ধর্ম পরিবর্তন চক্রের মূল হোতা জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুরের অবৈধ সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি। এনআইএ, এটিএস এবং ইডি বিদেশি অর্থায়ন ও মাফিয়া যোগসূত্র নিয়ে তদন্ত জোরদার করেছে।
UP: উত্তর প্রদেশে, জোর করে ধর্ম পরিবর্তনের চক্রের মাস্টারমাইন্ড জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুরের বিরুদ্ধে ক্রমশ কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলি এখন তার অবৈধ সম্পত্তির উপর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়াও, এই চক্রের মাফিয়া মুখতার আনসারীর সঙ্গে যোগসূত্র ছিল বলেও জানা গেছে।
চক্রের সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হবে
এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) অমিতাভ যশ স্পষ্ট করেছেন যে, ছাঙ্গুর এবং তার চক্রের অবৈধ সম্পত্তি গ্যাংস্টার অ্যাক্টের অধীনে বাজেয়াপ্ত করা হবে। একইসঙ্গে, যে সমস্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে বিদেশি অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে, সেগুলি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।
মুখতার আনসারীর সঙ্গে সম্পর্কের প্রমাণ
বৃহস্পতিবার, পুনেতে চক্রের সদস্য মোহাম্মদ আহমেদ খান মিডিয়ার সামনে এসে দাবি করেন যে ছাঙ্গুরের সঙ্গে মাফিয়া মুখতার আনসারীর সম্পর্ক ছিল। এই তথ্য মামলার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলছে। আহমেদ খান জানিয়েছেন, ছাঙ্গুর মহারাষ্ট্রে জমি কেনার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু পরে সেই জমি অবৈধ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়।
ছাঙ্গুরের ছেলে, মেহবুব, ইতিমধ্যেই জেলে বন্দী। এছাড়াও, এফআইআরে তার ভাইপো সাবরোজ, শ্যালকের ছেলে শাহাবুদ্দিন, গন্ডার আত্মীয় রমজান এবং বালরামপুরের রসিদের নাম রয়েছে। এই সকলের সম্পত্তির তদন্ত চলছে।
নীতু এবং নবীন-এর ভূমিকা সন্দেহজনক
এটিএস জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর এবং তার ঘনিষ্ঠ নীতু ওরফে নাসরিনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময়, নীতু এবং তার স্বামী নবীন রোহরা ওরফে জামালউদ্দিনের দুবাই ভ্রমণ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। জানা গেছে, নীতুর বাবা দুবাইতে ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয়, ছাঙ্গুরের সঙ্গে নীতু ও নবীনের দেখা হয়েছিল মুম্বাইয়ে এবং সেখান থেকেই তাদের এই চক্রের সঙ্গে যোগসূত্র শুরু হয়।
দুবাই থেকে অর্থায়ন এবং চক্রের গভীরতা
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে যে, দুবাই থেকে আসা অর্থের মাধ্যমে এই চক্র ভারতে ধর্মান্তরকরণ এবং অবৈধ সম্পত্তি বিনিয়োগের মতো গুরুতর অপরাধ করেছে। নীতু এবং ছাঙ্গুরকে শীঘ্রই মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, যাতে নেটওয়ার্কের গভীরতা বোঝা যায়।
বিদেশি অর্থায়নের পেছনের ষড়যন্ত্র
ইডি এবং এটিএস-এর যৌথ তদন্তে এখন পর্যন্ত জানা গেছে যে, উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে ৪০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১০৬ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে। এই অর্থ ধর্ম পরিবর্তন, জমি কেনা এবং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ সেই সব আইনজীবী এবং সম্পত্তি ব্যবসায়ীদেরও খুঁজছে, যারা এই চক্রকে আইনি ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত সহায়তা করেছে।
সম্পত্তির তথ্য খতিয়ে দেখছে এজেন্সিগুলি
উত্তর প্রদেশের উপ-নিবন্ধক কার্যালয় থেকে চক্রের সম্পত্তির বিবরণ চাওয়া হয়েছে। আয়কর বিভাগ থেকে গত ১০ বছরের ট্যাক্স রিটার্ন চাওয়া হয়েছে। বালরামপুরের ডিএম এবং এসপি-র কাছ থেকেও ব্যাংক ডিটেইলস ও অন্যান্য নথিপত্রের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
আহমেদ খানের পাল্টা জবাব
মোহাম্মদ আহমেদ খান মিডিয়াকে বলেছেন যে, ছাঙ্গুরের অবৈধ কার্যকলাপে তার কোনো হাত নেই। তিনি জানান, তিনি কেবল জমি কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন, কিন্তু বিতর্ক হওয়ায় ছাঙ্গুর তার বিরুদ্ধে মামলাও করেন। এজেন্সিগুলি এখন জমি সংক্রান্ত লেনদেনে জড়িত আইনজীবীদেরও তদন্ত করছে।
ছাঙ্গুর চক্রের বিরুদ্ধে সরকার এবং এজেন্সিগুলি এখন সম্পূর্ণ কঠোর হয়েছে। বিদেশ থেকে আসা অর্থ হোক, অবৈধ জমি হোক বা মাফিয়া যোগসূত্র, প্রতিটি দিক গভীরতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।