আফগানিস্তানে ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করার খবর নিয়ে তালেবান স্পষ্টীকরণ দিয়েছে। সরকার জানিয়েছে যে সংযোগের সমস্যা প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং পুরানো ফাইবার-অপটিক কেবলের কারণে হয়েছে। তালেবানের দাবি, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের খবর নিছকই গুজব।
Afghanistan: আফগানিস্তান থেকে ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করার খবরের মধ্যে তালেবান সরকার একটি বড় বিবৃতি দিয়েছে। সরকার দাবি করেছে যে ইন্টারনেটে দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তালেবান জানিয়েছে যে দেশে ইন্টারনেট পরিষেবায় প্রভাব পড়েছে কারণ ফাইবার-অপটিক কেবলগুলি পুরানো হয়ে গেছে এবং সেগুলিকে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এই বিবৃতির মাধ্যমে, ইন্টারনেট বন্ধের খবর নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলির বিষয়ে এই প্রথম তালেবানের পক্ষ থেকে জনসমক্ষে প্রতিক্রিয়া এসেছে।
ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার খবরের উপর স্পষ্টীকরণ
বুধবার তালেবান সরকার একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে বলেছে যে আফগানিস্তানে ইন্টারনেট বন্ধের খবর নিছকই গুজব। সরকারের দাবি, ইন্টারনেট পরিষেবাগুলিতে যে প্রভাব দেখা যাচ্ছে তা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে। আসলে, পুরানো ফাইবার-অপটিক কেবলগুলি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে এবং সেগুলি প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে।
তালেবান কর্মকর্তারা পাকিস্তানি সাংবাদিকদের সাথে একটি চ্যাট গ্রুপে লিখিত বিবৃতি শেয়ার করে বলেছেন, “এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে আমরা ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি।”
আগে এসেছিল ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার খবর
গত মাসে আফগানিস্তানের অনেক প্রদেশে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার খবর নিশ্চিত হয়েছিল। স্থানীয় প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশের পর ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে যাতে “অনৈতিকতা” রোধ করা যায়। এই কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা শুরু হয়েছিল যে তালেবান সারা দেশে ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করেছে।
নেটব্লকসের রিপোর্ট
ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণ সংস্থা নেটব্লকস (NetBlocks) কিছু দিন আগে একটি রিপোর্ট জারি করে বলেছিল যে আফগানিস্তানে সংযোগ স্বাভাবিক স্তরের মাত্র ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ, সারা দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
নেটব্লকসের মতে, অনেক এলাকায় টেলিযোগাযোগ পরিষেবা (Telecom Services) মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতো বড় সংস্থাগুলি তাদের সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। কাবুল, নানগারহার এবং হেলমন্দ-এর মতো এলাকা থেকে রিপোর্ট করা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
মানুষের অভিযোগ
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানের অনেক প্রদেশের মানুষ ইন্টারনেট সমস্যায় ভুগছেন। কোথাও ইন্টারনেট অত্যন্ত ধীর, আবার কোথাও একেবারেই কাজ করছে না। অনেক পরিবার অভিযোগ করেছে যে তাদের মেয়েদের অনলাইন ইংরেজি ক্লাস (Online English Classes) প্রভাবিত হয়েছে।
একজন মহিলা জানিয়েছেন যে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তিনি তার অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারেননি। অনেক ব্যবহারকারী বলেছেন যে এই পরিস্থিতি তাদের পড়াশোনা এবং কাজ উভয়কেই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।
ব্যাংকিং এবং বিমানবন্দরে প্রভাব
ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যার প্রভাব কেবল সাধারণ মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সারা আফগানিস্তানের ব্যাংকিং পরিষেবা (Banking Services) এবং ই-কমার্স কার্যক্রম (E-Commerce Activities) ও বন্ধ হয়ে গেছে। কাবুলে অনেক লোক জানিয়েছেন যে তাদের ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, টোলো নিউজ (Tolo News)-এর মতো মিডিয়া চ্যানেলগুলির টেলিভিশন এবং রেডিও পরিষেবাতেও প্রভাব পড়েছে। শুধু তাই নয়, কাবুল বিমানবন্দরের ফ্লাইটগুলিও ইন্টারনেট এবং সংযোগের সমস্যার কারণে ব্যাহত হয়েছে।