আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান– কর্মসূচিতে ভাল সাড়া এবার বাড়ছে প্রচারের গতি

আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান– কর্মসূচিতে ভাল সাড়া এবার বাড়ছে প্রচারের গতি

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নতুন উদ্যোগ 'আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান' কর্মসূচিকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে দেখা যাচ্ছে উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া। মাত্র দু’দিনেই একাধিক ব্লকে ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছেন বহু মানুষ। এই অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে এবার বড়সড় নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। নবান্ন সূত্রে খবর, তিনি স্পষ্ট বলেছেন—উপস্থিতি ভাল হলেও, এখনও অনেক মানুষ এই প্রকল্প সম্পর্কে অবগত নন। তাই ব্লকে ব্লকে জোর প্রচার চাই। মুখ্যসচিবের এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, মুখ্যমন্ত্রীর জনসংযোগে বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে এই প্রকল্পে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন।

ক্যাম্পের সংখ্যা বাড়াতে হবে, জানিয়ে দিলেন মুখ্যসচিব

প্রথম দফার অভিজ্ঞতা থেকেই এবার মুখ্যসচিবের তরফে জেলাশাসকদের স্পষ্ট বার্তা—প্রয়োজনে ক্যাম্পের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। প্রশাসনিক পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি ব্লকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে এই প্রকল্পের সুবিধা। এমনকি সপ্তাহে একাধিকবার এই ক্যাম্প যাতে বসতে পারে, সেই বিষয়েও জেলা প্রশাসনকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই ক্যাম্পগুলিতে স্থানীয় সমস্যার সমাধান, পানীয় জল, সড়ক, স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে শুরু করে সরকারি সুযোগ-সুবিধার আবেদন পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।

‘তথ্যের অভাবেই’ অংশ নিচ্ছেন না অনেকে, নির্দেশ প্রচারে গতি আনার

নবান্ন মনে করছে, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির বিষয়ে এখনও অনেক মানুষ সম্পূর্ণ তথ্য জানেন না। কোথায় ক্যাম্প, কী তার সময়সূচি, কী পরিষেবা মিলবে—এই সমস্ত দিকেই প্রচারের ঘাটতি রয়েছে। তাই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জেলাশাসকদের উদ্দেশে বলেন, “তথ্য প্রচার না করলে মানুষ জানবেন কীভাবে?” এই কারণে ক্যাম্পের সময় ও সুবিধা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য মাইকের মাধ্যমে প্রচার, স্থানীয় পত্রিকা, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এমনকি এলাকাভিত্তিক ফ্লেক্স-ব্যানারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

'আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান' কর্মসূচির উদ্দেশ্য কী?

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য, মানুষের দৈনন্দিন সমস্যাগুলিকে তাঁদের নিজ এলাকাতেই সমাধান করা। অকারণে দপ্তর বা বিডিও অফিস ঘোরার প্রয়োজন যাতে না হয়, সেই লক্ষ্যেই পাড়ায়-পাড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে সরকারি পরিষেবা। নাগরিকদের অভিযোগ শুনে সেগুলির সমাধান সরাসরি মাঠ পর্যায়ে করার এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। একদিকে স্বচ্ছতা, অন্যদিকে প্রশাসনিক জবাবদিহিতা—এই দুইয়ের সমন্বয় এই প্রকল্পে স্পষ্ট।

কী কী পরিষেবা মিলছে এই ক্যাম্পে? কেন জরুরি এই উদ্যোগ?

এই ক্যাম্পগুলিতে ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা, কৃষক রেজিস্ট্রেশন, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড সমস্যা, খাদ্য সাথী আবেদন, কন্যাশ্রী-রূপশ্রী আবেদন সংক্রান্ত সাহায্য, পানীয় জল বা বিদ্যুৎ সংযোগের অভিযোগ সহ একাধিক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নবান্নের মতে, মানুষের কাছে এই পরিষেবাগুলি পৌঁছে দেওয়ার অর্থ এক ধরনের ‘ডিজিটাল দারিদ্র্য বিমোচন’। কারণ, বহু মানুষ এখনও জানেন না—সরকারের সুবিধাগুলি কীভাবে নেওয়া যায়। এই কর্মসূচি তাঁদের সেই তথ্য পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম সেতু।

Leave a comment