ভারতীয় মহাকাশচারী, শুভাংশু শুক্লা এবং নাসা-র Axiom-4 মিশনে অংশগ্রহণকারী অন্য তিনজন ক্রু সদস্য ১৪ই জুলাই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে পৃথিবীতে ফিরবেন।
মুম্বাই: ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) ২৬/১১ মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলায় (Mumbai Terror Attack) জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত তাহাউর হোসেন রানার (Tahawwur Hussain Rana) বিরুদ্ধে একটি অতিরিক্ত চার্জশিট (Supplementary Chargesheet) বিশেষ আদালতে পেশ করেছে। এই চার্জশিটে এনআইএ তাহাউর রানার সন্দেহজনক কার্যকলাপ, ভারতে তার নেটওয়ার্ক এবং হামলার ষড়যন্ত্রে তার জড়িত থাকার নতুন প্রমাণ পেশ করেছে।
তাহাউর রানাকে ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (Judicial Custody) পাঠানো হয়েছে। তার বর্তমান হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাকে বিশেষ বিচারপতি চন্দর জিত সিং-এর আদালতে হাজির করা হলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ডেভিড হেডলির ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাহাউর রানা
তাহাউর রানা, আমেরিকা এবং পাকিস্তানের দ্বৈত নাগরিকত্বধারী, প্রাক্তন একজন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা। তিনি ২৬/১১ হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলি ওরফে দাউদ গিলানির (David Coleman Headley aka Daood Gilani) খুব ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত। হেডলি আমেরিকায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে রানা ভারতে তার জন্য কভার স্টোরি (Cover) এবং সুবিধা তৈরি করেছিলেন, যাতে তিনি মুম্বাইয়ের লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর নজর রাখতে পারেন।
এনআইএ-র মতে, রানা কেবল হেডলিকে ভারত ভ্রমণে সাহায্যই করেননি, বরং লস্কর-ই-তৈয়বা (Lashkar-e-Taiba) এবং আইএসআই-এর (Inter-Services Intelligence) সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। তদন্ত সংস্থার দাবি, রানার ভূমিকা কেবল লজিস্টিক সহায়তার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ভারতে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক সক্রিয় করার প্রচেষ্টাতেও তিনি জড়িত ছিলেন।
ভারতে প্রত্যর্পণের পর জিজ্ঞাসাবাদের গতি বেড়েছে
উল্লেখযোগ্য যে, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এপ্রিল ২০২৪ সালে তাহাউর রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে তার চূড়ান্ত আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাকে আমেরিকা থেকে প্রত্যর্পণ করে ২০২৪ সালে ভারতে নিয়ে আসে। এরপর থেকে এনআইএ তাকে বহুবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করেছে।
এনআইএ-র মতে, অতিরিক্ত চার্জশিটে রানার ইমেল কার্যকলাপ, কল রেকর্ডস, ব্যাংক লেনদেন এবং কিছু গোপনীয় নথি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা তার এবং হেডলির মধ্যেকার সম্পর্ক আরও স্পষ্ট করে। আদালত ১৩ই আগস্ট এই অতিরিক্ত চার্জশিটের ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে বিবেচনা করবে।
২৬/১১ হামলা: ভারতের ওপর সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা
২০০৮ সালের ২৬শে নভেম্বর, পাকিস্তান থেকে আসা ১০ জন সন্ত্রাসী সমুদ্র পথে মুম্বাইয়ে প্রবেশ করে। তিন দিন ধরে চলা এই সন্ত্রাসী হামলায় ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস (CST) রেলওয়ে স্টেশন, তাজ হোটেল, ওবেরয় ট্রাইডেন্ট হোটেল এবং নরিম্যান হাউস (ইহুদি কেন্দ্র)-কে নিশানা করা হয়েছিল। এই নৃশংস হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছিল এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছিল। গোটা বিশ্ব এই হামলার নিন্দা জানিয়েছিল এবং এটিকে ভারতের বিরুদ্ধে একটি ‘যুদ্ধ-সদৃশ’ হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।
আদালত এবার ১৫ই জুলাই, ২০২৫-এ তাহাউর রানার আরেকটি আবেদনের শুনানি করবে, যেখানে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার অনুমতি চেয়েছেন। এনআইএ এই আবেদনের জবাব দাখিল করার জন্য সময় চেয়েছে।