সৈয়দা হামিদ বলেছেন যে বাংলাদেশী নাগরিকরাও ভারতে বসবাস করতে পারে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজুর সমালোচনা। আসামে অবৈধ বসতি এবং ভূমি বিতর্ক নিয়ে বিতর্ক, কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে।
New Delhi: সোনিয়া গান্ধীর ঘনিষ্ঠ এবং প্রাক্তন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সৈয়দা হামিদ সম্প্রতি আসামে বলেছেন যে বাংলাদেশী নাগরিকরাও মানুষ এবং তাদের ভারতে বসবাসের অধিকার আছে। তাঁর এই বক্তব্য মনমোহন সিং সরকারের আমলে তাঁর অভিজ্ঞতা এবং মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে।
হামিদ বলেন, পৃথিবী অনেক বড় এবং এতে বাংলাদেশী নাগরিকরাও ভারতে বসবাস করতে পারে। তাঁর যুক্তি ছিল যে কারও অধিকার হরণ করা উচিত নয় এবং তিনি আসাম সরকারের অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করার উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্যটি করেছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর প্রতিক্রিয়া
সৈয়দা হামিদের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু তাঁকে আক্রমণ করেছেন। রিজিজু বলেছেন যে মানবতার নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে এটি আমাদের ভূমি ও পরিচয়ের প্রশ্ন। রিজিজু প্রশ্ন করেন যে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সংখ্যালঘু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু ও শিখদের উপর কেন অত্যাচার হচ্ছে। তাঁর মতে, অবৈধ অভিবাসীদের সমর্থন করা ভারতের স্বার্থে নয়।
আসাম সরকারের পদক্ষেপ
আসাম সরকার সম্প্রতি সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বসবাস করা লোকেদের উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পদক্ষেপের পর সৈয়দা হামিদ বলেছেন যে মুসলমানদের বাংলাদেশী আখ্যা দিয়ে ভুলভাবে নিশানা করা হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে প্রশান্ত ভূষণ এবং হর্ষ মান্দারের মতো অ্যাক্টিভিস্টরাও ছিলেন, যারা রাজ্য সরকারের নীতির সমালোচনা করেছেন।
ভূষণ অভিযোগ করেছেন যে আসাম সরকার নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে এবং অবৈধভাবে বাড়িঘর ভেঙে দিচ্ছে। তিনি এটিকে রাজ্য কর্তৃক 'লুট' হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে সরকার এই প্রক্রিয়াটিকে জনসাধারণের তদন্ত থেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।
সৈয়দা হামিদ কী বলেছেন?
সৈয়দা হামিদ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে কেউ বাংলাদেশী হলে তাতে ভুল কী আছে। তিনি মনে করেন যে বাংলাদেশী নাগরিকরাও মানুষ এবং তাদের ভারতে বসবাসের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া বিতর্কিত হবে। তিনি বলেন যে পৃথিবী এত বড় যে এতে বাংলাদেশী নাগরিকরা ভারতে বসবাস করতে পারে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই মামলায় তাঁর সরকারের পক্ষ সমর্থন করেছেন। তিনি বলেছেন যে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা রাজ্যের স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করতে পারে। শর্মা এও স্পষ্ট করেছেন যে তাঁর সরকারের নীতি রাজ্য এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্বার্থে।
বেসরকারি সংস্থাকে হস্তান্তরের অভিযোগ
আসাম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা আদিবাসী এবং কৃষি জমি আদানি গ্রুপের মতো বেসরকারি সংস্থাগুলিকে দিয়েছে। প্রশান্ত ভূষণ এটিকে স্থানীয় সম্প্রদায়ের ক্ষতির বিনিময়ে বড় পুঁঁজিপতিদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন যে রাজ্য সরকার স্বাধীন মূল্যায়ন বন্ধ করার চেষ্টা করছে।