সচিনের ছেলে অর্জুন তেন্ডুলকরের জীবনেও এখন বিয়ের রঙ লেগেছে। সম্প্রতি সানিয়া চান্দোকের সঙ্গে পাকাদেখার পর থেকেই ক্রিকেটপাড়ায় থেকে বলিউড— সর্বত্রই চলছে চর্চা। বাবা সচিনের মতোই ছেলের বিয়েতেও ফুটে উঠেছে চমকপ্রদ বয়সের সমীকরণ।
সচিনের পথেই অর্জুন
‘ক্রিকেটের ভগবান’ সচিন তেন্ডুলকরের জীবন একসময় আলোড়ন তুলেছিল বিয়ের ক্ষেত্রে। স্ত্রী অঞ্জলি তাঁর থেকে পাঁচ বছরের বড় ছিলেন। এবার একই ছবি যেন ছেলের জীবনেও। অর্জুনের জীবনে সঙ্গী সানিয়া, যিনি বয়সে এক বছরের বড়। এ যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।
অঞ্জলি-সচিনের প্রেম ও বিয়ে
যে সময়ে অঞ্জলির সঙ্গে সাক্ষাৎ, সচিন তখন কেরিয়ারের শুরুতেই। বয়স মাত্র কুড়ি-একুশ। এর মধ্যেই প্রেম, তারপর বিবাহ— ১৯৯৫ সালের মে মাসে দুজনের সম্পর্ক পাকাপাকি হয়। সেই সময়ে সচিনের বয়স ২২, আর অঞ্জলি ছিলেন ২৭-এর। অর্থাৎ, দুজনের বয়সের ব্যবধান ছিল ৫ বছরের।
অঞ্জলির বয়সে এগিয়ে থাকা নিয়ে চর্চা
৯০-এর দশকে ভারতের সমাজে এই সমীকরণ ছিল বিরল। জনপ্রিয় ক্রিকেটারের বউ বয়সে বড়— তখন অনেকের মধ্যেই নানা রকম চর্চা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সময় প্রমাণ করেছে, তাঁদের সম্পর্ক ছিল দৃঢ় ও অটুট। আজও সচিন-অঞ্জলির দাম্পত্য এক সফলতার কাহিনি।
অর্জুনের পাকাদেখার আসর
১৩ অগস্ট ২০২৫— এই তারিখেই নতুন ইতিহাস রচনা করলেন সচিন-পুত্র। মুম্বইয়ে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সম্পন্ন হল অর্জুন তেন্ডুলকর ও সানিয়া চান্দোকের পাকাদেখা। অনুষ্ঠানে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও উপস্থিত ছিলেন। মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই ছবিগুলি।
জন্মতারিখে লুকিয়ে থাকা সমীকরণ
অর্জুনের জন্ম ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯। অন্যদিকে সানিয়া চান্দোকের জন্ম ২৩ জুন ১৯৯৮। অর্থাৎ, সানিয়া অর্জুনের থেকে প্রায় এক বছরের বড়। ছোট এই বয়সের ব্যবধানকেই অনেকেই দেখছেন ‘অঞ্জলি-সচিন মডেল’-এর মতোই। ক্রিকেটভক্তদের চোখে তাই মিলছে প্রজন্মের যোগসূত্র।
পরিবারের ভেতরের সম্পর্কের অঙ্ক
অর্জুনের দিদি সারা তেন্ডুলকর, যিনি নিজেও আলোচনায় থাকেন প্রায়ই, তিনি অর্জুনের থেকে দু’বছরের বড়। সেই হিসেবে অর্জুনের জীবনে সঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা গেল একই ধারা— নিজের থেকে বড় বয়সীকে বেছে নেওয়া। পরিবারে এ যেন এক অদ্ভুত মিল।
সচিনের বয়সের অঙ্ক
২৪ এপ্রিল ১৯৭৩ সালে জন্ম নেন সচিন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৫২ বছর। অন্যদিকে, স্ত্রী অঞ্জলির জন্ম ১০ নভেম্বর ১৯৬৭ সালে। অর্থাৎ বয়সে পাঁচ বছরের ব্যবধান। এখনও পর্যন্ত তাঁদের সম্পর্ক প্রমাণ করে, বয়সের অঙ্ক ভালোবাসার সমীকরণে কোনো বাধা নয়।
ভক্তদের প্রতিক্রিয়া
অর্জুন-সানিয়ার পাকাদেখা সামনে আসতেই ভক্তরা নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ বলছেন— ‘বাবার পথেই হাঁটলেন ছেলে।’ কেউ আবার মনে করছেন— সচিনের পরিবারের মধ্যে এটি যেন এক ধরনের ঐতিহ্য। তবে সবার কাছেই স্পষ্ট, ক্রিকেট ও জীবনের মাঠে সচিনের ছেলের পথচলাও রঙিন হতে চলেছে।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ছোঁয়া
অর্জুন তেন্ডুলকর শুধু সচিনের ছেলে বলেই আলোচনায় নন, নিজেও ক্রিকেটে ক্যারিয়ার গড়ার পথে হাঁটছেন। আইপিএল-এ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এখন ব্যক্তিগত জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু করলেও, ভক্তরা তাকিয়ে আছেন— মাঠে কবে বাবার মতো সাফল্যের ছাপ রাখবেন তিনি।
সমাজের চোখে বয়সের পার্থক্য
ভারতীয় সমাজে বিয়েতে পুরুষ বড়— এই ধারণা এখনও প্রচলিত। কিন্তু সচিন-অঞ্জলি যেমন সেই ধারা ভেঙেছিলেন, অর্জুন-সানিয়ার সম্পর্কও তেমনই আরেকটি দৃষ্টান্ত। সময়ের সঙ্গে সমাজ বদলাচ্ছে, আর এই তারকারা সেই বদলের প্রতীক।
আগামীর প্রত্যাশা
অর্জুন-সানিয়ার মিলনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে উচ্ছ্বাস। তবে শুধু পারিবারিক সম্পর্ক নয়, ক্রিকেটীয় দিকেও ভক্তরা দেখছেন বড় প্রত্যাশা। সচিন যেমন দেশের জন্য হয়ে উঠেছিলেন অবিস্মরণীয় প্রতিভা, তেমনই অর্জুনের দিকেও এখন নজর সবার।