১৫০ কোটি টাকার বিটকয়েন কেলেঙ্কারি: রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিট

১৫০ কোটি টাকার বিটকয়েন কেলেঙ্কারি: রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিট
সর্বশেষ আপডেট: 3 ঘণ্টা আগে

শুক্রবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে বিটকয়েন কেলেঙ্কারির মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে। এজেন্সির অভিযোগ, কুন্দ্রা কেবল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেননি, বরং তিনি সরাসরি এই কেলেঙ্কারির আসল সুবিধাভোগীও।

নয়াদিল্লি: বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী এবং ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা আবারও আইনি জালে জড়িয়ে পড়েছেন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) শুক্রবার ১৫০ কোটি টাকা সম্পর্কিত বিটকয়েন কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করেছে। এজেন্সির অভিযোগ, কুন্দ্রা শুধু এই মামলায় মধ্যস্থতাকারী ছিলেন না, বরং তিনি নিজেই ২৮৫টি বিটকয়েনের প্রকৃত সুবিধাভোগী, যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৫০ কোটি টাকার বেশি বলে জানানো হচ্ছে।

কেলেঙ্কারির উৎস: ‘গেইন বিটকয়েন’ পঞ্জি স্কিম

এই মামলাটি ক্রিপ্টো সেক্টরের কুখ্যাত নাম অমিত ভরদ্বাজের সঙ্গে যুক্ত, যাকে ‘গেইন বিটকয়েন’ পঞ্জি স্কিমের মূল পরিকল্পনাকারী হিসাবে ধরা হয়। এই স্কিমের অধীনে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তাঁদের বিটকয়েন মাইনিং থেকে প্রচুর মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের টাকা গায়েব করে দেওয়া হয় এবং বিটকয়েন গোপন ওয়ালেটে লুকিয়ে রাখা হয়।

ইডির দাবি, এই একই নেটওয়ার্ক থেকে রাজ কুন্দ্রা ২৮৫টি বিটকয়েন পেয়েছিলেন। এই বিটকয়েনগুলো কথিতভাবে ইউক্রেনে মাইনিং ফার্ম স্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু চুক্তিটি সম্পূর্ণ হয়নি। তা সত্ত্বেও কুন্দ্রা এই বিটকয়েনগুলো নিজের কাছে রেখেছিলেন এবং এখনও পর্যন্ত সেগুলোর অবস্থান বা ওয়ালেট ঠিকানা প্রকাশ করেননি।

ইডির অভিযোগ: বিভ্রান্ত করার চেষ্টা

চার্জশিটে ইডি বলেছে যে কুন্দ্রা তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করেছেন। তিনি এই অজুহাত দেখিয়েছিলেন যে তাঁর ফোন খারাপ হয়ে গেছে এবং এই কারণে প্রয়োজনীয় ডিজিটাল প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। সংস্থাটির বক্তব্য, এই আচরণ থেকে স্পষ্ট যে তিনি সত্য গোপন করার চেষ্টা করছিলেন। চার্জশিটে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে এসেছে। ইডির অভিযোগ, রাজ কুন্দ্রা তাঁর স্ত্রী এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির সঙ্গে এমন একটি লেনদেন করেছেন, যেখানে বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে চুক্তি দেখানো হয়েছে। সংস্থাটির ধারণা, কালো টাকা সাদা করা এবং অবৈধ উপার্জন বৈধ দেখানোর জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল। যদিও এই মামলায় শিল্পা শেঠির সরাসরি ভূমিকা প্রমাণিত হয়নি, তবে তাঁর নামের সঙ্গে জড়িত লেনদেন তদন্তের অধীনে রয়েছে।

রাজ কুন্দ্রা নিজের পক্ষ সমর্থন করে বলেছেন যে তিনি কেবল একজন মধ্যস্থতাকারী (ইন্টারমিডিয়ারি) ছিলেন এবং বিটকয়েনের মালিকানার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ইডি বলছে যে উপলব্ধ প্রমাণ এই দাবির বিপরীত। সংস্থাটির মতে, চুক্তির শর্তাবলী এবং ক্রমাগত লেনদেনের তথ্য থাকার কারণে এটি স্পষ্ট যে কুন্দ্রাই বিটকয়েনের প্রকৃত মালিক এবং সুবিধাভোগী ছিলেন।

Leave a comment