রামবানের চান্দেরকোট লঙ্গর সাইটের কাছে একযোগে পাঁচটি বাসের সংঘর্ষে আতঙ্ক ছড়াল অমরনাথ যাত্রাপথে। পহেলগামগামী কনভয়ের বাসগুলোর মধ্যে একটি হঠাৎ ব্রেক ফেল করে ধাক্কা মারে সামনের যানবাহনে। একে একে পাঁচটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, তীর্থযাত্রীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, ছিটকে পড়ে যান অন্তত ছয়জন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের অভিঘাতে অনেক যাত্রী সিট থেকে ছিটকে মেঝেতে পড়ে যান।
সময় নষ্ট না করে উদ্ধার শুরু, দ্রুত হাসপাতালে আহতদের স্থানান্তর
ঘটনার খবর পেয়েই তৎপরতা দেখায় স্থানীয় পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতর। উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে রামবান জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করে। তাঁদের মধ্যে একাধিকজনের মাথা, কাঁধ এবং কোমরে গুরুতর আঘাত লেগেছে। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত সকলেই স্থিতিশীল আছেন এবং চিকিৎসা চলছে।
৩ জুলাই শুরু, চলবে ৯ অগাস্ট পর্যন্ত— শুরু হয়েছে ধর্মীয় আবেগে ভরা অমরনাথ যাত্রা
চলতি বছরের অমরনাথ যাত্রা শুরু হয়েছে ৩ জুলাই থেকে এবং তা চলবে ৯ অগাস্ট পর্যন্ত। পবিত্র শ্রাবণ পূর্ণিমা এবং রাখি পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও হাজার হাজার ভক্ত যাত্রা করছেন হিমালয়ের দুর্গম গুহামন্দিরের উদ্দেশ্যে। বহু দূর থেকে আগত এই তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।
দুটি পথ, এক গন্তব্য— পহেলগাম বনাম বালটাল রুটের মধ্যে কোনটা বেছে নেবেন?
অমরনাথ যাত্রার দুটি মূল পথ— ঐতিহ্যবাহী পহেলগাম রুট, যেখানে তীর্থযাত্রীদের প্রায় ৪৬ কিমি হেঁটে চড়াই উৎরাই পার করতে হয়। অন্যদিকে রয়েছে বালটাল রুট, যা অপেক্ষাকৃত ছোট ও দ্রুত কিন্তু শারীরিকভাবে কষ্টসাধ্য। পহেলগাম পথে রয়েছে শেশনাগ, পঞ্চতার্নি-র মতো গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান।
কড়া নিরাপত্তায় রওনা দিলেন আরও ৬,৯৭৯ তীর্থযাত্রী, নজরে প্রতিটি গাড়ি
শনিবার সকালে জম্মুর ভগবতীনগর থেকে নিরাপত্তাবেষ্টিত কনভয়ে রওনা দেন আরও ৬,৯৭৯ জন পুণ্যার্থী। দুটি দিকেই— পহেলগাম ও বালটাল— ভাগ হয়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি গাড়িতে নিরাপত্তার জন্য রয়েছেন সেনা, আধাসামরিক বাহিনী এবং পুলিশের পর্যাপ্ত নজরদারি।
দর্শনার্থীর সংখ্যা ছাড়াল ২৬,৮০০, যাত্রা ঘিরে এখনো রয়েছে অটুট উদ্যম
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত দু’দিনেই প্রায় ২৬,৮০০ জন তীর্থযাত্রী সফলভাবে গুহামন্দিরে ‘দর্শন’ করেছেন। দুর্ঘটনার আতঙ্ক সত্ত্বেও যাত্রাপথে মানুষের ঢল অব্যাহত। প্রতিটি বিশ্রামকেন্দ্রে থাকছে খাবার, চিকিৎসা ও স্বচ্ছ পানীয় জলের সুব্যবস্থা। ভক্তদের মধ্যে কোনওরকম হতাশা নেই— সকলেই পৌঁছতে চান ‘বাবা বরফানির’ দরবারে।