পুঞ্চের দেগওয়ার সেক্টরে এলওসি-র কাছে সংঘর্ষে দুই জঙ্গি নিহত। এলাকা ঘিরে ফেলে সেনা বাহিনীর তল্লাশি অভিযান জোরদার, অনুপ্রবেশের আশঙ্কা।
Poonch Encounter: জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার দেগওয়ার সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC)-র কাছে সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনী দুই জঙ্গিকে খতম করেছে। সেনা বাহিনী এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পেয়ে বড়সড় তল্লাশি অভিযান চালায়। সংঘর্ষের পর এখনও তল্লাশি অভিযান চলছে, যাতে অন্য কোনো জঙ্গির উপস্থিতি সনাক্ত করা যায়। এর আগে শ্রীনগরের লিডওয়াসে অপারেশন মহাদেবের অধীনে তিনজন জঙ্গি নিহত হয়েছিল, যারা পহেলগাম হামলায় জড়িত ছিল।
পুঞ্চের দেগওয়ার সেক্টরে সন্দেহজনক গতিবিধির খবর
জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার দেগওয়ার সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সম্প্রতি সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পাওয়া যায়। সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সূত্রে খবর পায় যে কিছু জঙ্গি সীমান্ত পার হয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। এই খবরের পর ভারতীয় সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যৌথভাবে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে।
গুলিতে দুই জঙ্গি খতম
তল্লাশি অভিযানের সময় ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলি চালাতে শুরু করে। পাল্টা জবাবে সেনা বাহিনী দুই জঙ্গিকে খতম করে। কয়েক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে, এরপর জঙ্গিদের নিকেশ করা হয়। বর্তমানে এলাকায় তল্লাশি অভিযান এখনও চলছে, যাতে আর কোনো জঙ্গি সেখানে লুকিয়ে থাকতে না পারে।
পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল জঙ্গিরা
সেনাবাহিনীর সূত্র থেকে জানা গেছে, নিহত দুই জঙ্গি পাকিস্তান থেকে এসেছিল এবং ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল। এলওসি-র কাছে এই সংঘর্ষটি ঘটে, যখন জঙ্গিরা ভারতীয় এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করে। এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে যে সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদের হুমকি এখনও বিদ্যমান।
জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান জোরদার
সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা বাহিনী পুঞ্চের জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান আরও জোরদার করেছে। LoC সংলগ্ন এই এলাকাগুলিতে জঙ্গিরা প্রায়ই অনুপ্রবেশের জন্য রাস্তা খোঁজে। এই কারণেই সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে এই অঞ্চলে টহল ও নজরদারি ক্রমাগত জোরদার করা হচ্ছে। ড্রোন ও স্নিফার ডগের সাহায্যে অপারেশন চালানো হচ্ছে।
অপারেশন মহাদেবের অধীনে আরও তিন জঙ্গি নিহত হয়েছিল
এর আগে মঙ্গলবার শ্রীনগরের লিডওয়াস এলাকায় সেনা বাহিনী ‘অপারেশন মহাদেব’-এর অধীনে তিন জঙ্গিকে খতম করেছিল। এই অপারেশনটি শ্রীনগরের দাচিগাঁওয়ের ঘন জঙ্গলে চালানো হয়েছিল। সেনা বাহিনী এই জঙ্গিদের সম্পর্কে খবর পেয়েছিল যে তারা সম্প্রতি পহেলগামে হওয়া জঙ্গি হামলায় জড়িত ছিল। সংঘর্ষের সময় তিনজন জঙ্গি নিহত হয় এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রেশন উদ্ধার করা হয়েছে।
টিআরএফ-এর সঙ্গে যুক্ত ছিল জঙ্গিরা
সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে শ্রীনগরে নিহত তিনজন জঙ্গি ‘দ্য রেসিস্টেন্স ফ্রন্ট’ (TRF)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। টিআরএফ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার একটি শাখা সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হয়। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে একজনের পরিচয় মুসা হিসেবে জানা গেছে, যে লস্করের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল। এই জঙ্গিদের মৃতদেহের পরিচয় ড্রোন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। ড্রোন ফটোগ্রাফির মাধ্যমে সংঘর্ষ এলাকার ওপর নজর রাখা হয়েছিল।
নিয়ন্ত্রণ রেখায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি
ঘন ঘন অনুপ্রবেশের চেষ্টার কারণে ভারতীয় সেনা নিয়ন্ত্রণ রেখায় নজরদারি ও কড়াকড়ি বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রযুক্তির সাহায্যে এখন LoC-র কাছাকাছি এলাকাগুলিতে চব্বিশ ঘণ্টা নজরদারি চালানো হচ্ছে। এই এলাকাগুলিতে ঘন জঙ্গল এবং কঠিন ভৌগোলিক পরিস্থিতি জঙ্গিদের লুকানোর জায়গা করে দেয়, কিন্তু সেনাবাহিনীর ক্রমাগত অভিযানে তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে।