Ashwin Sankranti 2025: আশ্বিন সংক্রান্তি, যা গারসি বা নল সংক্রান্তি নামেও পরিচিত, পূর্ববঙ্গ ও উড়িশার অনেক অঞ্চলে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই দিনে ‘গাড়ুর ডাল’ নামের বিশেষ খাবার রান্না করা হয়, যা পরের দিন বা কার্তিক মাসের প্রথম দিনে খাওয়া হয়। আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ডালের মধ্যে বিভিন্ন ঋতুমূলক সবজি ও ডালের মিশ্রণ থাকে, যা স্বাস্থ্যকর এবং ঐতিহ্যবাহীভাবে শুভ বিবেচিত হয়।
আশ্বিন সংক্রান্তির ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
আশ্বিন সংক্রান্তি হেমন্তকালের শুরু এবং শস্যের মধ্যবর্তী সময়ের সূচক। কৃষক সমাজে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ধানের ফসলের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার প্রতীক। প্রচলিত কথামতো, “আশ্বিনে রান্না, কার্তিকে খাওয়া” – এই প্রথা সংক্রান্তির বিশেষত্বকে বোঝায়।
গাড়ুর ডাল: কীভাবে তৈরি হয় এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ
‘গাড়ুর ডাল’ বা ‘গারসি ডাল’ বছরজুড়ে শুধুমাত্র একদিন রান্না করা হয়। পূর্বে এটি খেসারি ডাল দিয়ে তৈরি হতো, তবে বর্তমান সময়ে মটর বা মিশ্রিত ডালের ব্যবহার হয়।ডালে শাপলা, মিষ্টি কুমড়ো, মুলো, শিম, লাউ এবং অন্যান্য ঋতুমূলক সবজি মিশিয়ে রান্না করা হয়। সাধারণত এতে তেল বা ফোড়ন দেওয়া হয় না, ফলে এটি সহজ, স্বাস্থ্যকর এবং শারীরিক রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
আয়ুর্বেদিক সুবিধা
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋতু পরিবর্তনের সময় গাড়ুর ডাল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি, কাশি ও ত্বকের সমস্যাগুলি কমায়। ডালের স্বাদ ও উপাদান শরীরকে ঋতুর সঙ্গে মানিয়ে চলতে সাহায্য করে।
কৃষক ও পারিবারিক প্রথা
সংক্রান্তির রাতে কৃষক পরিবারে ‘নল ঘাস’ বাঁধা হয়, যাতে থাকে হলুদ, তুলসী পাতা, শালুক, বেলপাতা, শসা, কালমেঘ, কেঁউ ও ওল পাতা। কিছু অঞ্চলে শুকনো মাছও সংযোজিত হয়।সকালে পাটকাঠিতে কাঁচা হলুদ জ্বালিয়ে ঠোঁট মাখার প্রথা এবং মুঠি খাওয়া হয়, যা ত্বকের সমস্যা এবং অন্যান্য চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
আশ্বিন সংক্রান্তি তিথিতে পূর্ববঙ্গের ঘরে ঘরে ‘গাড়ুর ডাল’ রান্নার প্রথা আছে। এটি বছর জুড়ে একদিনই রান্না হয় এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় শরীরকে রোগ প্রতিরোধী করে। জেনে নিন এই বিশেষ ডালের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও আয়ুর্বেদিক গুরুত্ব।