বলিউডের গ্ল্যামার জগৎ এবং মডেলিং দুনিয়ায় ‘বিজলী’ নামে খ্যাত সঙ্গীতা বিজলানির নাম আজও তেমনই উজ্জ্বল, যেমনটা তাঁর সময়ে ছিল। ৯ই জুলাই সঙ্গীতা তাঁর জন্মদিন পালন করেন।
Sangeeta Bijlani Birthday Special: বলিউড জগতে এমন অনেক গল্প আছে যা পর্দায় ঝলমল করে, কিন্তু পর্দার পিছনে লুকিয়ে থাকে ভাঙা হৃদয়ের আর্তনাদ। এমনই একটি গল্প সঙ্গীতা বিজলানির। ৯ই জুলাই ১৯৬০ সালে জন্ম নেওয়া সঙ্গীতা শুধু একজন অভিনেত্রী বা মডেল ছিলেন না, তিনি ছিলেন সেই সময়ের ফ্যাশন আইকন যিনি ১৬ বছর বয়সে র্যাম্পে পা রেখে ১৯৮০ সালে ভারতকে মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্সের মুকুট এনে দেন। কিন্তু যে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি খ্যাতির সিঁড়ি ভেঙেছিলেন, তেমনই গভীর ভাবে প্রেম এবং বিয়েতে আঘাতও পেয়েছিলেন।
যখন সলমান খানের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল
সঙ্গীতার সবথেকে চর্চিত সম্পর্ক ছিল বলিউডের ‘দাবাং’ অভিনেতা সলমান খানের সঙ্গে। ১৯৮০ দশকের শেষ বছরগুলিতে তাঁদের সম্পর্ক সাত বছরের বেশি ছিল। এমনকী, বিয়ের কার্ডও ছাপা হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। একটি অনুষ্ঠানে স্বয়ং সঙ্গীতা স্বীকার করেছিলেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছিলেন এবং বিয়েটা ভেঙে যায়। তিনি আরও বলেছিলেন যে, তাঁর প্রথম দিকের ক্যারিয়ারে তাঁর প্রাক্তন তাঁকে ছোট পোশাক পরতে বাধা দিতেন এবং নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করতেন।
আশ্চর্যজনক বিষয় হল, বিচ্ছেদের পরেও তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব বজায় ছিল। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে দু’জনকে একসঙ্গে দেখা যায়, যা থেকে স্পষ্ট যে সময় ক্ষতগুলিকে হয়তো ভরাট করেছে, কিন্তু চিহ্ন আজও অবশিষ্ট আছে।
ক্রিকেটার মহম্মদ আজহারউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে, কিন্তু সেটিও ভেঙে যায়
সলমানের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর, ১৯৯৬ সালে সঙ্গীতা প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে বিয়ে করেন। সেই সময় আজহারউদ্দিন বিবাহিত ছিলেন এবং তাঁর দুটি সন্তানও ছিল। সঙ্গীতার জন্য এই সম্পর্ক একটি নতুন মোড় নিয়ে আসে— বিয়ের পর তিনি অভিনয় থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে চলে যান। কিন্তু এই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। ১৪ বছর পর ২০১০ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
বিবাহবিচ্ছেদের পর সঙ্গীতা আর কখনও বিয়ে করেননি। তিনি তাঁর একটি ব্লগ ‘Married But Not in The Marriage’-এ লিখেছিলেন যে, বিয়েতে ‘পারফেক্ট স্ত্রী’ হওয়ার চেষ্টা করাও অর্থহীন, যখন অন্যজন আগেই প্রতারণা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।
সিনেমায় কম সময়, কিন্তু স্মরণীয় ছাপ
সঙ্গীতার ফিল্মি জীবন খুব দীর্ঘ ছিল না। তিনি ১৯৮৮ সালে ‘কাতিল’ সিনেমা দিয়ে ডেবিউ করেন। এরপর ১৯৮৯ সালে ‘ত্রিদেব’ এবং ১৯৯০ সালে ‘জুলম’ এর মতো হিট ছবিতে দেখা যায়। তাঁর অ্যাকশন ছবিতে উপস্থিতি এবং সাহসী অভিনয় তাঁকে আলাদা পরিচিতি দেয়। ছোট পর্দাতেও তিনি ‘চাঁদনী’র মতো টিভি শো-এ কাজ করেছেন।
বিবাহবিচ্ছেদের পর সঙ্গীতা আর কখনও ভালোবাসাকে জীবনে জায়গা দেননি। তিনি আত্মনির্ভরশীলতাকে বেছে নিয়েছেন এবং আজ একটি স্বাস্থ্যকর, আধ্যাত্মিক এবং স্বাধীন জীবন যাপন করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ফিটনেস এবং লাইফস্টাইল নিয়ে বেশ সক্রিয় এবং বহু নারীর কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।