সন্দেহভাজন জঙ্গি আশহার দানিশকে নিয়ে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল বোকারো পৌঁছেছে। দলটি দানিশের পটাশিয়াম নাইট্রেট কেনার স্থানগুলো খতিয়ে দেখে। বাবা অভিযোগ করেছেন যে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।
বোকারো: দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের দল সন্দেহভাজন জঙ্গি আশহার দানিশকে নিয়ে বোকারো পৌঁছায় এবং তার কথিত কার্যকলাপের তদন্ত করে। দলটি দানিশের দেখানো পথ ধরে মাহাতো বীজ ভান্ডার এবং মোহনপুর এলাকায় তদন্ত চালায়। এই সময় দানিশের বাবা অভিযোগ করেন যে তার ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে তদন্তের মূল উদ্দেশ্য হলো দানিশ কর্তৃক ২০২৪ সালে পটাশিয়াম নাইট্রেট ক্রয় এবং এর সম্ভাব্য অপব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা।
বোকারোতে মাহাতো বীজ ভান্ডারে জিজ্ঞাসাবাদ
পুলিশ দল প্রথমে মাহাতো বীজ ভান্ডারে যায়। দোকানদার মনোজ মাহাতো জানিয়েছেন যে আশহার দানিশ ২০২৪ সালে দোকান থেকে প্রায় ৪-৫ কেজি পটাশিয়াম নাইট্রেট কিনেছিল। এই রাসায়নিকটি কৃষিক্ষেত্রে সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি বিস্ফোরক তৈরিতেও অপব্যবহার করা যেতে পারে।
দলটি দোকানে থাকা রেকর্ড এবং রসিদপত্র পরীক্ষা করে এবং দোকানদারকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করে। এই সময় পুলিশ আরও নিশ্চিত করে যে কেনার সময় এবং পরিমাণের বিবরণ স্পষ্টভাবে নথিভুক্ত আছে। দলটি এই পুরো প্রক্রিয়ায় বোঝার চেষ্টা করে যে দানিশের পটাশিয়াম নাইট্রেট কেনার আসল উদ্দেশ্য কী ছিল এবং এর সাথে কোনো সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র আছে কিনা।
পুলিশ মোহনপুরে সমীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে
মাহাতো বীজ ভান্ডার পরিদর্শনের পর পুলিশ দল পিন্ডরাজোরা থানা এলাকার মোহনপুরে পৌঁছায়। এখানে দানিশের দেখানো পথ ধরে তদন্ত করা হয় এবং স্থানীয় লোকজনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। থানা ইনচার্জ রাজু কুমার মুন্ডা জানান, দল এলাকাটি জরিপ করেছে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে।
এছাড়াও, পুলিশ দানিশের পূর্ববর্তী লেনদেন এবং এলাকার তার পরিচিতিগুলোও খতিয়ে দেখে। দলটি মোহনপুর এবং আশেপাশের এলাকায় এই বিষয়ে জানার চেষ্টা করে যে পটাশিয়াম নাইট্রেটের অপব্যবহারের কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা। তদন্তের এই পর্যায়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ এটিকে স্থানীয় নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত করে দেখা হচ্ছে।
বাবার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
আশহার দানিশের বাবা মাজহার জানি তার ছেলেকে নির্দোষ বলেছেন। পেশায় আইনজীবী মাজহার জানি বলেন যে তার ছেলেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে এবং এটি একটি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি আরও জানান যে পরিবারের পূর্ববর্তী জীবন স্বাভাবিক ছিল, যেখানে তিনি আগে কাওয়ালি গাইতেন এবং তার স্ত্রী একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা।
দানিশের বাবার বক্তব্য অনুযায়ী, ছেলের গ্রেপ্তার এবং তদন্ত সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক বা ষড়যন্ত্রমূলক হতে পারে। এই মন্তব্যের ফলে পরিবার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে জটিলতা বেড়েছে।
পুলিশ পটাশিয়াম নাইট্রেট মামলার ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল এই তদন্তে পটাশিয়াম নাইট্রেট কেনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। দলটির উদ্দেশ্য হলো আশহার দানিশ কী উদ্দেশ্যে এই রাসায়নিকটি কিনেছিল এবং এটি কোনো বিস্ফোরক তৈরি বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহারের উদ্দেশ্য ছিল কিনা তা বোঝা।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে যে বোকারো সফরের মাধ্যমে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে তদন্তকারীরা দানিশের পূর্ববর্তী আচরণ, লেনদেন এবং সম্ভাব্য পরিচিতিগুলো যাচাই করতে চান। এর মাধ্যমে এটিও জানা যাবে যে এর সাথে কোনো বড় সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র আছে কিনা। তদন্ত চলাকালীন দল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করেছে।










