যুবকদের মধ্যে ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি: জীবনযাপন পরিবর্তনে প্রতিরোধ সম্ভব

যুবকদের মধ্যে ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি: জীবনযাপন পরিবর্তনে প্রতিরোধ সম্ভব

যুবকদের মধ্যে ক্যান্সারের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে, যার প্রধান কারণগুলি হলো খারাপ জীবনযাপন, ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা এবং মানসিক চাপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং সময়মতো স্ক্রিনিং অবলম্বন করে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যেতে পারে। সচেতনতা এবং সঠিক অভ্যাস যুবকদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

যুবকদের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি: নতুন প্রজন্মের মধ্যে ক্যান্সারের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে এবং এর প্রধান কারণ হলো খারাপ জীবনযাপন। ড. এ. কে. দেওয়ান, পরিচালক (অনকোলজি), রাজীব গান্ধী ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, নয়াদিল্লির মতে, যুবকরা প্রায়শই জাঙ্ক ফুড, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ না করার কারণে এই রোগের প্রতি সংবেদনশীল হয়। বিশেষজ্ঞরা জানান যে স্থূলতা, অ্যালকোহল, তামাক এবং উচ্চ রক্তে শর্করার মতো অভ্যাস ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। সচেতনতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সময়মতো স্ক্রিনিং এই ঝুঁকি কমাতে কার্যকর উপায়।

স্থূলতা এবং ক্যান্সার

সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, ২০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে থাইরয়েড, স্তন, কিডনি, এন্ডোমেট্রিয়াল এবং লিউকেমিয়ার মতো ক্যান্সারের ঘটনা বাড়ছে। ভারতে প্রতি পাঁচজন ক্যান্সার রোগীর মধ্যে একজনের বয়স ৪০ বছরের কম। দ্য ল্যানসেট এবং গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডি অনুসারে, যদি মানুষ তামাক, অ্যালকোহল, স্থূলতা এবং উচ্চ রক্তে শর্করার মতো ঝুঁকির কারণগুলি নিয়ন্ত্রণ করে, তবে ৪২ শতাংশ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

মানসিক চাপ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

মানসিক চাপও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে শরীর ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষগুলিকে সময়মতো ধ্বংস করতে পারে না। ড. দেওয়ান জানান যে মানসিক চাপে থাকা ব্যক্তিরা অ্যালকোহল, ধূমপান এবং চা-কফির অত্যধিক সেবন করে, যা সমস্যাটিকে আরও গুরুতর করে তোলে। তাই মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান, যোগব্যায়াম এবং সঙ্গীতের মতো কৌশলগুলির সাহায্য নেওয়া উচিত।

সক্রিয় জীবনযাপন গ্রহণ করুন

সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা উপকারী। দ্রুত হাঁটা, জগিং, যোগব্যায়াম এবং প্রাণায়ামের মাধ্যমে স্থূলতা নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং হরমোনের ভারসাম্যে উন্নতি ঘটে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

খাদ্যাভ্যাসের প্রতি মনোযোগ দিন

  • খাবারে ফাইবার এবং উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
  • চিনি এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটের সেবন কমান।
  • ফল এবং সবজি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন।
  • মাইক্রোওয়েভের ব্যবহার সীমিত করুন।
  • গ্রিন টি, জামুন, শাক, ব্রোকলি এবং ফুলকপির মতো জিনিসগুলি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
  • আপনার শারীরিক কার্যকলাপ অনুযায়ী ক্যালোরি গ্রহণ করুন যাতে ওজন ভারসাম্যপূর্ণ থাকে।

যুবকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ক্যান্সারের ঘটনা প্রতিরোধের জন্য জীবনযাত্রার উন্নতি অত্যন্ত জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং সময়মতো স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যেতে পারে। ড. দেওয়ানের মতে, সচেতনতা এবং সঠিক অভ্যাস অবলম্বন করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব, এবং যুবকদের এখন এই দিকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

যদি আপনি আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেন এবং এই পরামর্শগুলি গ্রহণ করেন, তাহলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যেতে পারে।

Leave a comment