১৩ বছর পর মাতোশ্রীতে রাজ ঠাকরে: নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের জল্পনা

১৩ বছর পর মাতোশ্রীতে রাজ ঠাকরে: নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের জল্পনা

১৩ বছর পর, রাজ ঠাকরে উদ্ধব ঠাকরেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে মাতোশ্রীতে যান। এই সাক্ষাৎ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন জোটের জল্পনা উস্কে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে সমীকরণ পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা চলছে।

মহারাষ্ট্রের রাজনীতি: মহারাষ্ট্রের রাজনীতি আজকাল বেশ উত্তপ্ত, প্রতিদিন নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে এবং ভেঙে যাচ্ছে। এর মধ্যে, একটি বড় রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে প্রায় ১৩ বছর পর মুম্বাইয়ের ঠাকরে পরিবারের বাসভবন 'মাতোশ্রী'-তে যান। এই বাড়িতেই শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে থাকেন।

রাজ ঠাকরের এই সফর রাজনৈতিক বিতর্ক বা সংঘাতের জন্য ছিল না, বরং এটি ছিল একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান। বস্তুত, উদ্ধব ঠাকরের জন্মদিন উপলক্ষে এই সাক্ষাৎ হয়। রাজ ঠাকরে তার তুতো ভাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এই পদক্ষেপ নেন, যা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১২ সালের পর এই প্রথম 'মাতোশ্রী'-র দোরগোড়ায়

এই বৈঠক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে কারণ রাজ ঠাকরে এর আগে ২০১২ সালে মাতোশ্রীতে গিয়েছিলেন যখন শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা এবং দুই ভাইয়ের বাবা বালা সাহেব ঠাকরে মারা যান। এরপর থেকে রাজ ও উদ্ধবের সম্পর্কের দূরত্ব বাড়তে থাকে। কিন্তু এখন, আচমকা এই পরিবর্তনে অনেক রাজনৈতিক সমীকরণ মাথাচাড়া দিয়েছে।

রাজ ঠাকরের সঙ্গে কারা ছিলেন

রাজ ঠাকরে এই সাক্ষাতে একা ছিলেন না। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রবীণ নেতা বালা নন্দগাঁওকর এবং নিতিন সরদেশাইও তার সঙ্গে ছিলেন। সবাই একসঙ্গে উদ্ধব ঠাকরেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। বালাসাহেব ঠাকরের ছবির সামনে দুই ভাইকে একসঙ্গে ছবি তুলতে দেখা যায়, যা দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে শিরোনাম হয়ে যায়।

রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মোড়?

এই সাক্ষাৎ শুধুমাত্র একটি পারিবারিক সফর ছিল নাকি এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক কৌশল লুকিয়ে আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই মাসের শুরুতেও রাজ ঠাকরে ও উদ্ধব ঠাকরেকে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল। দুজনেই যৌথভাবে 'মারাঠি বিজয় র্যালি' আয়োজন করেন এবং মহারাষ্ট্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।

র্যালি-তে রাজ ঠাকরে বলেছিলেন যে বালাসাহেব ঠাকরে তাঁর জীবনে যা করতে পারেননি, দেবেন্দ্র ফড়নবিস তা করে দেখিয়েছেন। এই বক্তব্যটিও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল এবং ঠাকরে ভাইদের সম্ভাব্য রাজনৈতিক ঐক্যের ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

বিএমসি নির্বাচনের আগে সমীকরণ

মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি) নির্বাচন আসন্ন এবং রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কৌশল চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে ঠাকরে ভাইদের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জল্পনা চলছে যে সম্ভবত আসন্ন নির্বাচনে উভয় দল একসঙ্গে আসতে পারে।

শিবসেনা (ইউবিটি) এর প্রবীণ নেতা সঞ্জয় রাউত কিছুদিন আগে বলেছিলেন যে মহারাষ্ট্রের মানুষ চায় দুই ভাই একসঙ্গে এসে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। এখন, দুই নেতার মধ্যে যখন জনসমক্ষে সাক্ষাৎ বাড়ছে, তখন এই সম্ভাবনা আরও জোরালো হচ্ছে।

Leave a comment