বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদী হাসান কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে খেলা হওয়া তৃতীয় টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। মেহেদী হাসান ভারতের কিংবদন্তি স্পিনার হরভজন সিংয়ের ১৩ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন।
স্পোর্টস নিউজ: বাংলাদেশ ক্রিকেট দল শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছে। কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তৃতীয় এবং নির্ণায়ক ম্যাচে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে পরাজিত করে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নেয়। এই জয়ের নায়ক ছিলেন স্পিনার মেহেদী হাসান, যিনি শুধু শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেননি, বরং ভারতীয় কিংবদন্তি স্পিনার হরভজন সিংয়ের ১৩ বছরের পুরনো রেকর্ডও নিজের নামে করেছেন।
মেহেদী হাসানের বিধ্বংসী বোলিং, ভাঙল হরভজন সিংয়ের রেকর্ড
মেহেদী হাসান শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন। তাঁর ইকোনমি ছিল মাত্র ২.৮০। এই পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তিনি টি-টোয়েন্টি ইন্টারন্যাশনালে যে কোনও সফরকারী স্পিনারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন। মেহেদী হরভজন সিংয়ের ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় করা রেকর্ড ভেঙেছেন।
হরভজন তখন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। মেহেদী এখন এই তালিকায় তাঁর চেয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। তাঁর এই অসাধারণ বোলিংয়ের জন্য তিনি প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ফ্লপ, শুধু নিসাঙ্কা দেখালেন দম
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা দল ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান করতে সক্ষম হয়। দলের হয়ে সবথেকে বেশি পথুম নিসাঙ্কা ৪৬ রান করেন, তবে কোনো ব্যাটসম্যান অর্ধশতক করতে পারেননি।
- শ্রীলঙ্কার ইনিংস
- পথুম নিসাঙ্কা: ৪৬ রান
- দাসুন শানাকা: ৩৫* রান (২৫ বল)
- কামিন্দু মেন্ডিস: ২১ রান
- কুশল পেরেরা, দিনেশ চান্দিমাল, কুশল মেন্ডিস, চারিথ আসালাঙ্কা - সবাই খারাপভাবে ফ্লপ।
শ্রীলঙ্কার পুরো দল বাংলাদেশের স্পিনারদের সামনে লড়তে দেখা যায়। মেহেদী হাসান ছাড়াও বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে শ্রীলঙ্কাকে বড় স্কোরে পৌঁছতে দেয়নি।
বাংলাদেশের সহজ জয়, তানজিদ হাসানের অর্ধশতক
১৩৩ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ দলের শুরুটা খারাপ ছিল। প্রথম বলেই পারভেজ হোসেন ইমন কোনো রান না করে এলবিডব্লিউ হন। কিন্তু এরপর তানজিদ হাসান তামিম এবং অধিনায়ক লিটন দাস দলটিকে সংকট থেকে বাঁচান এবং দ্বিতীয় উইকেটের জন্য ৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যান।
লিটন দাস ৩২ রান করেন। তাঁর আউট হওয়ার পর তানজিদ হাসান দায়িত্ব নিয়ে ৪৭ বলে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাওহিদ হৃদয়, যিনি ২৫ বলে অপরাজিত ২৭ রান করেন। বাংলাদেশ এই লক্ষ্য ২১ বল বাকি থাকতেই ২ উইকেট হারিয়ে অর্জন করে।
তৃতীয় ম্যাচের স্কোরকার্ড
- শ্রীলঙ্কা: ১৩২/৭ (২০ ওভার)
- পথুম নিসাঙ্কা: ৪৬ রান
- দাসুন শানাকা: ৩৫* রান
- মেহেদী হাসান: ৪ ওভার, ১১ রান, ৪ উইকেট
- বাংলাদেশ: ১৩৩/২ (১৬.৩ ওভার)
- তানজিদ হাসান তামিম: ৭৩* রান (৪৭ বল, ১ চার, ৬ ছয়)
- লিটন দাস: ৩২ রান (২৬ বল)
- তাওহিদ হৃদয়: ২৭* রান (২৫ বল)