ থেকে অনেকটাই ছিটকে গিয়েছেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসও দূরত্ব বজায় রেখেছে। এখন প্রশ্ন, একের পর এক মামলায় জামিন মিললেও শেষ পর্যন্ত কি সত্যিই মুক্তি মিলবে পার্থর?
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে। বিরোধী শিবিরের দাবি, আদালতের সিদ্ধান্তে প্রমাণিত, ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্তে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। অন্যদিকে, শাসকদলের একাংশ আবার বলছে—আইনের লড়াই নিজের জায়গায় চলবে, তবে পার্থর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।
পুজোর আগে স্বস্তির হাওয়া, কিন্তু ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
আগামী দিনে বড় উৎসবের আগে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নিঃসন্দেহে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে স্বস্তির বার্তা। তবে এখনও একাধিক মামলা বাকি। সেই মামলাগুলোর নিষ্পত্তি না হলে তিনি কার্যত জেলমুক্ত হতে পারবেন না। ফলে আপাতত স্বস্তি মিললেও মুক্তির পথে আঁধার কাটছে না।