রাজস্থানের ঝালাওয়াড়ে একটি হতবাক করা ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে মধ্যপ্রদেশের তিনজন যুবক বিলাসবহুল জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষায় এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। অভিযুক্তরা ভোপাল থেকে একটি ট্যাক্সি বুক করে এবং ড্রাইভারকে ঝালাওয়াড়ে এনে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে, মৃতদেহটি রেললাইনের কাছে ফেলে দেওয়া হয় যাতে এটি একটি ট্রেন দুর্ঘটনা মনে হয়। পুলিশ এই ঘটনায় তিন প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা ট্যাক্সি চালকদের লক্ষ্য করে ডাকাতি ও হত্যার পরিকল্পনা করছিল।
ভোপাল থেকে আনা ড্রাইভার
পুলিশের মতে, গ্রেপ্তারকৃত যুবক—রাজেশ ওরফে রাহুল জাটব (২১), অনিল কুমার (২০) এবং আফজাল (২১)—মধ্যপ্রদেশের সিরোহি জেলার বাসিন্দা। তিনজন ভোপালে পঙ্কজ সাহু নামের এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ভাড়া করে এবং তাকে রাজস্থানের ঝালাওয়াড়ে নিয়ে আসে। এখানে তারা তাদের দুই স্থানীয় সঙ্গীর সহায়তায় হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। প্রথমে ড্রাইভারের গলা তার দিয়ে ঘোঁটা হয় এবং পরে ছুরি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করা হয়।
হত্যার পর অভিযুক্তরা পঙ্কজ সাহুর মৃতদেহ রেললাইনের কাছে ফেলে দেয়, যাতে মনে হয় তার মৃত্যু ট্রেনে কাটা পড়ে হয়েছে। পাশাপাশি তার গাড়ি, মোবাইল ও নগদ টাকাও লুট করা হয়।
গাড়ি বিক্রির চেষ্টায় পর্দাফাঁস
তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পারে যে ভোপালে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার নিখোঁজ এবং ঝালাওয়াড়ের তীন্ধর এলাকায় একটি গাড়ি কম দামে বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে এবং সেটি কেনার চেষ্টাকারী মনীষ নায়ক নামের যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
অন্যদিকে, পুলিশ বুধবার রাতে সোয়াত এলাকা থেকে তিন প্রধান অভিযুক্তকে সেই সময় গ্রেপ্তার করে যখন তারা আরও একটি ট্যাক্সি ড্রাইভারকে লক্ষ্যবস্তু করার পরিকল্পনা করছিল। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
দেখানো জীবনের মোহে অপরাধী
ডিএসপি হর্ষরাজ সিংয়ের মতে, অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য ছিল দামি পোশাক পরা, ব্র্যান্ডেড মোবাইল রাখা এবং বিলাসবহুল গাড়ি চালানো, কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে তারা ট্যাক্সি ড্রাইভারদের সহজ লক্ষ্য মনে করে লুটপাট ও হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
এই মামলায় অন্য দুই স্থানীয় অভিযুক্ত এখনও পলাতক, যাদের সন্ধানে পুলিশের দল অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে অল্প বয়সে দেখানো জীবনের পেছনে ছোটা কীভাবে যুবকদের অপরাধের চোরাবালিতে ঠেলে দিতে পারে।