সরকারি ব্যাঙ্কগুলির রেকর্ড মুনাফা: বিশদে আলোচনা করবে অর্থ মন্ত্রক

সরকারি ব্যাঙ্কগুলির রেকর্ড মুনাফা: বিশদে আলোচনা করবে অর্থ মন্ত্রক

২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জুন ত্রৈমাসিকে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি সম্মিলিতভাবে ৩৯,৯৭৪ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে। এই ফলাফলগুলি ২০শে আগস্ট অর্থ মন্ত্রক পর্যালোচনা করবে। এই বৈঠকে পিএনবি ব্যতীত অন্য সমস্ত ১২টি সরকারি ব্যাঙ্কের কর্মক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করা হবে, যেখানে অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলি ভালো মুনাফা করেছে।

নয়াদিল্লি: ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জুন ত্রৈমাসিকে সরকারি ব্যাঙ্কগুলির সম্মিলিত মুনাফা ৩৯,৯৭৪ কোটি টাকা হয়েছে, যেখানে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) ১৯,১৬০ কোটি টাকা এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক ৭৬% বৃদ্ধি সহ ১,১১১ কোটি টাকা লাভ করেছে। শুধুমাত্র পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) মুনাফা ৪৮% কমেছে। এই ফলাফলগুলি পর্যালোচনার জন্য অর্থ মন্ত্রক ২০শে আগস্ট সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্কের প্রধানদের সাথে একটি বৈঠক করবে, যার अध्यक्षता করবেন আর্থিক পরিষেবা সচিব এম. নাগরাজু।

জুন ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্কগুলির কর্মক্ষমতা কেমন ছিল

ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক অর্থাৎ এসবিআই আবারও তাদের শক্তি প্রমাণ করেছে। ব্যাঙ্কটি জুন ত্রৈমাসিকে ১৯,১৬০ কোটি টাকার নিট লাভ করেছে, যা বার্ষিক ভিত্তিতে ১২ শতাংশ বেশি। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কের দখল এখনও পর্যন্ত অটুট রয়েছে।

ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এইবার সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। ব্যাঙ্কটির মুনাফা ৭৬ শতাংশ বেড়ে ১,১১১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। একইভাবে, ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র ২৩.২ শতাংশ এবং ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক ২৩.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও ৩২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি সহ ভালো ফল করেছে। পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক ৪৮ শতাংশ লাভ করেছে। সামগ্রিকভাবে, বেশিরভাগ ব্যাঙ্কের কর্মক্ষমতা প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ছিল।

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের আয়ে পতন

এই সবের মধ্যে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের কর্মক্ষমতা হতাশাজনক ছিল। ব্যাঙ্কটির মুনাফা জুন ত্রৈমাসিকে ৪৮ শতাংশ কমে ১,৬৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবর্ষের একই ত্রৈমাসিকে এই অঙ্ক ছিল ৩,২৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এইবার ব্যাঙ্কটির আয় প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। এই পতন স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় যে ব্যাঙ্কটিকে তার আর্থিক অবস্থা আরও শক্তিশালী করতে বেশি কাজ করতে হবে।

সামগ্রিকভাবে ব্যাঙ্কগুলির রেকর্ড মুনাফা

সরকারি ব্যাঙ্কগুলি জুন ত্রৈমাসিকে ১১ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি সহ ৪৪,২১৮ কোটি টাকার রেকর্ড লাভ করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ১২টি সরকারি ব্যাঙ্কের সম্মিলিত লাভ ছিল ৩৯,৯৭৪ কোটি টাকা। এই কর্মক্ষমতা প্রমাণ করে যে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি ক্রমাগত উন্নতির পথে রয়েছে এবং তাদের আয় বাড়াতে সফল হচ্ছে।

লভ্যাংশের অবদানও গুরুত্বপূর্ণ

সরকারি ব্যাঙ্কগুলির আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কেন্দ্র সরকারের কাছে পৌঁছায়। এই কারণে, ব্যাঙ্কগুলির মুনাফা এবং লভ্যাংশের উপর মন্ত্রকের বিশেষ নজর থাকে। এই বছর ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সরকারেকে ২.৬৯ লক্ষ কোটি টাকা লভ্যাংশ হিসাবে দিয়েছে। একই সময়ে, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কও সরকারকে ৮,০৭৬ কোটি টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে।

এই পরিমাণ অর্থ সরকারের জন্য রাজস্বের একটি বড় উৎস। ছোট থেকে বড়, সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্ক তাদের আয়ের অংশ সরকারকে লভ্যাংশ হিসাবে প্রদান করে।

২০শে আগস্টের বৈঠক কেন গুরুত্বপূর্ণ

অর্থ মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে ব্যাঙ্কগুলির ত্রৈমাসিক রিপোর্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এতে বিশেষভাবে দেখা হবে কোন ব্যাঙ্কগুলি প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল করেছে এবং কোন ব্যাঙ্কগুলির অবস্থা দুর্বল। বৈঠকের अध्यक्षता করবেন আর্থিক পরিষেবা সচিব এম নাগরাজু।

পর্যালোচনা বৈঠকের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ব্যাঙ্কগুলির মুনাফা দেখাই নয়, তাদের কাজকর্ম, এনপিএ অর্থাৎ অনাদায়ী ঋণের পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের কৌশলও বোঝা। মন্ত্রণালয় আরও দেখবে কোন ক্ষেত্রগুলিতে উন্নতির প্রয়োজন আছে যাতে আগামী ত্রৈমাসিকের ফলাফল আরও ভালো হয়।

সরকারি ব্যাঙ্কগুলির উপর আস্থা বৃদ্ধি

গত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত দেখা যাচ্ছে যে সরকারি ব্যাঙ্কগুলির কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। অনেক ব্যাঙ্ক, যা আগে লোকসানে চলছিল, এখন মুনাফা দেখাচ্ছে। এই পরিবর্তন ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে সরকারের নীতি এবং সংস্কারের ফলস্বরূপ মনে করা হচ্ছে।

জুন ত্রৈমাসিকের ফলাফল থেকে স্পষ্ট যে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও ভালো আয় করেছে। যেখানে একদিকে এসবিআই এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক তাদের শক্তি দেখিয়েছে, সেখানে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের মতো বড় প্রতিষ্ঠানকে উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে।

Leave a comment