‘অ্যাকশন’ চান শুভেন্দু, পরপর হামলায় অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি

‘অ্যাকশন’ চান শুভেন্দু, পরপর হামলায় অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি

Suvendu Adhikari News: উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটা, শিলিগুড়ি ও কুমারগ্রামে বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কদের উপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাফ জানালেন— “বেঙ্গল ওয়ান্টস অ্যাকশন।” তাঁর বক্তব্য, এখনই সাংবিধানিক ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের মতো শক্ত ঘাঁটিতে বারবার এমন হামলা হওয়ায় ক্ষোভ তীব্র। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপির একাংশ।

উত্তরবঙ্গে হামলার পর রাজনৈতিক অস্থিরতা

গত কয়েকদিনে উত্তরবঙ্গে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ও মনোজ ওরাঁও হামলার শিকার হয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, এই হামলার নেপথ্যে তৃণমূলের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’। তবে প্রশ্ন উঠছে— নিজেদের শক্ত ঘাঁটিতেই কেন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না বিজেপি? এই নিয়েই শুরু হয়েছে দলের ভিতরে আত্মসমালোচনা।

শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি: “বেঙ্গল ওয়ান্টস অ্যাকশন”

বৃহস্পতিবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, “এখন সময় সাংবিধানিক পদক্ষেপের।” তিনি রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোসের আগের মন্তব্যের কথা তুলে বলেন— “রাজ্যপাল বলেছিলেন, আবার যদি এরকম ঘটনা ঘটে, কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। এখন মানুষ সেই পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে।” শুভেন্দুর এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

বঙ্গ বিজেপির অন্দরেই এখন চাপা অসন্তোষ। একাধিক রাজ্যনেতার মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আরও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানালেও অনেকের মত— নিন্দা নয়, এবার চাই সংগঠিত প্রতিরোধ। নিচুতলার কর্মীদের মনোবল রক্ষাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

মতপার্থক্যে বিভক্ত বিজেপি

একাংশ নেতা যেমন পাল্টা মারের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য আবার বলছেন, “চোখের বদলে চোখ, কান–এর বদলে কান— এটা বিজেপির পথ নয়।” শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, “আমাদের কাছে কর্মীদের জীবনের মূল্য সবচেয়ে বেশি।” ফলে প্রতিরোধের পথে যাবেন নাকি সাংবিধানিক পদক্ষেপের দাবি তুলবেন— তা নিয়েই বিভক্ত পদ্মশিবির।

আত্মসমালোচনায় বিজেপি নেতৃত্ব

দলের এক বর্ষীয়ান নেতা স্বীকার করেছেন, “তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু জনভিত্তি মজবুত থাকলে সাধারণ মানুষই আমাদের পাশে দাঁড়াতেন।” জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ভূপেন্দ্র যাদব ও বিপ্লব দেব রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন— কোন এলাকায় সংগঠন দুর্বল, তা খতিয়ে দেখা হবে।

উত্তরবঙ্গে বিজেপি সাংসদ–বিধায়কদের উপর পরপর হামলার পর ক্ষুব্ধ শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপাল ও কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের দাবি তুলে তিনি বললেন, “বেঙ্গল ওয়ান্টস অ্যাকশন।” এদিকে, নিজেদের গড়ে হামলার ঘটনাকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে।

Leave a comment