শুভমান গিলকে যখন ইংল্যান্ড সফরের ঠিক আগে ভারতীয় টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন অনেকেই এটিকে একটি সাহসী সিদ্ধান্ত মনে করেছিলেন, কিন্তু शायदই কেউ ভেবেছিল যে গিল শুধু একজন প্রভাবশালী অধিনায়ক হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন।
স্পোর্টস নিউজ: ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে চলমান পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি তার শেষ পর্যায়ে রয়েছে, তবে ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিল এই সিরিজটিকে ঐতিহাসিক করে তুলেছেন। মাত্র ২৪ বছর বয়সে টিম ইন্ডিয়ার নেতৃত্ব গ্রহণ করে গিল শুধু দলকে শক্তিশালী করেননি, বরং ব্যাট হাতেও অসাধারণ পারফর্ম করে অনেক রেকর্ড নিজের নামে করে নিয়েছেন। ওভাল টেস্টে গিল প্রথম রানটি করার সাথে সাথেই ৫৯ বছর পুরনো একটি বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।
গ্যারি সোবার্সের ১৯৬৬ সালের রেকর্ড ভাঙল
গিল যখন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওভাল টেস্টে ব্যাট করতে নামেন, তখন ভারত ৩৮ রানে কেএল রাহুলের উইকেট হারিয়েছিল। ষষ্ঠ বলে গিল যখন রানের খাতা খোলেন, তখন এই টেস্ট সিরিজে তার মোট রান হয় ৭২৩। এর সাথে সাথেই তিনি SENA (সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া) দেশগুলিতে একটি টেস্ট সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যান হয়ে যান। এর আগে এই রেকর্ডটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মহান অলরাউন্ডার গ্যারি সোবার্সের নামে ছিল, যিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭২২ রান করেছিলেন।
গিলের এই রেকর্ডটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ এই পারফরম্যান্স তিনি বিদেশের মাটিতে, চাপের মধ্যে অধিনায়কত্ব করার সময় করেছেন। গিলের এই ধারাবাহিকতা ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য একটি শুভ ইঙ্গিত।
সুনীল গাভাস্কারকেও ছাড়িয়ে গেলেন
ওভাল টেস্টে গিল আরও একটি বড় কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তিনি এখন ভারতের হয়ে একটি টেস্ট সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যান। এই ক্ষেত্রে তিনি কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কারকে পিছনে ফেলেছেন। গাভাস্কার ১৯৭৮-৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অধিনায়ক হিসেবে ৭৩২ রান করেছিলেন, যেখানে গিল সেই সংখ্যা অতিক্রম করে নতুন মাইলফলক অর্জন করেছেন।
গিলের এই কৃতিত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ তিনি এই রেকর্ডটি এমন এক সময়ে করেছেন, যেখানে টেস্ট ক্রিকেটে ক্রমাগত রান করা এবং অধিনায়কত্বের চাপ সামলানো খুবই কঠিন।
কেমন ছিল গিলের এখন পর্যন্ত পরিসংখ্যান?
শুভমান গিল এই টেস্ট সিরিজে এখন পর্যন্ত ৫টি ম্যাচে ৪টি সেঞ্চুরি ও ২টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তার গড় ৮০-এর উপরে এবং স্ট্রাইক রেটও প্রশংসনীয়। তিনি প্রতিটি পরিস্থিতিতে ব্যাট করতে সক্ষম — তা সে বাউন্সিং ট্র্যাক হোক বা সুইং করা ইংরেজি বোলিং। তার টেকনিক, সংযম এবং আক্রমণাত্মক মনোভাবের ভারসাম্য তাকে এই সিরিজের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান করে তুলেছে।
অধিনায়কত্বের কথা বলতে গেলে, গিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফিল্ড প্লেসমেন্ট, বোলারদের রোটেশন এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েও সবাইকে প্রভাবিত করেছেন। তার কৌশল এবং তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতি আস্থা দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।