৩৭ বছর বয়সে ক্রিকেট জীবনের ইতি টানছেন আন্দ্রে রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন তিনি।বহু বছরের উজ্জ্বল কেরিয়ারের পর এবার বিদায় নিচ্ছেন মাঠ কাঁপানো ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। বিদায়ের মঞ্চও তৈরি – ঘরের মাঠ জামাইকার সাবাইনা পার্ক, যেখানে চলবে আবেগ, শ্রদ্ধা ও স্মৃতির সংমিশ্রণ।
ঘরের মাঠেই শেষ অভিনয়, জামাইকার মাটি সাক্ষী থাকবে শেষ চিৎকারের
২৩ জুলাই, সাবাইনা পার্কে হবে রাসেলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ঠিক যেন সিনেমার শেষ দৃশ্যে নায়ক নিজ বাড়ির উঠোনে অভিনয় শেষ করছেন—এ যেন এক নস্ট্যালজিক পরিসমাপ্তি। সাবাইনা পার্ক, যেখানে রাসেল অনেক ম্যাচে রণচণ্ডী রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন, সেই মাঠেই এবার শেষবার দেশের জার্সি গায়ে চাপাবেন। বিদায়ের মুহূর্তে নিজের জমি, নিজের জনতার সামনে থাকা — এর চেয়ে মহৎ কিছু হতে পারে না।
বিশ্বকাপের আগে চমক, ৭ মাস আগেই ছেড়ে দিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
২০২৬ টি-২০ বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র ৭ মাস। অনেকেই আশা করেছিলেন রাসেল সেখানে শেষ ঝড় তুলবেন। তবে তার আগেই জীবনের শেষ ওভারে পৌঁছে গেলেন এই ধ্বংসাত্মক ব্যাটার।বিশ্বকাপের আগে তাঁর এই বিদায় খানিকটা অবাক করেছে ভক্ত-সমালোচকদের। তবে সম্ভবত রাসেল নিজেই ঠিক করেছিলেন—আরও এক টুর্নামেন্ট নয়, এবার থামার সময় এসেছে।
শুধু টি-২০তেই সীমিত ছিলেন ২০১৯-এর পর থেকে, এবার চূড়ান্ত অবসান
২০১৯ সালের পর রাসেল নিজেকে সীমিত রেখেছিলেন কেবল টি-২০ ফরম্যাটে। আর সেই ফরম্যাটেই এবার শেষবার ব্যাট-বল হাতে নামবেন তিনি।লম্বা সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে রাসেল ছিলেন সুপারস্টার। তবে দেশের হয়ে খেলাটাই ছিল তাঁর গর্ব। এবার সেটিও থেমে যাচ্ছে।
ক্যারিবিয়ান সোনার ছেলে: দুটি বিশ্বকাপে অবদানের ইতিহাস
২০১২ ও ২০১৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন রাসেল। ম্যাচের ফল বদলে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল তাঁর ডিএনএ-তে।কখনও ব্যাটে, কখনও বল হাতে—রাসেল ছিলেন সেই ম্যাচ উইনার, যাঁর উপস্থিতিই যথেষ্ট ছিল প্রতিপক্ষকে আতঙ্কিত করার জন্য। দুটি বিশ্বকাপে তাঁর ভূমিকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ক্রিকেটের ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে।
পরিসংখ্যানেও ঝলমলে কেরিয়ার, ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত অবদান
৮৪টি টি-২০ ম্যাচে রাসেলের ঝুলিতে ১০৭৮ রান ও ৬১ উইকেট। সঙ্গে ছিল তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট হোক বা ডেথ ওভারে বোলিং, সবেতেই রাসেল ছিলেন ভরসার নাম।সংখ্যার হিসেবে দেখলে হয়তো চোখ ধাঁধানো নয়, কিন্তু সেই সংখ্যার ভিতরে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য জয়, একরাশ উত্তেজনা, আর অগণিত ক্যারিবিয়ান উল্লাস।
অফিসিয়াল ঘোষণা, রাসেলের সিদ্ধান্তে সম্মান জানাল বোর্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ক্রিকেট বোর্ড ইতিমধ্যেই রাসেলের অবসরের খবর জানিয়েছে। তাঁর কেরিয়ারকে সম্মান জানিয়ে বিশেষ বিদায়ের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত।বহু বিতর্ক, চোট-আঘাত আর কামব্যাকের মধ্যেও রাসেল ছিলেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের পোস্টার বয়। তাঁর অবসর মানে শুধু একজন প্লেয়ারের নয়, এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি।