ভারতীয় প্রতিযোগিতা কমিশন (CCI) ঋণে জর্জরিত জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটস অধিগ্রহণের জন্য গৌতম আদানি গোষ্ঠীকে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর এই অনুমোদন দেউলিয়া প্রক্রিয়াতে জয়লাভের পরেই কার্যকর হবে। ডালমিয়া ভারতও অধিগ্রহণের জন্য অনুমোদন পেয়েছে।
Jaiprakash Associates: ভারতীয় প্রতিযোগিতা কমিশন (CCI) ঋণে জর্জরিত জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রস্তাবিত অধিগ্রহণের জন্য আদানি গোষ্ঠীকে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। আদানি গোষ্ঠী এই অধিগ্রহণে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ারহোল্ডিং নিতে পারে, যদি তারা দেউলিয়া প্রক্রিয়াতে সফল হয়। ডালমিয়া ভারতও একই প্রকার অনুমোদন পেয়েছে। জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটস রিয়েল এস্টেট, সিমেন্ট, এনার্জি এবং হোটেল সেক্টরে কাজ করা একটি বড় কোম্পানি ছিল, যারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার কারণে NCLT-এর অধীনে দেউলিয়া সমাধান প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
আদানি ছাড়াও ডালমিয়া ভারতও দৌড়ে রয়েছে
আদানি গ্রুপের পাশাপাশি ডালমিয়া ভারতও জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটস অধিগ্রহণের জন্য CCI-এর থেকে অনুমোদন পেয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের পর কোম্পানিগুলিকে দেউলিয়া এবং ঋণ পরিশোধে অক্ষমতা বিধি (IBC)-এর অধীনে রেজোলিউশন প্ল্যান পেশ করার আগে CCI-এর অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক হয়েছে। এই অনুমোদনের পরেই কমিটি অফ ক্রেডিটরস (CoC)-এর ভোটাভুটির মাধ্যমে পরিকল্পনাটিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।
আদানি গোষ্ঠী এই অধিগ্রহণের জন্য ৮,০০০ কোটি টাকার বেশি অগ্রিম প্রস্তাব দিয়েছে। এই পদক্ষেপ কোম্পানির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটিকে কেনার দৌড়ে অন্যান্য বড় কোম্পানিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কোম্পানির ওপর ৫৭,১৮৫ কোটি টাকার বিশাল ঋণ
জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড রিয়েল এস্টেট, সিমেন্ট, এনার্জি এবং হোটেল সেক্টরে কাজ করা একটি বড় কোম্পানি ছিল। তবে, ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পর কোম্পানিকে ৩ জুন, ২০২৪ তারিখে জাতীয় কোম্পানি আইন न्यायाधिकरण (NCLT), এলাহাবাদ বেঞ্চ দ্বারা কর্পোরেট দেউলিয়া সমাধান প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কোম্পানির ঋণদাতাদের দাবি, জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটসের ওপর মোট ৫৭,১৮৫ কোটি টাকার বিশাল ঋণ রয়েছে। এই কারণে কোম্পানির স্টকের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং এর শেয়ারের দাম ৩০০ টাকা থেকে কমে মাত্র ৩.৮০ টাকা প্রতি শেয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে।
অধিগ্রহণের দৌড়ে কারা কারা রয়েছে
জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটসকে কেনার জন্য আদানি গ্রুপ এবং ডালমিয়া ভারত ছাড়াও বেদান্ত, জিন্দাল পাওয়ার এবং পিএনসি ইনফ্রাটেকের মতো কোম্পানিও এই দৌড়ে রয়েছে। এই दिग्गज কোম্পানিগুলি এই অধিগ্রহণের জন্য নিজেদের মতো করে দরপত্র এবং কৌশল তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আদানি গোষ্ঠীর এই কৌশল ভারতীয় কর্পোরেট জগতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। কোম্পানির অধিগ্রহণ আদানি গ্রুপকে রিয়েল এস্টেট, এনার্জি এবং হোটেল সেক্টরে আরও বিস্তার করার সুযোগ করে দেবে।
CCI-এর অনুমোদন
CCI-এর অনুমোদন এই কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ এটি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় নিয়মক বাধাগুলি কম করে। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, এখন কোনো কোম্পানি দেউলিয়া প্রক্রিয়ায় পদক্ষেপ রাখার আগে CCI-এর অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। এই প্রক্রিয়া আর্থিক ঋণদাতা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের সুরক্ষা জন্য জরুরি বলে মনে করা হয়।
আদানির প্রস্তাব
আদানি গোষ্ঠী কোনো রকম পূর্বশর্ত ছাড়াই ৮,০০০ কোটি টাকার বেশি অগ্রিম প্রস্তাব রেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আদানি গোষ্ঠী দেউলিয়া প্রক্রিয়ায় সফল হয়ে যায়, তবে এটি কোম্পানির জন্য আর্থিক সংস্কার এবং ভবিষ্যতে নতুন প্রোজেক্টের জন্য সুযোগ তৈরি করবে।