মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আজকাল বড়োসড়ো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম শিরোনামে রয়েছে— প্রাক্তন মন্ত্রী আন্না সাহেব ডাঙ্গে— যিনি ২৩ বছর পর ভারতীয় জনতা পার্টিতে ফিরে এসেছেন। ডাঙ্গে তাঁর দুই ছেলে চিমন ডাঙ্গে এবং বিশ্বনাথ ডাঙ্গে-কে নিয়ে মুম্বইতে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং প্রদেশ সভাপতি রবীন্দ্র চভনের উপস্থিতিতে বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এই উপলক্ষে শত শত সমর্থক ও কর্মীরাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
ডাঙ্গে-র ঘরে ফেরাকে বিজেপির জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে মনে করা হচ্ছে, বিশেষ করে সাঙ্গলি এবং আশেপাশের অঞ্চলে দলের জনসমর্থন মজবুত করার ক্ষেত্রে। একই সময়ে, এই পদক্ষেপটি ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)-র জন্য, বিশেষ করে শরদ পাওয়ারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ ডাঙ্গে ২০০২ সালে বিজেপি ছেড়ে এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তন
১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে যখন মহারাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো শিবসেনা-বিজেপি জোট সরকার গঠিত হয়েছিল, তখন আন্না সাহেব ডাঙ্গে গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন এবং সাঙ্গলি জেলার পালক মন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছিলেন। আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত ডাঙ্গে বিজেপির পুরনো এবং ভূমিস্তরের নেতাদের মধ্যে গণ্য হন। ২০০২ সালে তিনি নিজেকে পার্টিতে কোণঠাসা মনে করে বিজেপি ছেড়ে শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপিতে যোগ দেন।
দুই দশকের বেশি সময় পর তাঁর প্রত্যাবর্তনে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সমীকরণ নতুন দিকে বাঁক নিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডাঙ্গে-র ঘরে ফেরা শুধু সাঙ্গলি নয়, আশেপাশের এলাকাতেও বিজেপির অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে। এতে দল আসন্ন নির্বাচনে সরাসরি সুবিধা পেতে পারে।
ধনগার সমাজের প্রধান নেতা
আন্না সাহেব ডাঙ্গে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ধনগার সমাজের প্রধান মুখ হিসেবে পরিচিত। সমাজে তাঁর ভালো প্রভাব এবং শক্তিশালী জনসমর্থন রয়েছে। পার্টিতে পুনরায় যোগ দেওয়ার পর তিনি বলেন যে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন যে আবার বিজেপিতে ফিরে এসেছেন। তিনি এও বলেন যে এখন তিনি সম্পূর্ণ পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সাথে পার্টির উন্নতি ও বিকাশে অবদান রাখবেন।
ডাঙ্গে-র প্রত্যাবর্তনকে বিজেপির সাংগঠনিক কৌশলের অংশ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে পার্টি রাজ্যে সামাজিক সমীকরণগুলিকে নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করছে।
নজর ২০২৪-এর নির্বাচনের দিকে
ডাঙ্গে-র প্রত্যাবর্তন এমন এক সময়ে হয়েছে যখন মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এনসিপিতে ভাঙন এবং বিরোধী জোটের দুর্বল হয়ে যাওয়া পরিস্থিতি আলোচনার বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে ডাঙ্গে-র মতো অভিজ্ঞ নেতার প্রবেশ বিজেপির জন্য কেবল সাঙ্গলি নয়, পুরো দক্ষিণ মহারাষ্ট্রে নতুন করে উদ্দীপনা যোগাতে পারে।
ভবিষ্যতের নির্বাচনী লড়াইয়ে এই সিদ্ধান্ত বিজেপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে, বিশেষ করে সেই অঞ্চলগুলোতে যেখানে দল এখনও পর্যন্ত প্রত্যাশিত সমর্থন পাচ্ছিল না।