Wild Taro Benefits: বনজঙ্গল বা বাড়ির আশেপাশের জলাভূমিতে জন্মানো বুনো কচু এখন নতুন কৃষি সম্ভাবনার দরজা খুলছে। মালদা জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান দূশয়ান্ত কুমার রাঘব জানিয়েছেন, এই উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম Colocasia esculenta। এতে রয়েছে উচ্চ ক্যালসিয়াম অক্সালেট ও ঔষধি গুণ। বাজারে আচমকাই এর দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা এখন এই ফসলের দিকেই ঝুঁকছেন, কারণ কম খরচে তুলনামূলক বেশি মুনাফা মিলছে।

বুনো কচু: অবহেলিত সবজি থেকে সম্ভাবনাময় ফসল
এক সময় গ্রামবাংলায় বুনো কচু ছিল অগোচর সবজি। বনজঙ্গল, রাস্তা বা জলাভূমির ধারে বেড়ে উঠত এই উদ্ভিদ। কিন্তু এখন বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে দ্রুত। পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণের কারণে শহরাঞ্চলেও এর ব্যবহার বেড়েছে।চাষিরা বলছেন, অল্প জমিতেও এর চাষ সম্ভব, জলাশয়ের পাশে স্বাভাবিকভাবে জন্মে। এতে খরচ কম, রক্ষণাবেক্ষণও তুলনামূলক সহজ।

দ্বিগুণ লাভ: হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে
সম্প্রতি বাজারে বুনো কচুর দাম এক ধাক্কায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। স্থানীয় হাটে যেখানে আগে ২০–২৫ টাকায় কেজি বিক্রি হতো, সেখানে এখন ৫০ টাকাও ছুঁয়েছে।কৃষকরা বলছেন, অন্য সবজির তুলনায় কম ঝুঁকিতে এই ফসল থেকে এখন ভালো আয় হচ্ছে, বিশেষ করে বর্ষা ও শরৎকালে।

ঔষধি গুণে ভরপুর বুনো কচু: গ্রামের ঐতিহ্য আজও জীবন্ত
গ্রামীণ চিকিৎসায় এই কচুর পাতা ও কাণ্ড বহুল ব্যবহৃত। রক্তপাত বন্ধ করা, দুর্বলতা, পাইলস, টাক, লিভারের সমস্যা, এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেও এটি কার্যকর।কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পাতার কাণ্ডে থাকা রসের ‘স্টিপটিক’ গুণই রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে—যা একে সাধারণ সবজি থেকে এক ধাপ উপরে নিয়ে যায়।
চাষের পদ্ধতি: জলাভূমিই এর স্বর্গভূমি
এই কচু সাধারণত জলাভূমি, পুকুরের ধারে বা স্যাঁতসেঁতে জমিতে ভালো জন্মায়। চাষের জন্য আলাদা সার বা কীটনাশক প্রায় লাগে না।তবে কৃষি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ফলন তুলনামূলক কম হলেও বাজারদর বেশি হওয়ায় সামগ্রিক আয় আশানুরূপ। সঠিক জমি ও মৌসুম বেছে নিলে চাষিরা সহজেই লাভবান হতে পারেন।

গ্রামবাংলার অবহেলিত বুনো কচু এখন সোনার ফসল। এর বাজারদর হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। ঔষধি গুণে ভরপুর এই ফসল শুধু সবজি নয়, এখন লাভজনক বিকল্প চাষ হিসেবেও জনপ্রিয় হচ্ছে।











