দিল্লীতে ২০২৫ সাল থেকে পুরনো গাড়িতে জ্বালানি বন্ধের সিদ্ধান্ত

দিল্লীতে ২০২৫ সাল থেকে পুরনো গাড়িতে জ্বালানি বন্ধের সিদ্ধান্ত

দিল্লী-NCR-এ 'নো-ফুয়েল পলিসি' অর্থাৎ End-of-Life (EoL) যানবাহনগুলিকে জ্বালানি সরবরাহ না করার নীতিটি Commission for Air Quality Management (CAQM) সংশোধন করে ১ নভেম্বর, ২০২৫ থেকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নো ফুয়েল পলিসি: রাজধানী দিল্লি এবং তার আশেপাশের এলাকাগুলিতে বায়ু দূষণের গুরুতর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার ১ নভেম্বর, ২০২৫ থেকে 'নো ফুয়েল পলিসি' (No Fuel Policy) কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এই নীতির অধীনে, যে সমস্ত যানবাহন তাদের নির্ধারিত বয়সসীমা অতিক্রম করেছে, তাদের কোনো পেট্রোল বা CNG পাম্প থেকে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে না।

দিল্লির পাশাপাশি, NCR-এর গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ, গুরুগ্রাম, সোনীপত এবং নয়ডার মতো প্রধান জেলাগুলিতেও এই নীতি কার্যকর করা হবে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল দিল্লি এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং পুরনো, অতিরিক্ত ধোঁয়া নির্গতকারী যানবাহনগুলিকে রাস্তা থেকে সরানো।

'নো ফুয়েল পলিসি' কী?

এই নীতি অনুসারে, যে সমস্ত যানবাহন তাদের নির্ধারিত জীবনকাল (পেট্রোল গাড়ির জন্য ১৫ বছর এবং ডিজেল গাড়ির জন্য ১০ বছর) পূর্ণ করেছে, তাদের কোনো ফুয়েল স্টেশনে পেট্রোল বা CNG ভরতে দেওয়া হবে না। যদি কোনো যানবাহন নিয়ম লঙ্ঘন করে, তবে শুধু জরিমানা করা হবে না, সেই সঙ্গে গাড়িটি বাজেয়াপ্তও করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, এই নীতিটি আগে ১ জুলাই, ২০২৫ থেকে কার্যকর করার কথা ছিল, কিন্তু জনতা এবং গাড়ির মালিকদের সংগঠনগুলির তীব্র বিরোধিতার কারণে এটি অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। সেই সময় অনেক চালকের উপর ৫০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছিল এবং কয়েক ডজন পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।

কোন কোন জেলায় এই নীতি কার্যকর হবে?

এবার 'নো ফুয়েল পলিসি' শুধুমাত্র দিল্লিতে সীমাবদ্ধ না রেখে, দিল্লি-NCR-এর নিম্নলিখিত প্রধান জেলাগুলিতেও কার্যকর করা হচ্ছে:

  • দিল্লি
  • ফরিদাবাদ
  • গুরুগ্রাম
  • সোনীপত
  • গাজিয়াবাদ

সরকারের উদ্দেশ্য হল, সমগ্র NCR-এ একটি অভিন্ন এবং কার্যকর পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করা, যাতে পুরনো যানবাহন এক এলাকা থেকে সরিয়ে অন্য এলাকায় স্থানান্তরিত করা না যায়।

নীতিতে কী পরিবর্তন আনা হয়েছে?

জুলাই মাসে নীতির অস্থায়ী স্থগিতাদেশের পর, দিল্লি সরকার এবং CAQM (Commission for Air Quality Management)-এর মধ্যে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয়। এই বৈঠকগুলিতে পুরনো গাড়ির সনাক্তকরণ, তাদের রেজিস্ট্রেশন ডেটা, পাম্প অপারেটরদের দায়িত্ব এবং চালকদের অভিযোগ निवारণের মতো বিষয়গুলি বিবেচনা করে নীতিতে কিছু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এবার পেট্রোল পাম্পগুলিকে একটি ডিজিটাল সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করা হবে, যেখানে প্রতিটি গাড়ির নম্বর প্লেট এবং রেজিস্ট্রেশন ডিটেইলসের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানা যাবে যে সেই গাড়িটি জ্বালানির যোগ্য কিনা।

লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা

যদি কোনো গাড়ির চালক নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং কোনোভাবে জ্বালানি ভরতে সফল হয়, তাহলে:

  • ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা
  • গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে
  • রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করা হতে পারে
  • সম্পর্কিত পাম্পের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে

দিল্লি সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে, "দূষণ নিয়ে এখন কোনো আপস করা হবে না।" দিল্লির বায়ু গুণমান প্রতি শীতে গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং এর একটি প্রধান কারণ হল রাস্তায় চলমান পুরনো এবং দূষণ সৃষ্টিকারী যানবাহন। এই কারণেই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে এই নীতিটি পুনরায় কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Leave a comment